কোটা বিরোধী আন্দোলন
আগামীকাল প্রতিনিধি বৈঠক, সন্ধ্যায় পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১২ জুলাই ২০২৪, ১৯:০৫

নতুন কর্মসূচি দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। সংগৃহীত ছবি
সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিলের দাবিতে ও কোটা বিরোধী আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উপর পুলিশি হামলার প্রতিবাদে রাজধানীর শাহবাগে আয়োজিত অবরোধ কর্মসূচি শেষে নতুন কর্মসূচির ঘোষণা দেয়া হয়েছে।
আজ শুক্রবার (১২ জুলাই) বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আবু বাকের মজুমদার জানান, আগামীকাল শনিবার (১৩ জুলাই) সারাদেশে সংগঠনটির সমন্বয়কদের নিয়ে অনলাইন-অফলাইনে প্রতিনিধি বৈঠক করা হবে৷এ কই সঙ্গে পূর্বে ঘোষিত ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের কর্মসূচিও চলমান থাকবে। পরবর্তীতে বিকেল ৬টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে সংবাদ সম্মেলন করবেন তারা। সেখান থেকে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
আবু বাকের মজুমদার বলেন, গতকাল আন্দোলনে কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, শেকৃবিসহ অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে আমাদের ভাইবোনদের ওপর পুলিশ লাঠিচার্জ করেছে, টিয়ারগ্যাস নিক্ষেপ করেছে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষমতাসীন ছাত্র সংগঠনের সভাপতি আমাদের সমন্বয়ককে চড় থাপ্পড় মেরেছে৷ আমরা এই হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। আমি সমন্বয়কদের অভয় দিয়ে বলতে চাই, কেউ যদি আমাদের ওপর হামলা চালায় তাহলে আমরা তাদের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক প্রতিরোধ গড়ে তুলব।
তিনি বলেন, গতকাল কুমিল্লায় এক সাংবাদিক বন্ধুর উপর পুলিশ হামলা করেছে। তাছাড়া গতকাল কিছু অছাত্র-কুছাত্রদের দিয়ে ঢাবি ক্যাম্পাস ভরে রাখা হয়েছিল। পরে শাহবাগে কিছু কুচক্রী মহল তাদের দিয়ে আমাদের আন্দোলনকে বিতর্কিত করতে সাংবাদিকদের উপর হামলা করেছে। সাংবাদিকরা গত ৫ জুন থেকে নিরলসভাবে আমাদের দাবির পক্ষে কাজ করে যাচ্ছেন। আমরা এই হামলার নিন্দা জানাই এবং জড়িতদের শাস্তির দাবি জানাই।
এর আগে বিকেল ৫টার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে মিছিল নিয়ে শাহবাগের দিকে অগ্রসর হন শিক্ষার্থীরা। পাশাপাশি ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরাও মিছিল নিয়ে শাহবাগে অবস্থান নেন।
এ সময় শিক্ষার্থীরা বলেন, পুলিশ দিয়ে এ আন্দোলন বন্ধ করা যাবে না। প্রশাসনকে যৌক্তিক জবাব দিতে হবে। কোটা সংস্কারের পরই তারা আন্দোলন থেকে সরে আসবেন।
এদিকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে সতর্ক অবস্থান নেয় পুলিশ। কোনোভাবেই যাতে আন্দোলনকারীরা বাংলামোটরের দিকে এগোতে না পারে সেটি নিশ্চিত করতেই অবস্থান নেয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
উল্লেখ্য, গত ৫ জুন সরকারি চাকরিতে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির মুক্তিযোদ্ধা কোটা পদ্ধতি বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করেন হাইকোর্ট। এরপর ৯ জুন হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ। ওইদিন এই আবেদন শুনানির জন্য আপিল বিভাগে পাঠিয়ে দেন চেম্বার আদালত।
গত ৪ জুলাই প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে ছয় বিচারপতির আপিল বেঞ্চ সরকারি চাকরির প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা পদ্ধতি বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেয়া রায় আপাতত বহাল রাখার নির্দেশ দেন। পরে ১০ জুলাই হাইকোর্টের দেয়া রায়ে চার সপ্তাহের জন্য স্থিতাবস্থা দিয়েছেন আপিল বিভাগ।
এর আগে, ২০১৮ সালের ৪ অক্টোবর সরকারি চাকরিতে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির পদে সরাসরি নিয়োগে বিদ্যমান কোটা পদ্ধতি তুলে দিয়ে পরিপত্র জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।