
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) লোগো। ছবি: সংগৃহীত
শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ছাড়ার পর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের মেয়র, প্যানেল মেয়র ও কাউন্সিলরদের। তারা সবাই আওয়ামী লীগ সমর্থক। দুই সিটির ১৭২ জন কাউন্সিলরের মধ্যে ১৮ জন বিএনপিপন্থি। ওই ১৮ জন ছাড়া অন্যরা অফিস করছেন না।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) দুই মেয়রসহ অধিকাংশ কাউন্সিলর কোথায় তা জানেন না করপোরেশনের কর্মকর্তারা। এমন পরিস্থিতিতে কী করবেন, তাও বুঝে উঠতে পারছেন না।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঘিরে রাজধানীতে ব্যাপক সংঘর্ষ ও সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। নগরীর যত্রতত্র পড়ে আছে আবর্জনা, ইটপাটকেল ও গৃহস্থালি বর্জ্য। উভয় সিটির আঞ্চলিক ও কাউন্সিলর অফিস পুড়িয়ে দিয়েছে বিক্ষুব্ধরা। শিক্ষার্থীরা নিজেদের উদ্যোগে অনেক এলাকা পরিষ্কার করলেও রাজধানীর বেশির ভাগ এলাকায় আবর্জনার স্তূপ রয়ে গেছে, জ্বলছে না সড়কবাতি। সন্ধ্যার পর নগরীর অধিকাংশ সড়কে অন্ধকার নেমে আসছে। ভীতিকর পরিবেশ তৈরি হচ্ছে। রাতে ডাকাতির ঘটনাও ঘটছে। নগরবাসী নিজেরা এলাকা পাহারা দিচ্ছেন।
এদিকে, এখন ডেঙ্গুর মৌসুম। কিন্তু উদ্ভূত পরিস্থিতিতে মশক নিধন কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। জন্ম-মৃত্যুনিবন্ধন, নাগরিকত্বসহ ১৭ ধরনের সনদ ইস্যু হচ্ছে না। মেয়র, কাউন্সিলরের পাশাপাশি আওয়ামীপন্থি কর্মকর্তা ও কর্মচারীরাও অফিস করছেন না। এ অবস্থায় নগর সেবা কার্যক্রম কার্যত বন্ধ।
ডিএসসিসির একটি সূত্র জানায়, মেয়র ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপস সিঙ্গাপুরে অবস্থান করছেন। তাঁর অনুপস্থিতিতে করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) কাউন্সিলরদের নিয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার একটি সভা ডাকেন। সেই সভায় সাধারণ ৭৫ কাউন্সিলরের মধ্যে প্যানেল মেয়রসহ ৬৫ জন উপস্থিত ছিলেন না। পরে সিইও বিএনপিপন্থি ১০ কাউন্সিলর নিয়ে দ্রুত নগরীর বর্জ্য অপসারণ, মশক কার্যক্রম এবং সড়কবাতি মেরামত বিষয়ে আলোচনা করেন।
বৈঠকে উপস্থিত ৫৩ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মীর হোসেন মীরু বলেন, ‘সিটি করপোরেশন নিয়মের মধ্যে চলে। মেয়র আর প্যানেল মেয়ররা যদি অনুপস্থিত থাকেন, তবে যারা উপস্থিত আছেন তাদের নিয়ে আবার প্যানেল মেয়র গঠন হবে। নতুন সরকারের কার্যক্রম শুরু হলে সবকিছু জানা যাবে।’
গতকাল দুপুরে ডিএনসিসির গুলশান নগর ভবনে গিয়ে একই চিত্র দেখা যায়। সংক্ষুব্ধ কিছু কর্মকর্তা ও কর্মচারী বিভিন্ন দপ্তরে শোডাউন দিচ্ছেন। আর আওয়ামীপন্থি সব কাউন্সিলর গা ঢাকা দিয়েছেন। মেয়র আতিকুল ইসলাম করপোরেশনে আসছেন না। শুধু বিএনপিপন্থি কাউন্সিলর সাজ্জাদ হোসেন, আকবর আলী, সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর বেগম মেহেরুন্নেছা, ইলোরা পারভীন করপোরেশনে যাতায়াত করছেন।