Logo
×

Follow Us

বাংলাদেশ

বড় ক্ষতি এড়াতে বিমানটি জনবিরল এলাকায় নিয়ে যান দুই পাইলট

Icon

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৯ মে ২০২৪, ২২:২৫

বড় ক্ষতি এড়াতে বিমানটি জনবিরল এলাকায় নিয়ে যান দুই পাইলট

বিধ্বস্ত হওয়ার আগে দুই পাইলট বিমান থেকে প্যারাসুটে করে লাফ দেন। ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রামে বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় এক পাইলট নিহতের ঘটনায় আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আজ বৃহস্পতিবার (৯ মে) জানানো হয়েছে, বিমানে আগুন ধরার পর বড় ধরনের কোনো ক্ষতি এড়ানোর জন্য দুই পাইলট দক্ষতা ও সাহসিকতার সঙ্গে ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা থেকে জনবিরল এলাকায় যেতে সক্ষম হন।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিমান বাহিনীর একটি ইয়াক-১৩০ প্রশিক্ষণ বিমান নিয়মিত প্রশিক্ষণের অংশ হিসেবে এদিন সকাল ১০টা ২৫ মিনিটের দিকে চট্টগ্রামের বিমান বাহিনীর ঘাঁটি জহুরুল হক থেকে উড্ডয়ন করে। প্রশিক্ষণ শেষে ফেরার সময় বিমনাটি কর্ণফুলী নদীর মোহনার কাছে দুর্ঘটনার শিকার হয়।

দুর্ঘটনার বৈমানিক উইং কমান্ডার মো. সোহান হাসান খান ও স্কোয়াড্রন লিডার মুহাম্মদ আসিম জাওয়াদ জরুরি প্যারাসুটের মাধ্যমে বিমান থেকে নদীতে অবতরণ করেন। পরে তাদের বাংলাদেশ বিমানবাহিনী ও নৌবাহিনীর উদ্ধারকারী দল এবং স্থানীয় জেলেদের সম্মলিত প্রচেষ্টায় উদ্ধার করা হয়। দুই বৈমানিকের মধ্যে স্কোয়াড্রন লিডার মুহাম্মদ আসিম জাওয়াদের অবস্থা গুরুতর হওয়ার কারণে তাকে তাৎক্ষণিক বিএনএস পতেঙ্গায় নেয়া হয় চিকিৎসার জন্য। পরে সেখানে দায়িত্বরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন তাকে।

এদিকে এ ঘটনায় বিমানবাহিনীর প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল শেখ আব্দুল হান্নানের নির্দেশে দুর্ঘটনার কারণ খুঁজে বের করতে উচ্চপর্যায়ের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

আইএসপিআর থেকে জানানো হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং বিমানবাহিনীর প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল শেখ আব্দুল হান্নান মরহুম বৈমানিকের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেছেন। একইসঙ্গে শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন।

জানা গেছে, ১৯৯২ সালের ২০ মার্চ মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া থানার গোপালপুর গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্ম নিহত স্কোয়াড্রন লিডার মুহাম্মদ আসিম জাওয়াদের। তার বাবার নাম মো. আমান উল্লাহ ও মায়ের নাম নিলুফা আক্তার খানম। আসিম জাওয়াদ ২০০৭ সালে সাভার ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল থেকে এসএসসি, ২০০৯ সালে সাভার ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক কলেজ থেকে এইচএসসি এবং ২০১২ সালে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস থেকে বিএসসি (অ্যারো) করেন।

এরপর ২০১০ সালের ১০ জানুয়ারি বাংলাদেশ বিমানবাহিনীতে যোগদান করেন আসিম জাওয়াদ। পরের বছর, অর্থাৎ ২০১১ সালের ১ ডিসেম্বর ক্যাডেটদের জন্য সর্বোচ্চ সম্মান সোর্ড অব অনার অর্জন করেন এবং জিডি (পি) শাখায় কমিশন লাভ করেন তিনি।

আইএসপিআরের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, আসিম জাওয়াদ তার চাকরিকালীন বিমানবাহিনীর বিভিন্ন ঘাঁটি ও ইউনিটে গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। পেশাদারি দক্ষতা ও সাফল্যের স্বীকৃতিস্বরূপ মফিজ ট্রফি, বিমানবাহিনী প্রধান ট্রফি ও বিমানবাহিনী প্রধানের প্রশংসাপত্র লাভ করেছেন।

এছাড়া ভারতীয় বিমানবাহিনীতে কোর্সে অংশগ্রহণ করে সাফল্যের স্বীকৃতিস্বরূপ চিফ অব এয়ারস্টাফস ট্রফি ফর বেস্ট ইন ফ্লাইং (ইন্ডিয়ান এয়ারফোর্স) অর্জন করেন। চাকরিকালীন দেশ-বিদেশে পেশাগত বিভিন্ন কোর্সে অংশগ্রহণ করে সাফল্যের সঙ্গে সেসব সম্পন্ন করেছেন তিনি। মৃত্যুকালে ৩২ বছর ১ মাস ২০ দিন বয়স হয়েছিল তার। স্ত্রী, এক কন্যা, এক পুত্র, মা-বাবা ও অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন তিনি।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫