Logo
×

Follow Us

বাংলাদেশ

করোনা ঝুঁকিতে হাওরাঞ্চলের শ্রমজীবী মানুষ

Icon

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২৩ মার্চ ২০২০, ২১:৪৬

করোনা ঝুঁকিতে হাওরাঞ্চলের শ্রমজীবী মানুষ

নভেল করোনাভাইরাসে যখন গোটা বিশ্ব আতঙ্কিত তখন করোনা ভাইরাসে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে হাওরাঞ্চলের শ্রমজীবী মানুষ।

হাওর বেষ্টিত সুনামগঞ্জের তাহিরপুর, জামালগঞ্জ, দিরাই, শাল্লা, ধর্মপাশা উপজেলায়সহ ১১টি উপজেলায় করোনা ভাইরাসে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে হাওরাঞ্চলের শ্রমজীবী নিম্ন আয়ের প্রত্যন্ত এলাকার মানুষ।

কারণ তারা দিনে আনে দিনে খায়। সকাল থেকে নদীতে না হয় বিভিন্ন বাজারে কাজ করতে হয়। পেশার প্রয়োজনেই ছুটতে হয় দিনরাত। আর তাদের মাঝে অনেকেই জানেনা এই ভাইরাস সম্পর্কে।

করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য পণ্যসমূহ তাদের নাগালের বাইরে। স্যানিটাইজার, মাস্ক কিনেছেন না অনেকে। নেই মানুষের সংস্পর্শ এড়িয়ে চলার সুযোগ।
ফলে সংক্রমণের পাশাপাশি করোনাভাইরাস দ্রুত ছড়িয়ে পড়ারও বাড়তি ঝুঁকি রয়েছে বলে জানিয়েছেন সচেতন মহল ও ডাক্তাররা।

তারা বলছেন, পরিবহন ও দিন মজুর শ্রমিকরা প্রতিদিন অসংখ্য মানুষের সংস্পর্শে আসেন। তাই তাদের মাধ্যমে ভাইরাসটি দ্রুত অন্যদের মধ্যেও ছড়িয়ে পড়তে পারে। তাই শ্রমজীবী ও নিন্ম আয়ের মানুষদের সুরক্ষা ও বাড়তি সুরক্ষা নিশ্চিত কররা খুবেই প্রয়োজন।

নভেল করোনাভাইরাসে যখন গোটা বিশ্ব আতঙ্কিত, তখন তা নিয়ে কোনো উদ্বেগই দেখা গেল না রনজি মিয়ার, তার ভাবনার বিষয় রিকশাযাত্রী কম হওয়া নিয়ে।
দিনমজুর রুমান উদ্দিন বলেন, আয় নেই, এখনই চলতে পারছি না। সামনে যে কী হবে বুঝতে পারছি না।

প্রতিদিন কাজের খুঁজে বাহির হতে হয়। ছেলে-মেয়ে-বউ নিয়া প্রায় সময় না খেয়ে থাকতে হয়। এসব কষ্ট বলে বুঝানো যাবে না। দিন মজুররা খেতে পাড়ে না এর মধ্যে ওইসব জিনিস কি ভাবে ক্রয় করবো। ময়লার মধ্যে দিনরাত থাকি। আমাদের মতো মানুষদের সহযোগিতা করা জরুরী।

ভ্যান চালক আলমগীর হোসেন বলেন, করোনা ভাইরাসে মানুষ আক্রান্তের খবর শুনলে হাত-পা ঠাণ্ডা হয়ে যায়। দিন আনি দিন খাই আমার হাতে প্রায় সময় বাজার করার টাকাও থাকেনা। এর মধ্যে কি ভাবে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকার জন্য মাস্ক, হাত ধুয়ার সাবান ক্রয় করবো।

পাথর শ্রমিক নেসার উদ্দিন ও বালি শ্রমিক সাজিদুর বলেন, আমি গরীব মানুষ আমার প্রতিদিন কাজ করতে হয়। কাজ না করলে খাবার পাব কই? আমার সংসার আমাকেই চালাতে হয়। বেশ কয়েক দিন ধরেই করোনা ভাইরাসের নাম শুনছি। এই ভাইরাস থেকে বাঁচার জন্য মাস্ক ব্যবহার করতে হয়। কিন্তু যা রুজি করি তা দিয়ে হয় না।

ঠেলাগাড়ি চালক তাপশ বলেন, মানুষের কাছ থেকে শুনে আসছি গত কিছুদিন ধরে করোনা ভাইরাস দেশের মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে। সরকার তো ইচ্ছে করলেই আমার মতো বিপদজনক অবস্থায় যারা কাজ করছি তাদের মাস্ক, হ্যান্ড ওয়াস, সাবান দিতে পারে। ভাইরাস প্রতিরোধে হ্যান্ড স্যানিটাইজার শ্রমজীবী মানুষের মাঝে বিনামূল্যে বিতরণ করা প্রয়োজন।

রিকশা শ্রমিক শফিক মিয়া বলেন, করোনা ভাইরাসের কথা মানুষের মুখ থেকে শুনে ভয় লাগে কিন্তু রিকশা চালানো তো আর বন্ধ করে দিতে পারব না। বন্ধ করে দিলে না খেয়ে থাকতে হবে। আমার মতো রিকশাচালকদের নিরাপত্তা নাই।

তাহিরপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান করুনা সিন্দু চৌধুরী বাবুল বলেন, সবাইকে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে কাজ করতে হবে। সেই অনুযায়ী আমরা প্রচার প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছি। সবাইকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধের নির্দেশনা মানলে, কাজ করলে ও সর্তক থাকলে এই ভাইরাস প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে।

উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে হাওরাঞ্চলের মানুষজনের জন্য প্রয়োজনীয় স্যানিটাইজার, মাস্ক বিতরণের জন্য উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। খুব শীঘ্রই তা বিতরণ করা হবে।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫