Logo
×

Follow Us

বাংলাদেশ

হাসিনার সহযোগীদের সম্পদ অনুসন্ধানে যুক্তরাজ্যকে অনুরোধ বাংলাদেশের

Icon

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২১:২০

হাসিনার সহযোগীদের সম্পদ অনুসন্ধানে যুক্তরাজ্যকে অনুরোধ বাংলাদেশের

ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: সংগৃহীত

ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার সহযোগীদের সম্পদের খোঁজ করতে যুক্তরাজ্যকে অনুরোধ জানিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর জানিয়েছেন, হাসিনার শাসনামলে দেশের ব্যাংকিং ব্যবস্থা থেকে কমপক্ষে ২ লাখ কোটি টাকা বা ১৭০০ কোটি ডলার বিদেশে সরানোর বিষয়ে তদন্ত করছে নতুন প্রশাসন।

আজ বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) ব্রিটিশ সংবাদপত্র ফিন্যান্সিয়াল টাইমসের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে। সংবাদপত্রকে আহসান এইচ মনসুর বলেছেন, তিনি এ বিষয়ে যেসব দেশের সাহায্য চেয়েছেন, যুক্তরাজ্য তার একটি। তিনি জানান, বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষ বিশ্বাস করে, সম্পদ সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। তিনি আরও জানান, যুক্তরাষ্ট্র, সিঙ্গাপুর ও সংযুক্ত আরব আমিরাতেও এ ধরনের সম্পদ পাচার হয়ে থাকতে পারে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর বলেন, যুক্তরাজ্য সরকার খুবই সহযোগিতাপূর্ণ মনোভাব দেখিয়েছে। দেশটির হাইকমিশনার তার অফিসে গিয়েছিলেন এবং তারা ব্যাপক প্রযুক্তিগত সহায়তার প্রস্তাব দিয়েছেন। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ সরকার শেখ হাসিনার সরকারের সাবেক ভূমিমন্ত্রীর মালিকানাধীন ১৫০ মিলিয়ন পাউন্ডের সম্পত্তির অর্থের তহবিলের উৎস শনাক্ত করতে চায়। এই সম্পদ যেন পুনরুদ্ধার করা যেতে পারে, তার জন্য যুক্তরাজ্য সরকারের কাছে সাহায্য চাইবে বাংলাদেশ।

ব্রিটিশ কর্মকর্তারাও বাংলাদেশ সরকারের সাহায্য চাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তবে এ বিষয়ে তারা বিস্তারিত তথ্য জানাতে চাননি।

বাংলাদেশের নাগরিক সমাজের পাশাপাশি বিভিন্ন গোষ্ঠী দীর্ঘদিন ধরে হাসিনা ও তার সরকারের সদস্যদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ এনেছে। যদিও বাংলাদেশের কঠোর মুদ্রা নিয়ন্ত্রণ নীতি রয়েছে, যার অধীনে নাগরিকরা প্রতিবছর মাত্র কয়েক হাজার ডলার বিদেশে নিয়ে যাওয়ার সুযোগ পান। এ বিষয়ে গভর্নর বলেন, প্রধানমন্ত্রীর অজান্তে এত ব্যাপক আকারের চুরি সংঘটিত হতে পারে না। তবে এ বিষয়ে হওয়া তদন্তগুলো এখনও ‘প্রাথমিক পর্যায়ে’ রয়েছে। 

ফিন্যান্সিয়াল টাইমস বলছে, বাংলাদেশের পক্ষ থেকে আসা এসব অভিযোগ ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের নতুন লেবার সরকারের জন্য জটিল সমস্যা তৈরি করতে পারে। কারণ, ব্রিটেনের নতুন এই লেবার সরকারের সিটি মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিক শেখ হাসিনার ভাগনি। এ বিষয়ে মন্তব্যের জন্য ফিন্যান্সিয়াল টাইমসের অনুরোধের জবাব দেননি টিউলিপ। 

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নোবেল শান্তি পুরস্কারজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস এ বিষয়ে ব্রিটেনের সাহায্যের জন্য ঢাকায় যুক্তরাজ্যের হাইকমিশনারের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষ এ দেশ থেকে চুরি করা এবং বিদেশে পাচার করা অর্থ উদ্ধার করতে যাচ্ছে। এটি এ সরকারের অগ্রাধিকারগুলোর একটি।

শেখ হাসিনার দেড় দশকের শাসনকালে ভোটে কারচুপি, অধিকার লঙ্ঘন এবং ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। হাসিনার দল আওয়ামী লীগের মিত্রদের বৈদেশিক সম্পদের বিষয়টি বাংলাদেশ এবং আন্তর্জাতিকভাবে ব্যাপকভাবে চর্চিত। চলতি বছরের শুরুর দিকে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল-ইউকে বাংলাদেশের সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদের সঙ্গে যুক্ত কোম্পানির মালিকানাধীন ব্রিটিশ রিয়েল এস্টেট পোর্টফোলিওকে ‘অঘোষিত সম্পদ’-এর উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করে বলেছিল, কর্তৃপক্ষের বিষয়টি তদন্ত করা উচিত। 

চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গের অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে বাংলাদেশের এই রাজনীতিবিদের অবৈধ সম্পদের বিশাল সাম্রাজ্যের ফিরিস্তি তুলে ধরা হয়। সেখানে বলা হয়, সাইফুজ্জামান চৌধুরী যুক্তরাজ্যে প্রায় ২০০ মিলিয়ন পাউন্ড মূল্যের ৩৫০টিরও বেশি সম্পত্তি নিয়ে তিনি গড়ে তুলেছেন রিয়েল এস্টেট সাম্রাজ্য। যুক্তরাজ্যে কোম্পানি হাউসের করপোরেট অ্যাকাউন্ট, বন্ধকি চার্জ এবং এইচএম ল্যান্ড রেজিস্ট্রি লেনদেনের ওপর ভিত্তি করে ব্লুমবার্গ সাইফুজ্জামান চৌধুরীর সম্পদের এ পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছিল। 

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫