Logo
×

Follow Us

বাংলাদেশ

ডিসি নিয়োগে ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগ তদন্তে ৩ উপদেষ্টা

Icon

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৩ অক্টোবর ২০২৪, ১৮:৪৭

ডিসি নিয়োগে ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগ তদন্তে ৩ উপদেষ্টা

তিন উপদেষ্টা। ছবি: সংগৃহীত

ডিসি নিয়োগে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবের বিরুদ্ধে ওঠা ঘুষের অভিযোগ তদন্তে তিন উপদেষ্টাকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তারা হলেন- ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম, আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল এবং স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। 

আজ বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়। 

ডিসি নিয়োগে ঘুষ লেনদেনের অভিযোগ সরকার তদন্ত করবে কি না? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের  উপদেষ্টা বলেন, ‘অবশ্যই আমরা এটার তদন্ত করব, সরকার (তদন্ত) করবে। 

মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ জানিয়েছেন, জনপ্রশাসন সচিবের বিরুদ্ধে আসা সংবাদ নিয়ে সরকার তদন্ত করবে। ম্যাসেজগুলো এআই দিয়ে তৈরী করা কি না, তা নিয়ে তদন্ত হচ্ছে, জানার পর পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে। সরকার এ বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখছে।

উপদেষ্টা বলেন, ‘অত্যন্ত দায়িত্বশীল জায়গায় প্রতিষ্ঠিত কর্মকর্তাদের কোনো ধরনের দায়িত্বহীনতা মেনে নেয়া যাবে না। এটাও আমাদের অনুশাসনের অধীনে আনতে হবে।’

তিনি বলেন, ইতোমধ্যে এ বিষয়ে তিনজন উপদেষ্টাকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে, তারা হলেন- ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা, আইন উপদেষ্টা এবং স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। এই তিনজনের কথা বলা হয়েছে, এর মানে এই নয়, অন্যরা এতে যুক্ত হতে পারবেন না। একটি কমিটি করে এটা তদন্ত করা হবে।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, ‘একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাকে নিয়ে এ রকম কথা। এটি নিয়ে অবশ্যই আমরা উদ্বিগ্ন। এ কথাটা (ঘুষ লেনদেনের অভিযোগ) কেন উঠল, এটার সূত্র কী, এটার কারণ কী- সেটা তলিয়ে (খতিয়ে) দেখতে হবে। আমরা তো এখন এনালগ যুগে নেই, এজন্য আমাদের বাড়তি কষ্টটা হচ্ছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় যেটাই আসছে, আমরা লাফ দিয়ে ধরে নিতে পারছি না- এটাই সত্য। আমাদের এটাকে যাচাই করতে হয়।’

ক্ষমতার পটপরিবর্তানের পর মাঠ প্রশাসনেও ব্যাপক রদবদল আনে অন্তর্বর্তী সরকার। এর ধারাবাহিকতায় ৫৯ জেলায় নতুন কর্মকর্তাদের জেলা প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়।

কিন্তু ১০ সেপ্টেম্বর সচিবালয়ে দিনভর হট্টগোল করেন আগের সরকারের আমলে ‘বঞ্চিত’ উপসচিবরা; শেষ পর্যন্ত প্রজ্ঞাপন বাতিলের আশ্বাসে তারা মন্ত্রিপরিষদ সচিবের কার্যালয় ত্যাগ করেন।

নতুন দায়িত্ব পাওয়া ৫৯ জন জেলা প্রশাসকের মধ্যে আটজনকে পরদিনই প্রত্যাহার করে নেয় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। সেই সঙ্গে চার জনের কর্মস্থল বদলে দেওয়া হয়। আর একজন উপসচিবকে করা হয় ওএসডি। হট্টগোলের ঘটনা তদন্তে গঠন করা হয় কমিটি।

এর মধ্যে এক যুগ্ম সচিবের কক্ষ থেকে তিন কোটি টাকার একটি চেক এবং ডিসি নিয়োগ সংক্রান্ত কিছু চিরকুট উদ্ধারের খবর দিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করে একটি জাতীয় দৈনিক। সেই প্রতিবেদন নিয়ে তোলপাড় তৈরি হলে নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। ঘটনা তদন্তে একটি কমিটি গঠন করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।

তবে গত ৩০ সেপ্টেম্বর সংবাদ সম্মেলন ডেকে জাতীয় দৈনিকের ওই প্রতিবেদনকে ‘গুজব’, ‘সম্পূর্ণ ভুয়া’ এবং ‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ আখ্যায়িত করেন জনপ্রশাসন সচিব মোখলেস উর রহমান।

এরপর বৃহস্পতিবারের প্রতিবেদনে মোখলেস উর রহমানের বিরুদ্ধেই আর্থিক লেনদেন নিয়ে আলোচনার অভিযোগ তুলে ধরে জাতীয় দৈনিকটি।

প্রতিবেদনে লেখা হয়েছে, একটি মেসেজে সচিব নিজেকে ‘নির্লোভ’ দাবি করে মাত্র ৫ কোটির একটি আবদার করেন। জিয়া (যুগ্ম সচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ) তাকে সুখবর দিয়ে বলেন ১০ কোটি রাখার কথা। এতে সন্তুষ্ট হয়ে সচিব তাকে বলেন, ‘আচ্ছা ঠিক আছে, তোমার যেটা ভালো মনে হয়।’ তবে টাকা-পয়সার প্রতি নিজের তেমন লোভ নেই বলেও জিয়াকে জানান সচিব।

এ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে জনপ্রশাসন সচিব মো. মোখলেস উর রহমান বলেন, যারা এটা করেছে তাদেরকে আমরা কতটুকু গুরুত্ব দেব? একটা রাস্তার লোক আমাকে অনেক কিছু বলতে পারে, আমি কি রাস্তার লোকের পেছনে দৌঁড়াব?

‘আমরা সরকারের পজিশনে থেকে জনগণের স্বার্থে কাজ করি। যেভাবে আছি সেভাবেই কাজ করব। যতদিন আল্লাহ হায়াতে রেখেছে নিয়ম অনুযায়ী কাজ করব।’

অভিযোগের বিষয়ে কোনো তদন্ত কমিটি হবে কিনা জানতে চাইলে মোখলেস উর রহমান বলেন, এই অভিযোগকারী আমার বিবেচনায় নেই এবং এই অভিযোগকে আমি মূল্যহীন মনে করি। ইটস আ ফেইক নিউজ।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫