
ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগী। ছবি- সংগৃহীত
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিশ্লেষণ বলছে, ৭৪ শতাংশ মৃত্যু হচ্ছে ‘ডেঙ্গু শক সিনড্রোমে’। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা বলছেন, ডেঙ্গুতে মৃত্যুর প্রধান কারণ হলো ডেঙ্গু শক সিনড্রোম।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তর যৌথভাবে ৮ অক্টোবর থেকে ১৪ অক্টোবর পর্যন্ত দেশের ডেঙ্গু পরিস্থিতির বিশ্লেষণ করেছে। বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ওই সময়ে ৭৬ শতাংশ মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন ঢাকা শহরের বাইরে। আর ৫১ শতাংশের মৃত্যু হয়েছে ঢাকার বাইরে।
অর্থাৎ আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা ঢাকার বাইরে বেশি হতে দেখা যাচ্ছে। এই বিশ্লেষণের তথ্য গতকাল রবিবার গণমাধ্যমে পাঠিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার অ্যান্ড কন্ট্রোল রুম।
ওই বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে, ওই সপ্তাহে সারা দেশে ১৬ হাজার ৪২৯ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। এ সময় হাসপাতালে মারা গিয়েছিলেন ৭৯ জন। ভর্তি রোগী ও মৃত্যুর সংখ্যা ছিল তার আগের সপ্তাহের (১–৭ অক্টোবর) চেয়ে যথাক্রমে ৬ ও ১২ শতাংশ কম। অর্থাৎ আক্রান্ত ও মৃত্যু কমে আসার একটি ইঙ্গিত এই পরিসংখ্যানে আছে।
বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে মৃতদের মধ্যে ৭৭ শতাংশের মৃত্যু হয়েছে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে, ৯৩ শতাংশের মৃত্যু হয়েছে তিন দিনের মধ্যে। অন্যদিকে যারা মারা গেছেন, তাঁদের ৭৪ শতাংশ মারা গেছেন ডেঙ্গু শক সিনড্রোমে। তবে গবেষণার সঙ্গে যুক্ত নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন অধ্যাপক আজ প্রথম আলোকে বলেন, শুধু গত সপ্তাহে নয়, এ বছর ডেঙ্গুতে বেশির ভাগ মৃত্যু হয়েছে ডেঙ্গু শক সিনড্রোমে।
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা জানান, ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হওয়ার পর একপর্যায়ে শরীরে জ্বর থাকে না; কিন্তু শরীর ডেঙ্গুর জীবাণুমুক্ত হয় না। সময়টা জটিল। ডেঙ্গু ভাইরাসের কারণে রক্তনালি থেকে রক্তরস বা প্লাজমা বের হয়ে ফুসফুসসহ শরীরের কিছু স্থানে রক্তরস জমা হয়।
শক সিনড্রোমে রক্তনালিতে রক্তের পরিমাণ কমে যায়। এই পরিস্থিতিতে নাড়ির স্পন্দন পাওয়া কঠিন হয়, রক্তচাপ নিরূপণ করাও কঠিন হয়ে পড়ে।