Logo
×

Follow Us

বাংলাদেশ

রাজধানীর থানাগুলোতে ফিরতে শুরু করেছে পুলিশ

Icon

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৯ আগস্ট ২০২৪, ১০:৩৫

 রাজধানীর থানাগুলোতে ফিরতে শুরু করেছে পুলিশ

রাজধানীর থানাগুলোতে ফিরতে শুরু করেছে পুলিশ সদস্যরা। ফাইল ছবি

পুলিশ নেই। থানা বন্ধ। এর মধ্যেই ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় ডাকাতির খবর পাওয়া গেছে। সারা দেশেই পাড়া-মহল্লায় বাসিন্দারা নিজেরাই রাত জেগে পাহারা দিচ্ছেন। কয়েকটি এলাকায় এলাকাবাসী নিজেরাই ডাকাত ধরে সেনাবাহিনীর কাছে সোপর্দ করেছেন।

তবে আশার কথা, থানাগুলোতে ফিরতে শুরু করেছে পুলিশ সদস্যরা। তবে খুব সহসাই স্বাভাবিক কার্যক্রম শুরুর সুযোগ কম। কারণ অধিকাংশ থানাই আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। গাড়িগুলোও পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। ঢাকার বাইরেও বিভিন্ন থানায় কিছু কিছু পুলিশ সদস্য কাজে আসছেন বলে খবর পাওয়া গেছে।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মইনুল হাসান ইত্তেফাককে বলেন, পুলিশ সদস্যরা কাজে ফিরতে শুরু করেছেন। আমি কয়েক জন ওসিকে নিয়ে বৈঠকে বসেছিলাম। তাদের কাজ শুরুর নির্দেশ দিয়েছি। যেসব থানা আগুন ধরিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে, ঐ থানাগুলো পরিষ্কার করে স্বল্প পরিসরে কাজ শুরু করা হবে। এছাড়া যে থানাগুলোতে হামলা হয়নি, সেগুলোতে পুরোদমে কাজ শুরু হচ্ছে। শুক্রবার বা শনিবার থেকেই থানার স্বাভাবিক কার্যক্রম শুরুর চেষ্টা করছি। পুলিশ কাজ শুরু করতে পারলে মানুষের মধ্যে যে আতঙ্ক আছে, সেগুলো আর থাকবে না। আমরা মানুষকে আশ্বস্ত করার চেষ্টা করছি।

মোহাম্মদপুরের পিসি কালচার হাউজিং সোসাইটির ১০ নম্বর রোডের বাসিন্দা ও একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার অপলক হাসান সজীব বলেন, বুধবার রাত ২টা ১০ মিনিটের দিকে সাত-আট জন এসে আমাদের বাড়ির গেট ভাঙতে চেষ্টা করে। কিন্তু আমাদের সিকিউরিটি গার্ড সচেতন থাকায় তিনি সবাইকে দ্রুত খবর দেন। ফলে আমরা সবাই নেমে এলে তারা পালিয়ে যায়। এ সময় আশপাশের বাড়ির বাসিন্দারাও নেমে আসেন। আসলেই আমরা খুবই আতঙ্কের মধ্যে আছি।

গত বুধবার গভীর রাতে কাজীপাড়ার বাঁশপট্টি এলাকায় একাধিক বাড়িতে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে বলে খবর পাওয়া গেছে। ঐদিন গভীর রাতে উত্তরা ৭ নম্বর সেক্টরে ও আদাবরে একাধিক ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসী। উত্তরা ১১, ১২ ও ১৪ নম্বর সেক্টরে ডাকাতি হচ্ছে এমন খবর ছড়িয়ে পড়ার পর মসজিদের মাইক থেকে সবাইকে সতর্ক থাকতে বলা হয়। উত্তরা এলাকা থেকে ১১ জন ডাকাতকে ধরে এলাকাবাসী সেনাবাহিনীর কাছে সোপর্দ করেছে। ক্যান্টনমেন্ট থানা এলাকার ইসিবি চত্বরের পাশে অনলাইন গ্রুপের জমি, ভবন দখল নিয়ে দুই গ্রুপের মধ্যে বুধবার রাতে গোলাগুলি হয়েছে বলে জানা গেছে।

পুলিশ সদর দপ্তরের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, নবনিযুক্ত পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মো. ময়নুল ইসলাম পুলিশ সদস্যদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে নিজ নিজ কর্মস্থলে যোগদানের আহ্বান জানিয়েছিলেন। তার আহ্বানে সাড়া দিয়ে পুলিশ সদস্যরা কর্মস্থলে ফিরছেন। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, যেসব পুলিশ সদস্য কর্মস্থলের উদ্দেশে রওনা হয়েছেন তাদের আসার পথে বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ, রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, শিক্ষার্থী এবং আপামর জনসাধারণ যাতে পুলিশ সদস্যরা নিরাপদে কর্মস্থলে আসতে পারেন, সেজন্য সর্বাত্মক সহযোগিতা করছেন।

গুলশান থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাযহার হোসেন বলেন, আমরা কমিশনারের সঙ্গে বৈঠক করেছি। পুলিশ সদস্যরা আসতে শুরু করেছে। কার্যক্রম শুরু করতে আমাদের আরেকটু সময় লাগবে।

এদিকে গতকাল বৃহস্পতিবার বিকালে রাজারবাগে পুলিশ কনস্টেবলরা মিছিল করেছেন। তারা সহকর্মী হত্যার বিচার দাবি করেছেন। পুলিশ সদস্যদের পক্ষ থেকে ১১ দফা দাবির তালিকা পাওয়া গেছে। ১১ দফা দাবির প্রথমটিতে বলা হয়েছে, ছাত্র আন্দোলনে মৃত্যু হওয়া প্রতিটি ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার করতে হবে। যেসব পুলিশ নিহত হয়েছেন, তাদের পরিবারকে এককালীন আর্থিক ক্ষতিপূরণ, আজীবন রেশন-পেনশন দেওয়ার কথা রয়েছে দ্বিতীয় দাবিতে। এসআই ও সার্জেন্ট নিয়োগ পিএসসির অধীনে এবং কনস্টেবল নিয়োগ শতভাগ স্বচ্ছতার সঙ্গে পুলিশ হেডকোয়ার্টার থেকে হতে হবে বলে দাবি করা হয়েছে। পদোন্নতির ক্ষেত্রে স্বচ্ছতার জন্য কিছু সুপারিশ করা হয়েছে। 

একই সঙ্গে আন্তর্জাতিক নিয়ম অনুযায়ী পুলিশের জন্য কর্মঘণ্টা কমিয়ে আট ঘণ্টায় আনা, ছুটি ও ওভারটাইম নিশ্চিত করার দাবিও করা হয়েছে। পুলিশকে যেন কোনো রাজনৈতিক সরকার তাদের কর্মী হিসেবে ব্যবহার করতে না পারে, তেমন ব্যবস্থা তৈরি করা। সেজন্য স্বাধীন পুলিশ কমিশন গঠন করার দাবিও রয়েছে।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫