Logo
×

Follow Us

বাংলাদেশ

ড. ইউনূস প্রধান উপদেষ্টা হওয়ায় সীমান্তের ওপারে বর্ধমানে খুশি জোয়ার

Icon

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৯ আগস্ট ২০২৪, ১২:৫১

ড. ইউনূস প্রধান উপদেষ্টা হওয়ায় সীমান্তের ওপারে বর্ধমানে খুশি জোয়ার

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীণ সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও তার শ্যালক আসফাক হোসেন। ছবি: সংগৃহীত

ড. মুহাম্মদ ইউনূস বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন। এতে বিগত কিছুদিন ধরে চলা অচলাবস্থার নিরসন হয়েছে। তাতে খুশি বাংলাদেশের মানুষ। একই সাথে সীমান্তের ওপারে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের বর্ধমানেও চলছে খুশির ঢেউ। কারণটা হলো ড. ইউনূস বর্ধমানের জামাই । তাদের আশা, অশান্ত বাংলাদেশে শান্তি ফেরাতে পারবেন তাদের এই যোগ্য জামাই।  

জানা গেছে, ড. ইউনূসের স্ত্রী আফরোজী ইউনূস জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ছিলেন। পশ্চিমবঙ্গে তার স্বজনরা বলছেন, পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান শহরের রাণীগঞ্জ বাজারের কাছে লস্কর দিঘি এলাকায় বড় হয়েছেন তিনি। এই এলাকায় তার অনেক আত্মীয়-স্বজনই বসবাস করেন। তাদের বাড়ির জামাইয়ের হাতে এখন নির্ভর করছে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ, এটা তাদের জন্য আনন্দের বলেও উল্লেখ করেছেন তারা।

গত বুধবার (৭ আগস্ট) বর্ধমানের লস্করদিঘি এলাকার বাসিন্দা ও ড. ইউনূসের শ্যালক আসফাক হোসেন বলেন, আমার বিশ্বাস দুলাভাই (ড. ইউনূস) বাংলাদেশকে সঠিক পথে পরিচালিত করতে পারবেন। 

পেশায় ব্যবসায়ী আসফাক হোসেন প্রতি বছর নিয়ম করে ঢাকার গুলশানে বোন-দুলাভাইয়ের বাড়িতে আসেন। গত বছরও ঢাকায় এসেছিলেন তিনি। আসফাক বলেন, ড. ইউনূসের মতো উচ্চমানের ও উচ্চমনের মানুষের মধ্যে দেশ চালানোর সব গুণ রয়েছে। আর ওইরকম একজন বিদগ্ধ মানুষ বাংলাদেশের প্রধান হলে আমাদের ভারতের সঙ্গে আরও সুসম্পর্ক গড়ে উঠবে বলেই বিশ্বাস করি। 

ড. ইউনূস প্রসঙ্গে তার শ্যালক আসফাক হোসেন নানা স্মৃতিচারণ করেন। তিনি বলেন, তার মতো অমায়িক মানুষ দেখা যায় না। যাকে বলে মাটির মানুষ। শান্ত, নম্র, বিনয়ী, মিষ্টভাষী মানুষ আমি আর দ্বিতীয়টি দেখিনি। তার জ্ঞান, কর্মজীবনের কথা সকলেই জানেন। আমি আর কি বলবো। তিনি বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা হয়ে সরকার চালাবেন, এতে আমাদের খুব গর্ব হচ্ছে। 

আসফাক আফসোস নিয়ে বলেন, ২০০৬ সালে নোবেল প্রাইজ পেয়ে দুলাভাই (ড. ইউনূস) ও আপা (আফরোজা, ড. ইউনূসের স্ত্রী) বর্ধমানে এসেছিলেন। তাও  প্রায় ১৮ বছর হয়ে গেছে। তিনি না আসলেও আমাদের মধ্যে মাঝেমাঝে যোগাযোগ হয়। 

আসফাক হোসেন বোন দুলাভাইকে নিয়ে ট্রেন ভ্রমণের  স্মৃতিচারণ করেন। তিনি বলেন, ২০০৬ সালে এখান থেকে যেদিন তারা বাংলাদেশে ফিরলেন, সে সময় তাকে বর্ধমান থেকে হাওড়া যাওয়ার সময় ফার্স্ট ক্লাসের টিকিট কেটে দিয়েছিলেন। কিন্তু দুলাভাই ফার্স্ট ক্লাসে না গিয়ে সাধারণ কামরায় উঠলেন। আমি খুব অবাক হয়েছি। পরে দুলাভাই আমাকে বলেছিলেন, সাধারণ কামরায় সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলতে বলতে ট্রেন ভ্রমণের আনন্দই আলাদা। তবে সেদিন ড. ইউনূস দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ট্রেন ভ্রমণ করলেও তার স্ত্রী আফরোজা কিন্তু বসার আসন পেয়েছিলেন। এই নিয়ে আমাদের কত হাসি ঠাট্টা চলে।  

আসফাক বলেন, কতটা মাটির মানুষ হলে পরে কেউ এমন করতে পারে। সাধারণ মানুষের সঙ্গে মিশতে পারবে বলে বিলাসিতা ছেড়ে সাধারণ কামরায় যে উঠে যান, তার কাছ থেকেইতো সবচেয়ে বেশি আশা করা যায়। তাই না? 

আসফাক আরও বলেন, উনি অতি সাধারণ জীবনযাপন করেন। পোশাকেও কোনও বিলাসিতার ছাপ নেই। এক বস্ত্রে কাটিয়ে দিতে পারেন। আর তার প্রিয় খাবারের তালিকায় শীর্ষে রয়েছে খিচুড়ি। তিনি খিচুড়ি ও শুটকি খেতে খুব ভালোবাসেন।

একই সঙ্গে আসফাক হোসেন বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা এই নেতার কাছে ভারত-বাংলাদেশের নাগরিকদের জন্য স্পট ভিসার ব্যবস্থা করার দাবি জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ভারত সরকার ও বাংলাদেশ সরকারের এই বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। এখন ভিসা পেতে ১৫ থেকে ২০ দিন লেগে যায়। তাতে খুব অসুবিধার মধ্যে পড়তে হয়। হয়তো কেউ অসুস্থ, দেখতে যাবো বলে ঠিক করেছি। ভিসা পেতে পেতেই তিনি চলে গেলেন। দেখা করতে পারলাম না। তার বদলে, বর্ডারে যাওয়ার পর, সেখান থেকেই ভিসা করে দিলে, সুবিধা হবে।

আসফাকের স্ত্রী তনুজা হোসেন জানিয়েছেন, ভারতে এলে সময় পেলেই বর্ধমানে আসেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি আরও বলেন, উনি সৎপথে আছেন বলেই তো আজ সৃষ্টিকর্তা তাকে এই জায়গায় নিয়ে গেছেন। দেখবেন বাংলাদেশে খুব শিগগিরই শান্তি ফিরবে। উনি খুব চেষ্টা করবেন। উনি তো খুব ভালো মানুষ, সৎ মানুষ। বাংলাদেশের মানুষ ওনার সঙ্গে আছে। সেই জন্যই তো তাকে চাইছে সবাই।

সূত্র: সংবাদ প্রতিদিন

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫