
অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। রবিবার (৩ মে) সন্ধ্যায় তাকে মুগদা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
হাসপাতালটির কভিড-১৯ বিষয়ক টিমের ফোকাল পার্সন ডা. মাহবুবুর রহমান গণমাধ্যমকে এমন তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, তার শারীরিক অবস্থা ভালো না। আমরা আইসিইউ কল করেছি। সিট পাওয়া গেলে তাকে আজকে রাতেই আইসিইউতে শিফট করা হবে।
জানা যায়, মুনতাসীর মামুন মায়ের চিকিৎসা তত্ত্বাবধানের জন্য হাসপাতালে যাতায়াত করেন। এর মধ্যে সপ্তাহখানেক আগে করোনা সন্দেহে পরীক্ষা করা হলে তার ফল নেগেটিভ এসেছিল। কিন্তু গত দুই-তিন থেকে তার বমিভাব, খাবারে অরুচি, কাশি ও শরীর দুর্বল অনুভব করায় তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ইতিহাসবিদ, সাহিত্যিক ও অধ্যাপক মুনতাসীর মামুনের জন্ম ১৯৫১ সালের ২৪ মে ঢাকার ইসলামপুরে নানার বাড়িতে। তার গ্রামের বাড়ি চাঁদপুর জেলার কচুয়া উপজেলার গুলবাহার গ্রামে। তার বাবার নাম মেজবাহ উদ্দিন খান এবং মায়ের নাম জাহানারা খান। পিতামাতার তিন পুত্রের মধ্যে তিনি জ্যেষ্ঠ। তিনি ১৯৭৫ সালে বিয়ে করেন। তার স্ত্রী ফাতেমা মামুন একজন ব্যাংক কর্মকর্তা।
বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময়ই দৈনিক বাংলা-বিচিত্রায় সাংবাদিক হিসেবে যোগ দেন মুনতাসীর মামুন। ১৯৭৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগে প্রভাষক হিসেবে যোগ দেন। বর্তমানে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগে অধ্যাপক পদে কর্মরত আছেন। এর পাশাপাশি ঢাকা শহরের অতীত ইতিহাস নিয়ে তিনি গবেষণা করেছেন। এছাড়া তিনি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তিযুদ্ধ বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ গবেষণা ইন্সটিটিউটে সাম্মানিক প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক হিসেবে ১৯৯৯-২০০২ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। কৈশোর থেকে লেখালেখির সাথে জড়িত হয়ে ১৯৬৩ সালে পাকিস্তানে বাংলা ভাষায় সেরা শিশু লেখক হিসেবে প্রেসিডেন্ট পুরস্কার লাভ করেন।
মুনতাসীর মামুনের শৈশব-কৈশোর কেটেছে চট্টগ্রামের চাঁটগায়। চট্টগ্রাম পোর্ট ট্রাস্ট প্রাইমারি ও হাইস্কুলে এবং চট্টগ্রাম কলেজে তিনি পড়াশোনা করেন। ১৯৬৮ সালে ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগে। ১৯৭২ সালে তিনি স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন এবং একই বিভাগ থেকে ১৯৮৩ সালে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। স্বাধীনতার পর ইতিহাস বিভাগ থেকে তিনিই প্রথম পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন।