Logo
×

Follow Us

বাংলাদেশ

পিতা-মাতাকে ভরণপোষণ না দিলে আইনি প্রতিকার

Icon

লোকমান হাওলাদার

প্রকাশ: ০৭ জুলাই ২০২৪, ২২:৩২

পিতা-মাতাকে ভরণপোষণ না দিলে আইনি প্রতিকার

আইন অনুযায়ী বাবা-মায়ের ভরণপোষণ দেওয়া সন্তানের জন্য বাধ্যতামূলক। প্রতীকী ছবি

পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব সম্পর্কে আমরা সবাই অবগত। কিন্তু বিশ্বায়নের এ যুগে বড় হয়ে আমরা সেই কর্তব্য ভুলে যাই। পুরুষদের তুলনায় নারীরাই বেশি বৃদ্ধাবস্থায় পরিবারগুলোতে বোঝা হয়ে পড়ে। বর্তমান যুগে দেখা যায় উচ্চশিক্ষিত সন্তান, ভালো প্রতিষ্ঠানে কর্মরত; কিন্তু বাবা-মাকে ভরণপোষণ আদায়ের জন্য আদালতের দ্বারস্থ হতে হচ্ছে।

বর্তমানে রাষ্ট্রীয় আইন অনুযায়ী বাবা-মায়ের ভরণপোষণ দেওয়া সন্তানের জন্য বাধ্যতামূলক। অমান্য করলে সন্তানদের আইনের আওতায় আনা হবে। অবহেলিত বাবা-মায়ের দুঃখ-কষ্ট লাঘবে এবং সন্তানের কাছ থেকে ভরণপোষণ আদায়ে বাবা-মায়ের অধিকারকে আইনি স্বীকৃতি দিয়ে সরকার ২০১৩ সালে বাবা-মায়ের ভরণপোষণ আইন প্রণয়ন করে। এই আইনের ২ ধারায় এ সম্পর্কিত সংজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। ৩ ধারায় স্পষ্ট বলা হয়েছে-পিতা-মাতার ভরণপোষণ সন্তান নিশ্চিত করবে। পাশাপাশি একাধিক সন্তান থাকলে আলোচনা করে নিশ্চিত করবে। কোনো সন্তান পিতা-মাতাকে তাদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে কোনো বৃদ্ধনিবাস বা আলাদাভাবে অন্য কোথাও বসবাসের জন্য বাধ্য করতে পারবে না। প্রত্যেক সন্তানকে পিতা-মাতার স্বাস্থ্য ও চিকিৎসাসেবা সম্পর্কে নিয়মিত খোঁজ রাখতে হবে। যদি সন্তানের স্ত্রী, পুত্রকন্যা বা কোনো নিকটাত্মীয় ব্যক্তি পিতা-মাতার ভরণপোষণে বাধা প্রদান করে তবে সে ব্যক্তিকে আইনের তত্ত্বাবধানে আনা হবে। ৪ ধারায় বলা হয়েছে, পিতা-মাতার অবর্তমানে দাদা-দাদি, নানা-নানি থাকলে তাদের ৩ ধারা অনুযায়ী সেবাদানে বাধ্য, যদি কেউ এই আইন অমান্য করে, তবে তাকে এক লাখ টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে তিন মাসের কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে। পিতা-মাতার ভরণপোষণ আইনের ৩-এর (৭) অনুযায়ী কোনো পিতা-মাতা কিংবা উভয়ে, সন্তানের সঙ্গে বসবাস না করে, পৃথকভাবে বসবাস করলে, সেই ক্ষেত্রে উক্ত পিতা বা মাতার প্রত্যেক সন্তান তাদের দৈনন্দিন আয়-রোজগার বা মাসিক বা বাৎসরিক আয় হতে যুক্তিসঙ্গত পরিমাণ পিতা বা মাতা, অথবা উভয়কে নিয়মিত অর্থ প্রদান করবে অথবা তাদের মাসিক আয়ের দশ ভাগের এক ভাগ পিতা-মাতার ভরণপোষণের জন্য দেবে। পিতা-মাতাকে যদি সন্তান ভরণপোষণ না দেন তাহলে সংশ্লিষ্ট থানার আমলি আদালতে লিখিত অভিযোগ দিলে আদালত তা গ্রহণ করতে পারবেন। এ আইনে সুবিধা হলো আদালত চাইলে এ অভিযোগ আপস নিষ্পত্তির জন্য সিটি করপোরেশন, পৌরসভার মেয়র বা কমিশনার, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বা মেম্বার বা যে কোনো উপযুক্ত ব্যক্তির কাছে পাঠাতে পারবেন। এতে উভয় পক্ষকে অবশ্যই শুনানির সুযোগ দিতে হবে। উপরোক্ত ব্যক্তির কাছে নিষ্পত্তি করা অভিযোগ আদালতের নিষ্পত্তি হিসেবে গণ্য হবে। 

যদিও আইন দিয়ে এই অমানবিক বিষয় রোধ করা সম্ভব নয়। এর জন্য প্রয়োজন প্রতিটি সন্তানের বাবা-মায়ের প্রতি কর্তব্যপরায়ণ হওয়া। আমাদের উচিত এসব বৃদ্ধ বাবা-মায়ের সাহায্যে এগিয়ে আসা এবং তাদের মানসিক ও আর্থিকভাবে সুরক্ষা প্রদান করা।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫