বাচ্চাকে মারধর করায় নালিশ জানাতে একদল কালোমুখো হনুমান থানায় হাজির হয়। পরে প্রত্যেক হনুমানকে শুকনো খাবার দিয়ে এবং হামলায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলে ঘণ্টা দু’য়েক পরে হনুমান দলটি থানা ত্যাগ করে। 

যশোরের কেশবপুর থানায় গতকাল রবিবার এমন ঘটে। এ ঘটনাটি জানাজানি হলে গোটা উপজেলা শহরে টক অব দ্যা টাউনে পরিণত হয়।

বিরল প্রজাতির এই কালো মুখ হনুমানের দল কেশবপুর থানার প্রধান ফটকে অবস্থান নেয়। একপর্যায়ে ডিউটি অফিসারের কক্ষে ঢুকে পড়ে তারা। থানা চত্বরে ও অফিস কক্ষে তাদের লাফালাফিতে পুলিশ সদস্যরা হতচকিত হয়ে পড়েন। পরে তাদের অতিযত্নে খাবার খাইয়ে শান্ত রাখার চেষ্টা করা হয়।

কেশবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শাহিন বলেন, মানুষের মারধরে আহত একটি বাচ্চাকে কোলে নিয়ে মা হনুমান প্রথমে থানায় আসে। পরপরই প্রায় ২০ থেকে ২৫টি হনুমান দলবদ্ধভাবে থানার প্রধান ফটকের সামনে ও ডিউটি অফিসারের কক্ষে অবস্থান নেয়। একপর্যায়ে ডিউটি অফিসারের কক্ষে ঢুকে পড়ে। থানা চত্বরে ও অফিস কক্ষে তাদের লাফ-ঝাঁপে পুলিশ সদস্যরা অবাক হন। পরে কিছু শুকনো খাবার দিলে ঘণ্টা খানিক অবস্থানের পর হনুমানের দল চলে যায়। হনুমানের ওপর হামলাকারীদের বিষয়ে তদন্ত করে দেখবেন বলে আশ্বস্ত করেন ওসি।

স্থানীয় কয়েকজন জানান, যুগ যুগ ধরে কেশবপুরে বাস করছে কালোমুখো হনুমান। লোকালয়ে বসবাসে অভ্যস্থ হনুমানগুলো মানুষের মতোই সবকিছু বোঝে। ইতোপূর্বে একটি হনুমানের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে থানা ঘেরাও করেছিলো হনুমান দল। এছাড়াও তাদের জন্য বরাদ্ধকৃত খাবার ঠিকাদার কম দিলেও চড়াও হয় তারা।

কেশবপুর উপজেলা বন কর্মকর্তা আব্দুল মোনায়েম হোসেন জানান, কেশবপুর উপজেলা শহর ও পার্শ্ববর্তী কয়েকটি গ্রামে পাঁচ শতাধিক হনুমান রয়েছে। তাদের জন্য প্রতিদিন মাত্র ৩৫ কেজি কলা, ২ কেজি বাদাম ও ২ কেজি পাউরুটি দেওয়া হয়। যা প্রয়োজনের তুলনায় একেবারে অপ্রতুল। খাবার না পেয়ে হনুমান মানুষের বসতবাড়ি ও অফিসে ঢুকে পড়ে। 

তাছাড়া হনুমান অত্যন্ত স্পর্শকাতর প্রাণী। তাদের ওপর কেউ হামলা করলে তারা দলবদ্ধভাবে এভাবে থানায় যায়। এর আগেও এ রকম একাধিক ঘটনা ঘটেছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।