
সম্প্রতি এক মামলায় শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালে করা আপিলের শুনানি শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন শান্তিতে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ফাইল ছবি।
শ্রম আইন লঙ্ঘনের মামলায় দণ্ডিত ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবার অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের মামলায় বিচারের মুখে। তবে নোবেলজয়ী ইউনূস তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ বরাবরই প্রত্যাখ্যান করে আসছেন। তার দাবি, তিনি আওয়ামী লীগ সরকারের রোষের শিকার।
আজ বুধবার (১২ জুন) ঢাকার জজ আদালত এই মামলায় ইউনূসসহ ১৪ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে ১১ জুলাই সাক্ষ্যগ্রহণ অর্থাৎ বিচার শুরুর দিন ঠিক করে দিয়েছে।
এই মামলায় দোষি সাব্যস্ত হলে ইউনূসের সর্বোচ্চ যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হতে পারে। এর আগে শ্রম আইন লঙ্ঘনের মামলায় ৬ মাসের কারাদণ্ড নিয়ে শর্ত সাপেক্ষ মুক্ত আছেন তিনি।
এদিকে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের করা অভিযোগকে নাকজ করে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, আদালতের ওপর সরকারের কোনও হস্তক্ষেপ নেই। বরং ইউনূসই সরকারকে বিপদে ফেলতে নানা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত।
অন্যদিকে আজ বুধবার (১২ জুন) অভিযোগ গঠনের সময় ইউনূস আদালতে উপস্থিত থাকলেও তার কোনও প্রতিক্রিয়া তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি।
উল্লেখ্য, এক যুগ আগে গ্রামীণ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের পদ থেকে ইউনূসকে সরিয়ে দেওয়ার পর থেকে সরকারের সঙ্গে তার টানাপড়েন চলছে।
১৯৮৩ সালে সরকারের অংশীদারিত্বে গ্রামীণ ব্যাংক প্রতিষ্ঠার পর থেকে এর ব্যবস্থাপনা পরিচালকের পদে ছিলেন ইউনূস। দারিদ্র্য বিমোচনে ভূমিকা রেখে বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠায় অবদানের জন্য ২০০৬ সালে ব্যাংকটির সঙ্গে ইউনূসও যৌথভাবে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পান।
বয়সের কারণ দেখিয়ে ২০১১ সালে ইউনূসকে ব্যবস্থাপনা পরিচালকের পদ থেকে অপসারণ করে আওয়ামী লীগ সরকার। তার বিরুদ্ধে আইনি লড়াই চালিয়েও হেরে যান তিনি। এরপর গ্রামীণ ব্যাংকের পাশাপাশি এর সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্তৃত্বও হারাতে থাকেন এই নোবেলজয়ী।
সরকারের সঙ্গে ইউনূসের টানাপড়েনের মধ্যে শ্রম আইন লঙ্ঘন করে শ্রমিকদের অধিকার থেকে বঞ্চিত করার অভিযোগে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর ইউনূসের বিরুদ্ধে মামলা করে।
সেই মামলায় গত ২ জানুয়ারি দেওয়া রায়ে শ্রম আদালত ইউনূসসহ চারজনকে দোষী সাব্যস্ত করে ছয় মাস করে বিনাশ্রম কারাদণ্ডাদেশ দেয়, প্রত্যেককে জরিমানা করা হয় ২৫ হাজার টাকা। তবে আপিল করার শর্তে তারা কারাগারে যাওয়া থেকে নিষ্কৃতি পান।
সেই মামলার রায়ে বিচারক বলেছিলেন, মামলায় গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান হিসেবে ড. ইউনূসের অপরাধের বিচার হয়েছে, নোবেলজয়ী হিসেবে নয়।