ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনকে কেন্দ্র করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের পাশাপাশি দলীয় নেতা কর্মীদের দিয়ে নির্বিচারে গুলি করে মানুষ হত্যার অভিযোগ ওঠে হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে।

এ সব ঘটনায় ৫ আগস্ট থেকে এখন পর্যন্ত সারাদেশে শতাধিক মামলা হয়। যার বেশিরভাগই হত্যা মামলা। নিহত ব্যক্তিদের স্বজনদের করা এসব মামলায় ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন পেশার মানুষকে আসামি করা হয়েছে। সারাদেশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর যৌথ অভিযান চলমান রেখে একাধিক জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

অভিযোগ পাওয়া গেছে, ঢাকার মোহাম্মদপুর থানায় দায়েরকৃত একটি মামলা যার ৫৮৬১(৫)/৩ নাং- ১৪/১০৪৬, যে মামলার ৭৫ নং প্রকৃত আসামি যুবলীগকর্মী মো. টিপুকে (ডিস টিপু) গ্রেপ্তার না করে মোহাম্মদপুর বেড়িবাঁধের ইউনিক ট্রেডিং করপোরেশনের মালিক সাধারণ ব্যবসায়ী মোহাম্মদ উল্লাহ টিপুকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গত ৮ সেপ্টেম্বর তাকে গ্রেপ্তারের পর চালান দেওয়া হয়েছে বলে, তার চাচা জাফর উল্লহ নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন প্রকৃত আসামিকে আড়াল করতে এ ঘটনা ঘটানো হয়েছে। আমরা এর সঠিক বিচার চাই।

এ বিষয়ে ভুক্তভোগীর পরিবারের স্বজনেরা দাবি করেন, মোহাম্মদ উল্ল্যাহ টিপু একজন নিরাপরাধ ব্যক্তি। তিনি কোন মিস-ইনফরমেশনের কারণে গ্রেপ্তার হয়েছেন। এমন অবস্থায় আমরা এ মামলা থেকে মুক্তি চাই। আমরা বলতে চাই তিনি একজন সাধারণ ব্যবসায়ী এবং কখনো কোনো রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন না।

মোহাম্মদ উল্লাহ টিপু সম্পর্কে ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশ (ইউল্যাব) এলাকার ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়,  মোহাম্মদ উল্লাহ টিপু একজন অতি সাধারণ ব্যক্তি। তার গ্রেপ্তার তারা অনেকটা আশ্চার্য হয়েছেন বলেও জানান কয়েকজন। তারা এ মামলা থেকে মুক্তি চান টিপুর।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন যুবলীগ নেতা জানান, আমার জানা মতে যে টিপুকে ধরা হয়েছে সে আ.লীগ, যুব লীগ, কৃষক লীগ, শ্রমিক লীগসহ আওয়ামী লীগের কোনো রাজনীতির কর্মী নন। তবে অন্য একজন টিপু যে ডিস টিপু নামে পরিচিত তিনি সাবেক এমপির লোক হিসেবে কাজ করতেন বলে জানি।

মোহাম্মদপুর থানার অফিসার ইনচার্জ আলী ইফতেখার হাসান জানান, আসামি হিসাবে যে টিপুকে র‌্যাব তাদের অভিযানে গ্রেপ্তার করে থানায় হাজির করেছিল। এজাহারের সঙ্গে মিল থাকায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।

তবে যিনি গ্রেপ্তার হয়েছেন, যদি তিনি একই ব্যক্তি না হন সেক্ষেত্রে তদন্ত শেষে মামলার এজহার থেকে তার নাম বাদ দেওয়া হবে বলে জানান আলী ইফতেখার।

মোহাম্মদপুর থানায় দায়েরকৃত মামলা (৫৮৬১(৫)/৩ নাং- ১৪/১০৪৬) এর ৭৫ নং আসামি যুবলীগ কর্মী মো. টিপু ও মোহাম্মদ উল্লাহ টিপুর বিষয়ে কথা বলেছেন মামলার বাদী মো. রফিকুল ইসলাম।

তিনি বলেন.. যাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তাকে ব্যক্তিগতভাবে চিনি না। ঘটনাস্থলে তিনি ছিলেন কিনা তাও সঠিকভাবে আমি বলতে পারি না। আমি মামলার দিন স্থানীয় কিছু রাজনৈতিক ব্যক্তি আমাকে মামলা করার বিষয়ে সাহায্য করেন। তারা যাদের নাম দিয়েছেন আমি তাকে শুধু স্বাক্ষর করেছি।

 টিপু নামে যাকে আটক করা হয়েছে তিনিই যে আমার ভাইয়ের হত্যার সাথে জড়িত ছিল এ বিষয় আমি নিশ্চিত করিনি, উল্লেখ করে বাদী রফিকুল বলেন, আমার চাওয়া কোন নির্দোষ ব্যক্তি যেন হয়রানি না হয়। আমার ভাই মারা গেছে। তার ১৪ মাসের ছোট বাচ্চা আছে। আমি এখন সঠিক বিচার চাই এবং ক্ষতিপূরণ চাই। আমার ভাইয়ের ছোট বাচ্চার ভবিষ্যত যেন নষ্ট না হয়।