Logo
×

Follow Us

বাংলাদেশ

ঘরবন্দি মানুষের দিনলিপি

Icon

মাহমুদ সালেহীন খান

প্রকাশ: ০৫ এপ্রিল ২০২০, ০৮:৫৩

ঘরবন্দি মানুষের দিনলিপি

ফাইল ছবি

ট্রাফিক জ্যাম, গাড়ির অনবরত হর্ন, কিংবা প্রতিদিন সকালে স্কুলে যাওয়া, অফিসে যাওয়ার অভ্যাস সবই বদলে গেছে। দেশজুড়ে রাজধানী ঢাকার চিরাচরিত চিত্র গ্রাস করেছে করোনাভাইরাস। 

খুব বেশি প্রয়োজন ছাড়া পথে-ঘাটে মানুষ নেই। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ, তাই শিক্ষার্থীদেরও আনাগোনা কম। রাস্তায় গাড়ির সংখ্যাও কম। গণপরিবহন নেই বললেই চলে। সবকিছু মিলিয়ে নাগরিক জীবন পাল্টে গেছে ঢাকাবাসীর। পাল্টে গেছে নাগরিক অভ্যাসও। 

কেমন কাটছে স্বেচ্ছায় ঘরবন্দি মানুষদের দিনকাল। দেশের প্রান্তিক মানুষ থেকে শুরু করে বিশিষ্টজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, অনেকেই পরিবারকে সময় দিচ্ছেন, গল্প করে সময় কাটাচ্ছেন। কেউ কেউ বই পড়ছেন, সিনেমা দেখছেন। রান্না করে, ধর্মীয় প্রার্থনায় ব্যস্ত থেকে সময় পার করছেন। আবার জরুরি প্রয়োজনে কাউকে হয়তো ঘর থেকে বাইরেও যেতে হচ্ছে।

নিউএজ পত্রিকার সম্পাদক নূরুল কবীর বলেন, ‘আমরা যারা গণমাধ্যম কর্মী আমাদের জীবন যাত্রায় কি কোনো প্রভাব পড়েছে? আমাদের তো গৃহবাস বলতে কোনো শব্দ নেই, বরং কাজের চাপ আরো বেড়েছে। গণমাধ্যম কর্মীরা সবচেয়ে বেশি ঝুঁকির মধ্যে রয়েছেন। দিনে খবর সংগ্রহে মাঠে যেতে হচ্ছে। সন্ধ্যায় অফিস করতে হচ্ছে। পাশাপাশি বেতনের ঝুঁকি তো রয়েছেই। আমি যতটুকু সময় বাসায় থাকি- পত্রিকা আর বই পড়ে সময় কাটাচ্ছি। দুপুরের পর থেকে তো অফিস টকশো থাকছেই।’

কথাসাহিত্যিক মঈনুল আহসান সাবের বলেন, ‘করোনাভাইরাস থেকে বাঁচার জন্য সবাই সচেতন হয়ে ঘরে থাকছেন। এটা ইতিবাচক; কিন্তু মানুষ কাজ ছাড়া থাকতে পারে না, এটা স্বভাব। এজন্য অলস সময়কেও সচেতনভাবেই কাজের মধ্যে নিয়ে আসতে হবে। এ সময়টাতে কিছু কাজের পরিকল্পনা করে চিত্তবিনোদনের জন্য গান শোনা, সিনেমা দেখা, বই পড়া কিংবা রান্না করা, ব্যায়াম করা, ধর্মীয় প্রার্থনায় ব্যস্ত থাকার মধ্য দিয়ে সময় কাটানো যেতে পারে। অলস বসে থাকলে বিরক্তির মাত্রা বাড়তে থাকবে, সাথে করোনাভাইরাসের আতঙ্কও বাড়বে। তাই সবাইকে এই ছুটির সময়টা ব্যবহার করতে হবে ভালো চিন্তায়, ভালো কাজে।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, ‘দীর্ঘ ছুটি পেয়েছেন সবাই; কিন্তু বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই। এমন ছুটিতে কি আর আনন্দ হয়? মনে হচ্ছে, ঘরবন্দি হয়ে আছি। আমি তো এমনি অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক। তবে প্রতিদিন সকালে কোনো না কোনো সেমিনারে যেতাম। এখন বাসাতেই থাকছি। সকালে পত্রিকা পড়া, বাড়ির সামনের জায়গায় শরীরচর্চা করা, একটু পরপর হাত ধোয়া, স্ত্রীকে সাহায্য করার মধ্য দিয়ে দিন অতিবাহিত হচ্ছে। একটা জিনিস খেয়াল করবেন, এই গৃহবাসের ফলে পারিবারিক বন্ধনগুলো আরো দৃঢ় হচ্ছে।’ 

ঘরবন্দি এই সময়ে কেউ কেউ আবার নিজের অনেক কাজ গুছিয়ে নিচ্ছেন। বেশ কয়েক বছর ধরেই প্রথম গল্পের বই বের করার পরিকল্পনা করছিলেন সুমন আহমেদ; কিন্তু নিজের গল্পগুলোকে সম্পাদনা করতে পারছেন না চাকরির ব্যস্ততায়। এবারের ছুটিকে তিনি সুযোগ হিসেবে দেখছেন। 

সুমন জানালেন, ‘গত চার বছর যা গোছাতে পারিনি, এবার সেটা করার চেষ্টা করছি। আগামী বইমেলায় আমার প্রথম গল্পের বই প্রকাশ করতে চাই।’ 

নর্থসাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মাইশা জানিয়েছেন, এই সময়ে তিনি মায়ের কাছ থেকে রান্না শিখে নিচ্ছেন। 

ভাইরাস আতঙ্কের কারণে খেলাধুলা-শুটিং বন্ধ থাকায় দেশের জনপ্রিয় তারকারাও এখন বাসাবাড়িতে সময় কাটাচ্ছেন। ক্রিকেটার মাশরাফি বিন মর্তুজা ছেলের সঙ্গে ক্যারম খেলছেন- এমন একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেক ছড়িয়েছে। 

মোশাররফ করিম, চঞ্চল চৌধুরী, অপু বিশ্বাস, জাকিয়া বারী মমসহ অনেক তারকা ফেসবুকে করোনাভাইরাসের বিষয়ে সচেতনতামূলক ভিডিও বার্তা প্রকাশ করেছেন। অভিনেতা সাজু খাদেম তার ছেলের সঙ্গে কাটানো ভিডিও ফেসবুকে শেয়ার করছেন। গৃহে কাটানো সময়ের ভিডিও প্রকাশ করছেন অনেক তারকা। অভিনেত্রী নওশাবাকে দেখা গেছে বাসাতেই পুতুল নাটক তৈরি করে করোনাভাইরাস সম্পর্কে সবাইকে সচেতন করতে। আবার দেশের আরেক অভিনেত্রী মৌসুমী হামিদ গিটার শিখে সময় পার করছেন।

অভিনেতা আজিজুল হাকিম সাম্প্রতিক দেশকালকে বলেন, ‘প্রচণ্ড ব্যস্ততার মধ্যে আমি ও আমার স্ত্রী সময় পার করছিলাম। ভোর থেকে রাত পর্যন্ত যেন একঘেয়েমি রুটিনমাফিক কাজ। গত কয়েক দিন ধরে বাসায় সময় কাটাচ্ছি। আত্মীয়দের সাথে কথা হতো না, তাদের সাথে ফোনে কথা বলছি। মেয়ে শশুরবাড়িতে থাকে, ছেলেটাকে সময় দিচ্ছি বেশি করে।’ 

রাজধানীর শান্তিনগর এলাকায় থাকেন ইয়াসিন আরাফাত। তিনি বলেন, ‘এক সপ্তাহ ধরে ঘরবন্দি রয়েছি। এ সময়টাতে অন্তত ২০টার মতো সিনেমা দেখেছি।’ 

সামাজিক দূরত্ব মানতে দেখা-সাক্ষাৎ বন্ধ স্বজনদের সাথে, ঘরবন্দি জীবনে যোগাযোগের উপায় কেবল মোবাইল ফোন- এমনটাই জানালেন তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থী আশরাফুল ইসলাম আকাশ। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় তিনি গ্রামের বাড়ি বগুড়াতে আছেন। মা-বাবাকে ঘরের কাজে সাহায্য করে সময় কাটছে তার।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সামিয়া রহমান থাকেন পুরান ঢাকায়। মা, বাবা আর ভাই রয়েছে পরিবারে। আটদিন ধরে তিনি বাসার বাইরে বের হন না। ঘরের কাজে মাকে সহযোগিতা, পড়া, ছবি আঁকা, পেপার ক্র্যাফট আর শখের রান্নাবান্না করে সময় পার করছেন। সামিয়া বলেন, ‘১৮ তারিখে শেষবার বের হয়েছিলাম, তারপর আর বের হইনি। বারান্দা দিয়ে বাইরে দেখছি, অনেকেই আছে এখনো অহেতুক বাইরে ঘুরে বেড়াচ্ছে; কিন্তু এই সময়টা তো বাসায় থাকার, এটা সবাইকে বুঝতে হবে।’ সামিয়া ভিডিও কলে ছাত্রীকেও পড়াচ্ছেন ঘরে বসেই।

একটি বেসরকারি হাসপাতালে চাকরি করেন ফারহান। ৪ তারিখ পর্যন্ত সবকিছু বন্ধ থাকলেও হাসাপাতালে তার যেতেই হচ্ছে। জানালেন, ‘ঢাকা শহরকে এখন আর চেনা যায় না। কোনো মানুষজন নেই, যানবাহন নেই। সবকিছু যে কবে স্বাভাবিক হবে, কে জানে। এমন দুনিয়া, এমন শহর আমরা কেউ দেখতে চাই না।’

বাসায় ঠিকমতো পাওয়াই যাচ্ছিল না রিয়েল এস্টেট প্রতিষ্ঠানের মালিক ইমরান আজিমকে। তিনি থাকেন ঢাকার ক্রিসেন্ট রোডে। এখন  বাসায় সময় কাটছে তার। কীভাবে সময় কাটছে- প্রশ্ন করতেই একরাশ বিরক্তি নিয়ে বললেন, ‘খুব যন্ত্রণায় আছি। প্রতিদিনের অভ্যাস পরিবর্তন হয়ে যাচ্ছে। হাত ধুচ্ছি একটু পরপর। মায়ের সাথে রান্না করছি। কীভাবে সারাটা দিন তারা পার করে, বাসায় না থাকলে বোঝাই যেত না।’

বারিধারার বাসিন্দা নিলুফার ইয়াসমিন কাজ করেন একটি বিদেশি সংস্থায়। এমন পরিস্থিতিতে গৃহকর্মীকে ছুটি দেয়ায় ঘরের কাজে তাকে অনেকটা সময় দিতে হচ্ছে। তিনি জানালেন, ‘আগে টুকটাক ঘরের কাজ করতাম। এখন পুরোদমে করতে হচ্ছে। প্রতিদিনকার জীবনে একটা পরিবর্তন এসেছে। আগে হয়তো টুকটাক রান্না করতাম। এখন পুরোটাই করছি। সকালে কাজ শুরুর আগে মা-বাবার জন্য খাবার তৈরি করতে হচ্ছে। সে হিসেবে পরিবর্তন তো এসেছে।’

করোনাভাইরাসের দীর্ঘ ছুটিতে সব গণপরিবহন বন্ধ; মহাখালীর একটি রিকশার গ্যারেজের ভেতরে নিরাপত্তকর্মীর কাটছে অলস সময়। তিনি বলেন, ‘আগে বাজারের জন্য বাইরে যেতাম। এখন মেয়ে যেতে দিচ্ছে না। যাওয়াটা উচিতও নয়। এজন্য ঘরেই থাকতে হচ্ছে।’

পল্লবীর বাসিন্দা কামারজাবিন মিথি বলেন, ‘ছয় বছরের ছেলে স্কুলে যেত, বিকেলে খেলতে যেত। এখন দুটোই বন্ধ। কয়েক দিন ধরেই লক্ষ্য করছি, ছেলে একটু খিটখিটে মেজাজের হয়ে যাচ্ছে। বাইরে খেলতে যেতে না পারায় সারাদিন মোবাইল ফোন নিয়ে থাকছে। এখন পর্যন্ত বাজার থেকে কোনো কিছু পাইনি এমন হয়নি। তবে অন্য সময়ের চেয়ে দাম বেশি।’

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মিম থাকেন পুরান ঢাকার বনগ্রামে। তিনি একটি পরিবারের সাথে সাবলেটে থাকেন। এখন সময় কাটছে বাসার কাজ, রান্নাবান্না, সিনেমা দেখে আর বই পড়ে। ঘরে থাকলেও প্রতিবেশীদের অসচেতনতায় আশঙ্কায় রয়েছেন তিনি। দু’দিন পর কিছু কেনাকাটা করতে বৃহস্পতিবার বাইরে বেরিয়েছিলেন। 

মিম বলেন, ‘পুরান ঢাকার মানুষের মাঝে তেমন সচেতনতা দেখিনি। পুলিশের ভয়ে মেইন রোডে তেমন লোক না থাকলেও অলিগলিতে মানুষ ঘুরছে, এক ফ্ল্যাট থেকে আরেক ফ্ল্যাটে যাচ্ছে। আমার পাশের রুমে থাকেন একজন মুদি দোকানি। তিনি বাইরে যাওয়া-আসা করেন। আমি ঘরে বন্দি থাকলেও উনি যেহেতু বাইরে যান, তাই উনার মাধ্যমে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হতে পারি। যতটুকু সম্ভব নিজেকে রুমের মধ্যে আবদ্ধ রাখছি।’ 

তবে আর কতদিন এভাবে চলতে পারবেন, তা নিয়ে চিন্তিত মিম। তিনি আরো বলেন, ‘বাজার শেষ হয়ে গেলে আবার আমাকে বের হতে হবে, ঘরে থাকার তো সুযোগ নেই। টাকা লেনদেনের ক্ষেত্রে খুব সমস্যায় পড়ছি। টাকা তোলার জন্য বিকাশের দোকানগুলো খোলা পাচ্ছি না।’

ওয়ারির বাসায় স্ত্রী, বোন আর ভগ্নিপতিকে নিয়ে থাকেন ব্যাংক কর্মকর্তা সারওয়ার হোসেন কনক। তিনি বলেন, ‘আমরা এখন বাসায়ই থাকছি। তবে খুব আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটছে। শারীরিক কোনো সমস্যা দেখলেই দুশ্চিন্তায় পড়ে যাই। তবে বাসায় থাকা কিছুটা হলেও স্বস্তি দিচ্ছে, জনসমাগম এড়ানো যায়। এটা একটা ভালো উদ্যোগ।’

একটি বেসরকারি সংস্থার আইটি বিভাগে কর্মরত আজিজুল হাসান বলেন, ‘আসলে বাসায় কাজ করার পরিবেশ নেই। অফিসে যে পরিবেশ বাসায় সেটা থাকে না। অল্প একটু কাজ করলেই মনে হচ্ছে অনেক কাজ করে ফেলেছি। কিন্তু কিছু করার নেই। জানি না কতদিন এভাবে কাজ করতে হবে। এখন পর্যন্ত বাজারের জন্য দুটি অনলাইন শপের ওপর নির্ভর করছি। ডেলিভারি পেতে একটু সময় লাগছে। তবে মোটামুটি প্রয়োজন মিটছে।’

সবচেয়ে বেশি ‘বন্দি’ হয়েছে ছোট শিশুরাও। যে বয়সে ছোটাছুটি করে বেড়ানোর কথা তখন তাদের সারাক্ষণ থাকতে হচ্ছে চার দেয়ালের মধ্যে। শহরের শিশুদের এমনিতেই খেলাধুলার সুযোগ কম। মাঝে মধ্যে মা-বাবার সঙ্গে ঘুরতে বেরোনোর যে সুযোগ ছিল এখন তা-ও নেই। স্কুলও বন্ধ। ফলে দিন-রাত এখন তারা ঘরবন্দি। স্কুল বন্ধ থাকায় লেখাপড়ায় ব্যাঘাত ঘটছে। সময় কাটছে মোবাইল ফোনে গেম খেলে, টেলিভিশনে কার্টুন, সিনেমা দেখে।

অবশ্য অনেকেই বলছেন, কর্মব্যস্ত পরিবারগুলোয় মা-বাবার সান্নিধ্য খুব কমই পায় শিশুরা। অফিস-আদালত বন্ধ থাকায় শিশুরা এখন পরিবারের সঙ্গ পাচ্ছে। আনন্দে মশগুলে শিশুরা পড়তে তেমন একটা বসেও না বলে জানান কোনো কোনো অভিভাবক। কে এল জুবলি স্কুলের ষষ্ঠ শ্রেণির দুই শিক্ষার্থী তুবা ও মিমিয়া।

স্কুল বন্ধ থাকায় ১৬ মার্চ থেকে বাসায়। কোচিংও বন্ধ। স্কুলে যেতে হয় না, প্রতিদিনের বাড়ির কাজের চাপ নেই। নিয়ম করে সকাল-সন্ধ্যা মা-বাবা পড়াতে বসালেও তাতে তাদের মনোযোগ নেই। মা সুবর্ণা চাকলাদার পপি জানান, স্কুল খোলা থাকলে পড়ালেখায় মনোযোগ থাকে। এখন স্কুল বন্ধ, বাসায় পড়তে বসে না। সারাদিন খেলাধুলায় ব্যস্ত। কখনো টেলিভিশন, কখনো মোবাইল ফোনে গেম খেলায় ব্যস্ত।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫