নিয়োগ জালিয়াতি
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক পরিচালকসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২০ জুন ২০২৩, ১৬:৪৭

দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। ছবি: ফাইল
নিয়োগ জালিয়াতির অভিযোগে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক পরিচালক ডা. শেখ মোহাম্মদ হাসান ইমামসহ ৪ জনের নামে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সম্প্রতি দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঢাকা-১ মামলাটি করেন সংস্থাটির সরকারি পরিচালক ধীরাজ চন্দ্র বর্মণ।
আজ মঙ্গলবার (২০ জুন) দুদকের উপপরিচালক (জনসংযোগ) মুহাম্মদ আরিফ সাদেক গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ফলিত গণিত বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. শওকত আলী, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক (অবসরপ্রাপ্ত) উপপরিচালক (প্রশাসন) ডা. আফম আখতার হোসেন ও খিলগাঁও সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র সহকারী শিক্ষক মো. হারুনুর রশিদ।
দুদক জানায়, করোনা আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা সেবায় ২০২০ সালে বিভিন্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে টেকনোলজিস্ট, টেকনেশিয়ান এবং ক্যার্ডিওগ্রাফারের ২ হাজার ৭৯৮টি নবসৃজিত পদে ৩টি বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়।
নিয়োগের লিখিত পরীক্ষা নেওয়ার জন্য লিথোকোড-সংবলিত খাতা প্রণয়ন করতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সঙ্গে ঢাবির ফলিত গণিত বিভাগের চুক্তি হয়। চুক্তি মোতাবেক ঢাবির ফলিত গণিত বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. শাওকাত আলী পরীক্ষার খাতা তৈরি (লিথোকোডসহ), কক্ষভিত্তিক খাতা প্যাকেট করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়োগ কমিটিকে পাঠান।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ৩টি পদের লিখিত পরীক্ষা ২০২০ সালের ১২ ডিসেম্বর, ১৮ ডিসেম্বর ও ১৯ ডিসেম্বর শেষ হয়। পরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা কেন্দ্র থেকে খাতা, লিথোকোডের ছেঁড়া অংশ এবং প্রশ্ন বুঝে নিয়ে অধিদপ্তরে নিয়োগ কমিটির সদস্যসচিব উপপরিচালক আখম আক্তার হোসেনের কাছে পাঠান।
সদস্যসচিব সেসব খাতা মূল্যায়নের জন্য শাওকাত আলীকে দেন। মেডিক্যাল টেকনিশিয়ান (অন্যান্য) পদের লিখিত খাতা মূল্যায়নের দায়িত্ব পান হারুনুর রশিদ। তারা পুনরায় নতুন খাতায় প্রশ্নের উত্তর লিখে অফিসিয়ালি সরবরাহকৃত কিছু কিছু উত্তরপত্র বর্তমানে থাকা উত্তরপত্রের মাধ্যমে প্রতিস্থাপন করেন।
এজাহারে বলা হয়, টেকনেশিয়ান ও টেকনোলজিস্ট পদে লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ৪ হাজার ৪৫৩টি খাতা, টেবুলেশন শিট ও অন্যান্য ডকুমেন্টস পরীক্ষান্তে দুই হাজার ৪১১টি উত্তরপত্রে একাধিক স্ট্যাপলিংয়ের ছিদ্র ও পেনসিলে লেখা বিভিন্ন প্রকারের সংকেত লক্ষ্য করা গেছে।
এ ছাড়া চূড়ান্তভাবে উত্তীর্ণ দুই হাজার ৫৫৪ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৮০০ জন পরীক্ষার্থীর উত্তরপত্রে একাধিক স্ট্যাপলিংয়ের ছিদ্র ও পেনসিলে লেখা বিভিন্ন প্রকারের সংকেত লক্ষ করা গেছে।
দুই হাজার ৪১১টি উত্তরপত্রে একাধিক স্ট্যাপলিংয়ের ছিদ্র ও পেনসিলে লেখা বিভিন্ন প্রকারের সংকেতসংক্রান্তে চাকরিপ্রার্থীদের জিজ্ঞাসাবাদে তারা কোনো সঠিক তথ্য দেয়নি।
অনুসন্ধানে জানা যায়, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে কর্মরত বিভিন্ন অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীর যোগসাজশে চাকরিপ্রার্থীদের কাছ থেকে ক্ষেত্রবিশেষে ১৫ থেকে ২০ লাখ টাকার বিনিময়ে নিয়োগ প্রদানের শর্তে জালজালিয়াতির আশ্রয় নেওয়া হয়।