ভোলায় সার কারখানা স্থাপনে সমীক্ষা চালানোর নির্দেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১১ ডিসেম্বর ২০২৩, ২৩:৪৫

ভোলার ইলিশা গ্যাসক্ষেত্র। ছবি- সংগৃহীত
ভোলায় পাওয়া প্রাকৃতিক গ্যাসকে কাজে লাগাতে সেখানে একটি সার কারখানা স্থাপনের সম্ভাবনা খতিয়ে দেখতে সমীক্ষা চালানোর নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আজ সোমবার (১১ ডিসেম্বর) মন্ত্রিসভার বৈঠকে তিনি ভোলায় আবিষ্কৃত গ্যাসের ব্যবহার প্রসঙ্গে এ নির্দেশনা দেন বলে জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে এদিন সকালে তার কার্যালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বিকেলে বৈঠকের বিষয়ে ব্রিফিং করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব।
তিনি বলেন, বৈঠকে নিয়মিত এজেন্ডার বাইরে সম্প্রতি সিলেট-১০ নম্বর কূপে গ্যাস ও তেল পাওয়ার বিষয়টি অবহিত করে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়। আলোচনার এক পর্যায়ে ভোলা এলাকায় যে গ্যাস পাওয়া গেছে সেটির কীভাবে সর্বোচ্চ ব্যবহার করা যায় সেটি নিয়েও আলোচনা হয়ে।
এ নিয়ে আলোচনার প্রসঙ্গ তুলে ধরে তিনি বলেন, বৈঠকে জানানো হয় ভোলা থেকে কিছু পরিমাণ গ্যাস সিএনজি আকারে দেশের বিভিন্ন স্থানে শিল্প কারখানায় দেওয়া হচ্ছে। তবে সেটা পরিমাণে খুব বেশি নয়। সেখানে আরও কিছু করা সম্ভব কি না তা চিন্তা করতে বলা হয়েছে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ওই আলোচনার সময় ভোলায় একটি সার কারখানা করে ওই গ্যাস ব্যবহার করে সার উৎপাদন করা যায় কি না সেজন্য একটি সমীক্ষা চালাতে প্রধানমন্ত্রী পরামর্শ দিয়েছেন।
দ্বীপ জেলা ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার কাচিয়া ইউনিয়নের শাহবাজপুরে ১৯৯৩-৯৪ সালের দিকে গ্যাসক্ষেত্র খনন শুরু হয়। বর্তমানে সেখানে শাহবাজপুর, ভোলা নর্থ ও ইলিশা নামে তিনটি গ্যাসক্ষেত্র রয়েছে। এসব গ্যাসক্ষেত্রে অন্তত নয়টি কূপে গ্যাসের সন্ধান মিলেছে।
রাষ্ট্রীয় খনিজসম্পদ অনুসন্ধান কোম্পানি বাপেক্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শোয়েব গণমাধ্যমকে জানান, ভোলায় বর্তমানে যেসব বিদ্যুৎকেন্দ্র ও শিল্প কিংবা আবাসিক সংযোগ রয়েছে তাতে দৈনিক ৮৫ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস ব্যবহার করা যাচ্ছে। আরও ৮০ মিলিয়ন গ্যাস সরবরাহ করার সক্ষমতা এ মুহূর্তে সেখানে রয়েছে।
বর্তমানে সিলেট, আশুগঞ্জ, নরসিংদী, জাপালপুর ও চট্টগ্রামে যেসব সার কারখানা রয়েছে তা গ্যাস সংকট ও যান্ত্রিক দক্ষতার অভাবে পুরো সক্ষমতায় ইউরিয়া সার উৎপাদন করতে পারছে না। ফলে চাহিদা মেটাতে প্রতিবছর চড়া দামে বিদেশ থেকে সার আমদানি করতে হয়।
অন্যদিকে ভোলার গ্যাসকে কাজে লাগাতে প্রয়োজনে পাইপলাইন নির্মাণ করে তা খুলনা অঞ্চলে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা আলোচনায় রয়েছে। পাশাপাশি বেসরকারি উদ্যোগে ভোলার গ্যাসকে সিএনজিতে রূপান্তর করে তা ময়মনসিংহ অঞ্চলের শিল্প সংযোগে সরবরাহ করার বিষয়টিও প্রক্রিয়াধীন। তবে এর বাইরেও ভোলায় শিল্প কারখানা ও সার কারখানা স্থাপন করে গ্যাসের ব্যবহারের পরামর্শ এতদিন বিশেষজ্ঞরা দিয়ে আসছিলেন।