Logo
×

Follow Us

বাংলাদেশ

আর কয়েক ঘণ্টার মধ্যে উপকূল অতিক্রম করবে রেমাল

Icon

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৬ মে ২০২৪, ১৮:০০

আর কয়েক ঘণ্টার মধ্যে উপকূল অতিক্রম করবে রেমাল

ঘূর্ণিঝড় রেমাল আর কয়েক ঘন্টার মধ্যে বাংলাদেশের উপকূল অতিক্রম করবে। ছবি: সংগৃহীত

ঘূর্ণিঝড় রেমাল আর কয়েক ঘন্টার মধ্যে পটুয়াখালির খেপুপাড়া দিয়ে  উপকূল অতিক্রম করতে পারে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর। 

আজ রবিবার (২৬ মে) আবহাওয়ার ১২ নম্বর বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছেন অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মো. ওমর ফারুক।

এছাড়া আবহাওয়া অধিদপ্তর এবং আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ সংক্রান্ত বেসরকারি সংস্থা বাংলাদেশ ওয়েদার অবজারভেশন টিমের (বিডব্লিউওটি) পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় রেমালের কেন্দ্রে ‘চোখ’ অবয়ব দেখা গেছে। ফলে এটি ব্যাপক শক্তি নিয়ে উপকূলে আঘাত হানার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তদরের ১২ নম্বর বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, উত্তরপশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’ উত্তর দিকে অগ্রসর হয়ে একই এলাকায় অবস্থান করছে। এটি আজ দুপুর ১২টায় চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দর থেকে ৩৩৫ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্র বন্দর থেকে ৩১৫ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে, মোংলা সমুদ্র বন্দর থেকে ২২০ কিলোমিটার দক্ষিণে এবং পায়রা সমুদ্র বন্দর থেকে ২০০ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছিল। 

বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের অগ্রভাগের প্রভাবে বৃষ্টিসহ দমকা বা ঝোড়ো হাওয়া অব্যাহত রয়েছে। এটি আরও উত্তর দিকে অগ্রসর হয়ে ২৬ মে সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ৩-৪ ঘণ্টার মধ্যে মোংলার কাছ দিয়ে সাগর আইল্যান্ড (পশ্চিমবঙ্গ) খেপুপাড়া উপকূল অতিক্রম করতে পারে। প্রবল ঘূর্ণিঝড়টির কেন্দ্র অতিক্রমের পর এর নিম্নভাগ অতিক্রম অব্যাহত থাকবে। প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৬৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৯০ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ১২০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর বিক্ষুব্ধ রয়েছে।

পায়রা ও মোংলা সমুদ্রবন্দরকে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনা, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলো ১০ (দশ) নম্বর মহাবিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।

কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরকে ৯ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলো ৯ নম্বর মহাবিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে। খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনা, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলার নদী বন্দরকে ৪ নম্বর নৌ-মহাবিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।

ঘূর্ণিঝড়টির অগ্রবর্তী অংশ ও বায়ুচাপ পার্থক্যের আধিক্যের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনা, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৮-১২ ফুট অধিক উচ্চতার বায়ু তাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।

প্রবল ঘূর্ণিঝড়টির প্রভাবে রাজশাহী, রংপুর, ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগে দমকা ঝোড়ো হাওয়াসহ ভারী (৪৪-৮৮ মিমি/২৪ ঘণ্টা) থেকে অতি ভারী (১৮৯ মিমি/২৪ ঘণ্টা) বর্ষণ হতে পারে। অতি ভারী বর্ষণের প্রভাবে কক্সবাজার, বান্দরবান, রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও চট্টগ্রামের পাহাড়ি অঞ্চলের কোথাও কোথাও ভূমিধস হতে পারে। উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হলো।

এদিকে ঘূর্ণিঝড়ের চোখ প্রসঙ্গে বিডব্লিউওটির প্রধান আবহাওয়া গবেষক খালিদ হোসেন বলেন, একটি সাইক্লোন যখন সংঘটিত হয় তখন আশপাশের মেঘগুলো ছড়ানো ছিটানো অবস্থায় থাকে। মেঘগুলো যখন ধীরে ধীরে সংকুচিত হয়ে আসে তখন এর প্রধান কেন্দ্র প্রচণ্ড গরম থাকে। গরমের ফলে ওই জায়গায় প্রচণ্ড শক্তি তৈরি হয়। এর ফলে নিচ থেকে জলীয় বাষ্পগুলো উপরের দিকে উঠে আসে। তখন উপরের জায়গা পরিষ্কার হয়ে যায়। এই অবস্থাকেই ঘূর্ণিঝড়ের ‘চোখ’ তৈরি হয়েছে বলা হয়। এমন অবস্থা তৈরি হলে চারপাশের মেঘগুলো ঘুরে ঘুরে মাঝখানে একটা চোখের মতো অবয়ব তৈরি করে। এটি মূলত একটি শক্তিশালী সাইক্লোনের লক্ষণ।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫