আগামী শুক্রবার থেকে বন্ধ হচ্ছে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৯ মে ২০২৪, ১৭:০৭

আগামী শুক্রবার (৩১ মে)-র থেকে বাংলাদেশিদের মালয়েশিয়াতে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে শ্রমবাজার। ছবি: সংগৃহীত
আগামী শুক্রবার (৩১ মে)-র পরে মালয়েশিয়াতে কর্মী যাবেন না। বিষয়টিকে জনশক্তি রপ্তানিতে ‘কালো ছায়া’ হিসেবে অভিহিত করে এই খাতের বিশেষজ্ঞরা। তাদের ভাষ্য, সরকারের তরফ থেকে নতুন বাজার সৃষ্টির কথা বলা হলেও বাস্তবতা ভিন্ন।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, টেকসই শ্রম অভিবাসন স্মার্ট বাংলাদেশের মূল ভিত্তি হওয়া উচিত ছিল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও বিষয়টি সেভাবেই দেখেন। তারপরও বাস্তবে সেটার প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে না।
জানা গেছে, ২০১৯ সালে গুটিয়েক রিক্রুটিং এজেন্সি সিন্ডিকেট করে হাজার হাজার কোটি হাতিয়ে নেওয়ার পর তিন বছর মালয়েশিয়া বাংলাদেশ থেকে কর্মী নেওয়া বন্ধ রাখে। তারপর অনেক দেন-দরবারের পর ২০২২ সালের ১৯ ডিসেম্বর থেকে পুনরায় দেশটিতে কর্মী পাঠানো শুরু হয়।
গত দেড় বছরে দেশটিতে গেছেন অন্তত চার লাখ বাংলাদেশি কর্মী। তবে কোটা পূরণের অজুহাতে দেশটি হঠাৎ ভিসা বন্ধ করার ঘোষণা দিয়েছে। সেই সঙ্গে বলা হয়েছে, চলতি বছরের আগামী ৩১ মের পর আর কোনো বাংলাদেশি কর্মী মালয়েশিয়ায় ঢুকতে পারবেন না। এই অবস্থায় সব প্রক্রিয়া শেষ করেও মালয়েশিয়ায় যেতে না পারার আশঙ্কায় আছেন বাংলাদেশের অন্তত ১০ হাজার কর্মী।
দ্বিতীয় দফায়ও সিন্ডিকেটের অভিযোগ ওঠে। তারপর সরকার থেকে মোট ২৫টি রিক্রুটিং এজেন্সি ঠিক করে দেওয়া হয়। এর বাইরে কেউ দেশটিতে কর্মী পাঠাতে পারবে না। এটি নিয়েও ব্যাপক আন্দোলন করে অন্যান্য রিক্রুটিং এজেন্সি। তারা বলেন, ঘুরেফিরে আগের সিন্ডিকেটই এখনো বহাল। এ অবস্থায় আগামী শুক্রবার (৩১ মে) থেকে আর দেশটিতে কর্মী পাঠানো যাবে না।
এ প্রসঙ্গে অভিবাসন বিশেষজ্ঞ আসিফ মুনীর বলেন, এটা অবশ্যই জনশক্তি রপ্তানির নেতিবাচক দিককেই ইঙ্গিত করে। তবে একটা বিষয় মনে রাখতে হবে, আমরা ঘুরেফিরে কয়েকটি দেশেই কর্মী পাঠাচ্ছি। ফলে একসময় দেখা যাবে যে নতুন করে আর কাউকে পাঠাতে পারছি না।
অবিলম্বে বিষয়টিতে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা না নিলে সামনে আরও সংকট দেখা দেবে উল্লেখ করে আসিফ মুনীর বলেন, আমাদের কর্মীরা বেশির ভাগ এসএসসি পাসই না। তারা ভালো করে বাংলা বলতে পারেন না। ইংরেজি তো দূরের কথা। তাই ক্র্যাশ প্রোগ্রামের মাধ্যমে দক্ষতা বৃদ্ধি করতে হবে। এ ক্ষেত্রে ১০ বছর মেয়াদি পরিকল্পনা হতে পারে। তাহলে দেখা যাবে আমরা এগোচ্ছি।
এ প্রসঙ্গে প্রবাসী কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী শফিকুর রহমান চৌধুরী জানান, সময় বাড়ানোর জন্য মালয়েশিয়াকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। আলোচনা চলমান আছে।
জনশক্তি রপ্তানিকারকদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সিসের (বায়রা) যুগ্ম মহাসচিব টিপু সুলতান বলেন, এই বাজার দ্রুত চালু করতে সরকারের পক্ষ থেকে কূটনৈতিক তৎপরতা বাড়াতে হবে। না হলে প্রবাসী আয়ে প্রভাব পড়বে।