
মোহাম্মদ রুবেল হোসেন। ছবি- লেখক
তখন ভরদুপুর, মাথার ওপর সূর্য মেঘের সঙ্গে লুকোচুরি খেলছিল, বেশ গরম। মোহাম্মদপুরের ইকবাল রোডের ফুটপাতে বসে চা, সিগারেট ও পান বিক্রি করছিলেন মোহাম্মদ রুবেল হোসেন।
বেচা-বিক্রির ফাঁকে ফাঁকে কথা বলছিলেন-প্রায় পাঁচ বছর হলো ময়মনসিংহ থেকে এসে এ পেশায় যুক্ত হয়েছেন, পুঁজি বাদ দিয়ে দৈনিক পাঁচশ টাকা আয় হয় তার। এই ঈদে বাড়ি যাবেন। উত্তরটা অনুমেয়ই ছিল, তবু জানতে চাইলাম, কোরবানি দেবেন কি না। একটা সারল্য মাখা হাসি দিয়ে বললেন, ‘কোরবান কি আর আমরা দিই, গরিব মানুষ না আমরা, দিন আনি দিন খাই। মন তো চায় কোরবানি দিই, পাশের বাড়ির একজন যখন বড় গরু কোরবানি দেয় তখন একটু তো খারাপ লাগে। ঈদের দিন গ্রামের মাঠে সমাজ থেকে আমাদের ডাকে, আমরা গিয়ে মাংস কাটতে সাহায্য করি, এ ছাড়াও গরিবদের জন্য যে ভাগটা থাকে, যতটুকু পাই, তা নিয়ে আসি।’
ঈদ এলে রুবেলেরও খুশি লাগে, তবে ঈদের খুশিটা একটু বদলে গেছে। রুবেল জানালেন, ‘যখন ছোট ছিলাম তখন ঈদের সময় বাবা-মায়ের কাছে জামাকাপড় চাইতাম, জুতা চাইতাম। তারা কিনে দিতেন। এখনো ঈদ এলে খুশি লাগে, কিন্তু খুশি লাগলেও যে টাকার দরকার। সন্তানদের জন্য কেনাকাটা করার পর যদি কিছু থাকে তাহলে কিনি। এখন ওদের আনন্দ হলে আমারও আনন্দ হয়। কোরবানির ঈদে কোরবানি ছাড়া সব আনন্দই হয়, মানে যারা কোরবানি দেয় তাদের মনে একটা আনন্দ থাকে, ওটাই শুধু নেই।’