সংবাদ সম্মেলনে সিআইডি প্রধান মোহাম্মদ আলী মিয়া। ছবি- সংগৃহীত
যারা প্রতারণা করে সম্পদ করছে, বিদেশে অর্থ পাচার করছে তাদের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিংয়ের মামলা হবে। একই সঙ্গে তাদের সব সম্পদ এবং ব্যাংকে রাখা অর্থ ফ্রিজ করা হবে জানিয়েছেন পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) প্রধান মোহাম্মদ আলী মিয়া। তিনি বলেন, যারা প্রতারণার মাধ্যমে মানুষের অর্থ হাতিয়ে নিয়ে পাচার করছে, তাদের কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। এরই মধ্যে বেশকিছু ঘটনায় এ রকম অর্থ ফ্রিজ করা হয়েছে। আরও কিছুর কাজ চলছে।
এক ব্যক্তির কাছ থেকে প্রতারণার মাধ্যমে ৭২ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়া ঘটনায় করা মামলার তদন্তে অভিনব একটি চক্রের সন্ধান পায় সিআইডি। ওই চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেপ্তারের পর চক্রের প্রতারণার বিষয়ে জানাতে আজ বৃহস্পতিবার (১৪ মার্চ) রাজধানীর মালিবাগে সিআইডির সদর দপ্তরে এক সংবাদ সম্মেলনে আয়োজন করা হয়। সেখানে এসব কথা বলেন মোহাম্মদ আলী মিয়া।
সিআইডিপ্রধান বলেন, যারা প্রতারক তারা প্রতারণার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার পর সেই টাকা জমা রাখেন না। তারা টাকা উঠিয়ে অন্যত্রে বিনিয়োগ করে ফেলছে। সম্প্রতি লাগেজ ভর্তি ডলার পাঠানোর কথা বলে প্রায় ২ কোটি ৩১ লাখ টাকা হাতিয়ে নিলেও সেই টাকা নিজের কাছে রাখেনি তারা।
এ সময় তিনি ভার্চুয়াল টোপ থেকে সবাইকে সাবধান থাকতে বলেন। এছাড়া কেউ যদি কম কষ্ট আর বিনিয়োগে বেশি লভ্যাংশ দেওয়ার কথা বলে সে বিষয়ে আগে খোঁজখবর নেওয়ার পরামর্শ দেন মোহাম্মদ আলী মিয়া।
তিনি বলেন, সম্প্রতি যে কাউকে ফোন করে অথবা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিনা বিনিয়োগে অর্থ উপার্জনের প্রলোভন দেখানো হচ্ছে। বাসায় বসে বিনা পুঁজিতে লাভবান হওয়া থেকে শুরু করে বিভিন্ন কথা বলে আকৃষ্ট করে। চক্রটি টোপ হিসেবে কিছু টাকা দিচ্ছে, এরপর সেই লিংক বন্ধ করে দিচ্ছে। পরে কৌশলে জিম্মি করে টাকা আদায় করছে চক্রটি। চক্রটির সঙ্গে বিদেশি একটি চক্র জড়িত। চক্রটি নিয়ে কাজ করছে সিআইডি।
মোহাম্মদ আলী আরও বলেন, ভুক্তভোগী সুমন আল রেজার সঙ্গে প্রতারক চক্রের ফেসবুকের মাধ্যমে পরিচয় হয়। পরিচয়ের একপর্যায়ে নিজেকে ফ্লোরিডা সিটি ব্যাংকের কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে ৬০ লাখ ডলার জমা অর্থ পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে হাতিয়ে নেন ৭২ লাখ টাকা। এই টাকা রেজা তার বোন ও দুলাভাইয়ের কাছ থেকে নিয়ে আসে। তবে শেষ রক্ষা হয়নি। চক্রটির হোতাসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি। গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন- হোতা সোহেল আহমেদ অপু, ইব্রাহিম ও আকাশ।
এ ঘটনায় গত বছরে ১৭ ডিসেম্বর উত্তরা পশ্চিম থানায় একটি মামলা করেন। সেই মামলায় তপুসহ তার দুই সহযোগীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে মূলহোতা তপুকে বুধবার রাতে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তপু মিরপুরের আব্দুল মান্নানের ছেলে।