‘মালিক পক্ষের মজুরি প্রস্তাব তামাশার শামিল’

সিনিয়র রিপোর্টার
প্রকাশ: ২২ অক্টোবর ২০২৩, ১৮:২০

পোশাক শ্রমিক। ছবি: সংগৃহীত
গার্মেন্টস শ্রমিকদের মজুরি পুনর্নির্ধারণের জন্য গঠিত মজুরি বোর্ডের সভায় মালিক পক্ষ এবং শ্রমিক পক্ষের জমা দেওয়া মজুরি প্রস্তাব প্রত্যাখান করেছে গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্ট। অবিলম্বে গার্মেন্টস শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ২৩ হাজার টাকা ঘোষণার দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।
আজ রবিবার (২২ অক্টোবর) এক বিবৃতিতে এ কথা জানানো হয়।
বিবৃতিতে গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্টের সভাপতি আহসান হাবিব বুলবুল এবং সাধারণ সম্পাদক সেলিম মাহমুদ বলেন, গার্মেন্টস শ্রমিকদের মজুরি নির্ধারণের জন্য গঠিত মজুরি বোর্ড ইতিমধ্যে তাদের নির্ধারিত সময় অতিক্রম করে এসেছে। সময়ক্ষেপনের অপকৌশল গ্রহণ করার পাশাপাশি মজুরি বোর্ডে মালিক পক্ষ যে মজুরি প্রস্তাব করেছে তা শ্রমিকদের সাথে তামাশার শামিল।
নেতারা বলেন, ২০১৮ সালে শ্রমিকদের মজুরি দাবি ছিল ১৮ হাজার টাকা। শ্রমিকদের সেই দাবি উপেক্ষা করে মাত্র ৮ হাজার টাকা মজুরি নির্ধারণ করা হয়েছিল যা ছিল ৯৬ ডলারের সমান। বর্তমানে বেসরকারি ভাবে প্রতি ডলারের বিনিময় মূল্য ১১৮ টাকা দরে ৯৬ ডলারের বর্তমান মূল্য হয় ১১ হাজার ৩২৮ টাকা। অপরদিকে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর হিসাব অনুসারে ২০১৭-১৮ সাল থেকে প্রতিবছর গড় মুদ্রাস্ফীতি কমপক্ষে ৬ দশমিক ৩৭ শতাংশ অর্থাৎ পাঁচ বছরের চক্রাবৃদ্ধিতে মুদ্রাস্ফীতি কমপক্ষে ৩২ শতাংশ যদিও প্রকৃত মুদ্রাস্ফীতি এর চেয়ে অনেক বেশি যার ফল হলো ২০১৮ সালের ৮ হাজার টাকার সমান মজুরি হতে হলে বর্তমানে তার পরিমাণ হতে হবে প্রায় ১১ হাজার টাকা অথচ মজুরি বোর্ডে মালিক পক্ষের প্রতিনিধিরা মজুরি প্রস্তাব করেছে মাত্র ১০ হাজার ৪২০ টাকা। অর্থাৎ প্রধান কারিগরদের পুরস্কারের বদলে শাস্তি পেতে হবে, তাদের জীবনমান উন্নয়নের পরিবর্তে তাদের অপুষ্টি আর অনাহারকে সঙ্গী করে জীবন কাটাতে হবে। এই প্রস্তাবের মধ্যে দিয়ে গার্মেন্টস মালিকরা প্রমাণ করেছে তারা দেশের উন্নয়ন, জনজীবনের উন্নয়নের পরিবর্তে দেশে দাস সমাজের আধুনিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে চায়।
মজুরি ঘোষণায় কোনো অন্যায্যতা সহ্য করা হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়ে নেতারা বলেন, গত নয় মাসে পোষাক রপ্তানিতে ৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। অথচ শ্রমিকের খাবার প্লেটের খাদ্যের মান কমেছে।
নেতারা আরও বলেন, শ্রমিকদের ৬৫টি সংগঠনের জোট গার্মেন্টস শ্রমিক এ্যালায়েন্স, বাংলাদেশসহ কোনো সংগঠনই গার্মেন্টস শ্রমিকদের মজুরি ২৩ হাজার টাকার কম দাবি করেনি। মজুরি বোর্ডে শ্রমিক প্রতিনিধির প্রস্তাবে শ্রমিকদের দাবির প্রতিফলন না ঘটার নিন্দা জানায় এবং অবিলম্বে ন্যূনতম মজুরি ২৩ হাজার টাকা ঘোষণার দাবি জানায়। অন্যথায় উদ্ভুত পরিস্থিতির জন্য গার্মেন্টস মালিকদের দায় নিতে হবে।
নেতারা গার্মেন্টস শ্রমিকদের ২৩ হাজার টাকা মজুরির দাবি পূরণে ক্রেতা, ব্রান্ডদেরও ভূমিকা রাখার আহবান জানান। মজুরি প্রস্তাবের নামে গার্মেন্টস শ্রমিকদের সাথে তামাশার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে আগামীকাল সোমবার (২৩ অক্টোবর) নারায়ণগঞ্জ, আশুলিয়া, গাজিপুরসহ শিল্পাঞ্চলগুলোতে বিক্ষোভ প্রদর্শন করবে গার্মেন্টস শ্রমিকরা। সংশ্লিষ্ট সবাইকে কর্মসূচি সফল করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের আহবান জানান।