বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের দূরত্ব অনেকটাই কমেছে বলে দাবি করেছেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান।

বৃহস্পতিবার (১৩ জুলাই) রাতে সালমান এফ রহমানের গুলশানের বাসভবনে সফররত মার্কিন আন্ডার সেক্রেটারি উজরা জেয়া নৈশভোজে অংশ নেন। নৈশভোজের পর তিনি সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।

নৈশভোজে জেয়ার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্র, দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লুও এবং পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম অংশ নেন।

প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা বলেন, কিছু ভুল বোঝাবুঝি তো নিশ্চয়ই আছে, যদি ভুল বোঝাবুঝি না থাকত, তাহলে স্যাংশন, ভিসা নীতি … যাই বলেন, যেটা তারা করেছে। … আমার কথা হলো, আমি যেটা উনাদেরকে বলেছি, আমরা এটাকে স্বাগত জানাই যে আপনারা এসেছেন। বলেছি, দুই বন্ধুর মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি হতেই পারে, কিন্তু এই ভুল বোঝাবুঝিটাকে ঠিক করার পদ্ধতিটা হলো অ্যাংগেজমেন্ট আর এক আরেকজনের সাথে কথা বলা।

তিনি বলেন, আমার পয়েন্ট অব ভিউ তাদের বোঝা, তাদের পয়েন্ট অব ভিউ আমাদের বোঝা। এটা সম্ভব, যদি এই অ্যাংগেজমেন্টটা হয়। আমরা ওদেরকে স্বাগত জানাইছি যে, আপনারা এসেছেন, হাই লেভেলে, হায়ার লেভেলে প্রতিনিধিরা আসছেন।

সালমান বলেন, মেইন ভুল বোঝাবুঝি ছিল র‌্যাব স্যাংশনটা। র‌্যাবের স্যাংশনের পরে তো আমরা একটা প্রসেস শুরু করে দিলাম। তারাও আমাদেরকে বলল যে, অ্যাংগেজমেন্ট চালু থাকুক। আলোচনার প্রক্রিয়াটা যেন চালু রাখে, আমরা সেটাই চাই।

দুই দেশের মধ্যে দূরত্ব কমেছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ডেফিনিটলি দূরত্বটা কমেছে।

নৈশভোজে দেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে উজরা জেয়ার সঙ্গে আলোচনা হয়েছে বলে সালমান রহমান সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।

তিনি বলেছেন, একদিন আগে ঢাকায় আওয়ামী লীগ ও বিএনপির সমাবেশ শান্তিপূর্ণভাবে হওয়ায় সন্তোষ জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের আন্ডার সেক্রেটারি।

তার ভাষ্য, গতকাল (বুধবার) আমাদের যে দুইটা র‌্যালি হয়েছে, আওয়ামী লীগের আর বিএনপির, কোনো ঝামেলা হয়নি, এটা তারা খুব অ্যাপ্রেশিয়েট করেছে। পুলিশের ভূমিকাটিকে তারা অভিনন্দন জানিয়েছেন।

জাতীয় নির্বাচনের কয়েক মাস আগে আন্ডার সেক্রেটারির এই সফরকে গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে। উজরা জেয়া বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন। এছাড়া পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়েও বৈঠক করেন তিনি। তিনি সেখানে বলেন, নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য যে ভূমিকা দরকার, যুক্তরাষ্ট্র তা রাখবে।

সালমান রহমান বলেন, আমরা বলেছি কালকে দুই দলই সুন্দরভাবে করতে পেরেছে, যেহেতু বিএনপি কোনো প্রভোকেশন করেনি।

বাংলাদেশে অবাধ নির্বাচনে যারা বাধা হবে, তাদের ভিসা না দেওয়ার সিদ্ধান্ত ইতোমধ্যে নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

নৈশভোজে ভিসা নীতি নিয়ে কী আলোচনা হয়েছে, এ প্রশ্নে সালমান রহমান বলেন, উনারা বারবার বলেছেন একই কথা যে ‘আমরা এই ভিসা নীতি যে করেছি, ওটা কোনো দলকে বা কোনো বিশেষ কাউকে লক্ষ্য করে করিনি, আমরা মনে করি যে, এই ভিসানীতির কারণে আপনাদের নির্বাচনটা আরও ভালো হবে। যে কথাটা তারা পাবলিকলি বলেছে, আপনি তো শুনেছেন, উনি তো আজকে এ কথাটিই বলেছেন। বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী ফ্রি অ্যান্ড ফেয়ার ইলেকশনের কমিটমেন্ট করছেন, উনার এই কমিটমেন্টটাকে আরও শক্তিশালী করার জন্য আমরা এই ভিসানীতিটা করেছি। তারা বলেছে, আমরা কোনো দলের পক্ষে নেই। আমরা একটা সুষ্ঠু, অবাধ, নিরপেক্ষ একটা নির্বাচন চাই।

নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে কোনো আলোচনা হয়েছে কি না, এমন প্রশ্নে সালমান বলেন, না, সেটা নিয়ে উনারা কোনো কথা বলেননি। নির্বাচন নিয়ে তাদের একটাই কথা, অবাধ, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ ইলেকশন। এর বাইরে তারা কিন্তু নির্বাচন নিয়ে কোনো কথা বলেননি।