বাহিনীর সংস্কার দাবী করে কর্মবিরতিতে পুলিশ এসোসিয়েশন

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬ আগস্ট ২০২৪, ১৫:২২

বাংলাদেশ পুলিশ এসোসিয়েশন। ফাইল ছবি
থানায় হামলা ও সহকর্মীদের হত্যার প্রতিবাদে অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতি ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ পুলিশ এসোসিয়েশন। আজ মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) এক গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ সিদ্ধান্ত জানায় পুলিশের অধস্তন কর্মচারীদের এই সংগঠনটি।
বিজ্ঞপ্তির শুরুতেই বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাথে সম্পৃক্ত সকলকে দেশ থেকে স্বৈরাচার উৎখাতের জন্য অভিনন্দন জানানো হয় বাংলাদেশ পুলিশ এসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে। পাশাপাশি আন্দোলনে নিহত প্রতিটি ছাত্র ভাইয়ের রুহের মাগফেরাত ও আহতদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করা হয়।
শত শত পুলিশ ইতোমধ্যে মৃত্যুবরণ করেছেন জানিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘আমরা বিশ্বাস করি এগুলো কোন ছাত্রদের কাজ নয় । নিঃসন্দেহে কোন দুষ্কৃতিকারীদের কাজ।’
দেশবাসী পুলিশ বাহিনীকে তাদের শত্রু মনে করছে জানিয়ে পুলিশের অধস্তন কর্মচারী সংগঠনের পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘পুলিশ জনগণের সেবক। পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধ এই পুলিশ বাহিনীই করেছিলো। যে কোনো সংকটে সংগ্রামে আমরা সবসময়ই দেশবাসীর পাশে আছি।’
বাংলাদেশ পুলিশ এসোসিয়েশন জানায়, চাকুরী জীবনে বৈষম্যের স্বীকার হচ্ছেন পুলিশের অধস্তন কর্মচারীরা।
‘রাষ্ট্র যে আইন তৈরি করে তা বাংলাদেশ পুলিশের মাধ্যমে রাষ্ট্র প্রয়োগ করে থাকে। এবং আইন প্রয়োগ করতে গিয়ে জনসাধারণের সাথে রোষের সৃষ্টি হয়। আমরা প্রকৃতপক্ষে নিয়োগের শুরু থেকেই সার্জেন্ট/সাব-ইন্সপেক্টরসহ নিম্নপদস্থ কর্মকর্তা কর্মচারীরা সিনিয়র অফিসারদের অথবা রাজনৈতিক নেতাদের স্বার্থ হাসিলের বাহক হিসেবে কাজ করতে বাধ্য হই সেটা বৈধ হোক আর অবৈধ হোক যে কোনো আদেশই পালন করতে হয়। আমাদের অফিসাররা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দলীয় পরিচয়ে দুষ্ট। আমরা বর্তমান কোটা সংস্কার আন্দোলনসহ যে কোনো আন্দোলনে কোন সাধারন মানুষকে সরাসরি গুলি করতে না চাইলেও সেটা বাধ্য হয়ে করতে হয় দলীয় এজেন্ডা বাস্তবায়ন করার জন্য। এবং আমাদের কে দেশবাসীর কাছে ভিলেনে রূপান্তরিত করা হয়। আমরা কোটা সংস্কারের মতো পুলিশ বাহিনীর সংস্কার চাই।’
পুলিশ জনসাধারণের সাথে কোনোভাবেই বৈরিতাপূর্ণ সম্পর্কে জড়াতে চায় না জানিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘পুলিশ বাহিনী হিসেবে নিরীহ ছাত্রদের সাথে যে অন্যায় করেছে তার জন্য আমরা ক্ষমাপ্রার্থী।’
তারা জানায়, ‘আমরা প্রতিটি পুলিশ সদস্য আপনাদেরই কারও না কারও ভাই-বোন-বন্ধু-বাবা-মা বা আত্মীয় স্বজন। আমরাও আপনাদের সমাজেরই অংশ। দেশের যে কোনো বিপদে অতীতের মতোই আপনাদের পাশে পাবেন। হিন্দু মুসলিম বৌদ্ধ খ্রিস্টান আমরা সকলে মিলে বাংলাদেশ।’
পুলিশের কোনো সদস্য কোনো অন্যায়কাজ করে থাকলে তার অবশ্যই বিচার হবে জানিয়ে পুলিশের অধস্তন কর্মচারী সংগঠনটি জানায়, ‘গতকাল ৫/৮/২৪ তারিখে ৪৫০ অধিক থানা আক্রান্ত হয়েছে। এগুলো আপনাদেরই সম্পদ, দেশের সম্পদ। প্রতিটি পুলিশ সদস্যের জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত আমরা কর্মবিরতি ঘোষণা করছি। আমরা বৈষম্যহীন পুলিশ বাহিনী চাই। পুলিশ বাহিনীর সংস্কার চাই।’
পাশাপাশি, থানা-ফাঁড়ি ও পুলিশী স্থাপনার নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবি করে পুলিশের অধস্তন কর্মচারীদের এই সংগঠনটি।