‘আত্মগোপনে’ থেকেই জমি বিক্রি করলেন নাঈমুল ইসলাম খান

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৯:৪০

সাংবাদিক নাঈমুল ইসলাম খান। ফাইল ছবি
গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গনঅভ্যূত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ও শেখ হাসিনার দেশত্যাগ করেন। এরপর আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মী, মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও সংসদ সদস্যরা গা ঢাকা গিয়েছেন। 'আত্মগোপনে' সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রেস সচিব নাঈমুল ইসলাম খান। ইতোমধ্যে তার বিরুদ্ধে রাজধানী ঢাকা, বগুড়া ও রংপুরে হত্যা মামলা দায়ের হয়েছে। নাঈমুল ইসলাম খান ও তার স্ত্রী-সন্তানদের ব্যাংক হিসাব স্থগিত করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আর্থিক গোয়েন্দা বিভাগ বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)।
তবে সম্প্রতি খবর মিলেছে, 'আত্মগোপনে' থাকা অবস্থাতেই জমি বিক্রি করেছেন তিনি। কুমিল্লা সদর ভূমি অফিস সূত্রে জানা গেছে, জানা গেছে, কমিশনের মাধ্যমে সাফ কবালা (জমি, ফ্ল্যাট বা প্লট কেনা-বেচা) দলিল করে জমি বিক্রি করেছেন তিনি।
কুমিল্লা সদর ভূমি অফিসের সহকারী খোসনেহার বেগম তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করে জানিয়েছে, গত বুধবার (৪ আগস্ট) ও গত রোববার তিনি কুমিল্লার কান্দিরপাড় মৌজার বাগিচাগাঁও এলাকায় জমি বিক্রি করেন। একটি অংশের পরিমাণ এক দশমিক ৭৫ শতাংশ ও অন্যটির পরিমাণ দুই শতাংশ।
তিনি আরও জানান, ঢাকার বনশ্রী এলাকার একটি বাসায় কমিশনের মাধ্যমে সাফ কবালা দলিল হয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে কুমিল্লা থেকে ঢাকায় কমিশন গিয়েছিল।
জমি দুটির গ্রহীতা রুহুল আমিন। তবে রুহুল সম্পর্কে এর বেশি তথ্য জানাতে রাজি হননি খোসনেহার বেগম।
জমি রেজিস্ট্রির দিন বনশ্রীর ওই বাসায় খোসনেহার বেগম কমিশনের সদস্য হিসেবে ও কুমিল্লা সদর ভূমি অফিসের সাবরেজিস্ট্রার দীপংকর চন্দ্র দাস উপস্থিত ছিলেন। সেই সময় উপস্থিত ছিলেন নাঈমুল ইসলাম খানও।
অপর সাবরেজিস্ট্রার লুৎফুন্নাহার লতা জানান, 'নাঈমুল ইসলাম খানের বিরুদ্ধে আইনগত বিধি-নিষেধ আছে কি না সে বিষয়ে কোনো কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে আমরা চিঠি পাইনি।'
এর আগে গত ২৫ আগস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রেস সচিব নাঈমুল ইসলাম খান ও তার স্ত্রী-সন্তানদের ব্যাংক হিসাব স্থগিত করে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আর্থিক গোয়েন্দা বিভাগ বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)।
ব্যাংক হিসাব স্থগিত সংক্রান্ত বিএফআইইউর চিঠিতে বলা হয়েছে, উল্লিখিত ব্যক্তি ও তাদের ব্যক্তিমালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের নামে কোনো হিসাব পরিচালিত হয়ে থাকলে, সেই হিসাবের লেনদেন মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২-এর ২৩ (১) (গ) ধারার আওতায় ৩০ দিনের জন্য স্থগিত থাকবে। এ ছাড়া তাদের নামে কোনো লকার সুবিধা থাকলে তার ব্যবহারও ৩০ দিনের জন্য বন্ধ থাকবে।
এ ব্যাপারে কথা বলতে গতকাল বৃহস্পতিবার (৫ আগস্ট) বিকেলে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে নাঈমুল ইসলাম খানের মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।