অশান্ত পাহাড় পরিদর্শনে উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দল

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৯:৫২

সংঘাতে অশান্ত পাহাড় পরিদর্শনে যাচ্ছে উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দল। ছবি: সংগৃহীত
সংঘাত আর সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে দুই পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়ি ও রাঙ্গামাটি। সহিংসতায় দুই জেলায় অন্তত চারজনের মৃত্যু হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে দুই জেলায় ১৪৪ ধারা জারি করেছে প্রশাসন। আর পাহাড়ের পরিস্থিতি শান্ত করতে সবাইকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
এদিকে পরিস্থিতি সরেজমিনে দেখতে আজ শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) সরকারের উচ্চ পর্যায়ের একটি প্রতিনিধি দল সংঘাতপূর্ণ এলাকা পরিদর্শন করবে।
গতকাল শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আজ শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর নেতৃত্বে সরকারের উচ্চ পর্যায়ের একটি প্রতিনিধি দল দুই জেলা পরিদর্শনে যাচ্ছে।
প্রতিনিধি দলে থাকবেন পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা, স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা হাসান আরিফ এবং প্রধান উপদেষ্টার প্রতিরক্ষা ও জাতীয় সংহতি উন্নয়নবিষয়ক বিশেষ সহকারী লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) আব্দুল হাফিজ।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটিতে সৃষ্ট সমস্যা নিরসনে আন্তরিকভাবে কাজ করছে সরকার। ১৮ সেপ্টেম্বর জনৈক ব্যক্তিকে গণপিটুনি ও পরবর্তীকালে তার মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে চলমান হামলা, আক্রমণ ও প্রাণহানির ঘটনায় সরকার গভীরভাবে দুঃখিত এবং ব্যথিত।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, সরকারের পক্ষ থেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সব বাহিনীকে সর্বোচ্চ সংযম দেখাতে এবং পার্বত্য তিন জেলায় বসবাসকারী সব জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। সেখানে শান্তি, সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতি নিশ্চিতকরণে সরকার বদ্ধপরিকর।
আইন নিজের হাতে তুলে না নেয়া এবং ধ্বংসাত্মক কাজে লিপ্ত না হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলা হয়, আইন নিজ হাতে তুলে নেয়া এবং যেকোনো সম্পত্তি ধ্বংস করা দণ্ডনীয় ও গর্হিত অপরাধ। সহিংসতার সঙ্গে সম্পর্কিত সব ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত আর দায়ী ব্যক্তিদের বিচার নিশ্চিত করা হবে। এ লক্ষ্যে একটি শক্তিশালী তদন্ত কমিটি শিগগিরই গঠন করা হবে। আহতদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এর আগে গত বুধবার খাগড়াছড়িতে গণপিটুনির শিকার হয়ে মামুন নামে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল বের করে দীঘিনালা ডিগ্রি কলেজের শিক্ষার্থীরা। বিক্ষোভ মিছিলটি লারমা স্কয়ারের দিকে যাওয়ার সময় সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। এক পর্যায়ে লারমা স্কয়ারে দোকানপাট ও বসত বাড়িতে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা।
গত বৃহস্পতিবার রাতে খাগড়াছড়ি জেলা সদরে বুধবারের ঘটনার জেরে গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনায় মারা গেছেন ৩ জন।
এই সংঘর্ষের প্রভাব পড়েছে রাঙামাটি জেলাতেও। রাঙ্গামাটিতে শুক্রবার সকাল থেকে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ, দোকানপাট ও বাড়িঘরে ভাঙচুর এবং অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে।