Logo
×

Follow Us

বাংলাদেশ

সাবেক সমাজকল্যাণ মন্ত্রীসহ ৭ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

Icon

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২০ অক্টোবর ২০২৪, ২০:০৪

সাবেক সমাজকল্যাণ মন্ত্রীসহ ৭ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

মহানগর দায়রা জজ আদালত। ছবি: সংগৃহীত

গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যসহ সাতজনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে আদালত।

আজ রবিবার (২০ অক্টোবর) দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আলাদা আবেদনে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক ইব্রাহিম মিয়া এ আদেশ দেন।

দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া ব্যক্তিরা হলেন সাবেক সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ ও তার স্ত্রী মোছা. হোসনে আরা বেগম, সাবেক সংসদ সদস্য ইকবালুর রহিম ও তার স্ত্রী নাদিরা সুলতানা মুক্তি, শিল্পকলা একাডেমির সাবেক মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী, রংধনু গ্রুপের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম ও নোমান গ্রুপের চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম।

দুদকের পক্ষে আইনজীবী মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর বলেন, তাদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে পাঁচটি আলাদা আবেদন করা হয়। পরে আদালত শুনানি শেষে আদেশ দেন।

সাবেক মন্ত্রী নুরুজ্জামান ও তার স্ত্রীর দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদন করেন দুদকের সহকারী পরিচালক জাফর সাদেক শিবলী।

আবেদনে বলা হয়েছে, নুরুজ্জামানের বিরুদ্ধে নিজ নামে ও পরিবারের সদস্যদের নামে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ বর্তমানে অনুসন্ধান চলছে। অনিয়মের অভিযোগের মধ্যে রয়েছে-নিয়োগ বাণিজ্য, সরকারি অনুদানের টাকা হাতিয়ে নেওয়া, কোভিড মহামারীর সময় ভুয়া প্রশিক্ষণ বিল উত্তোলন, ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে টিআরসহ বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের সরকারি অর্থ আত্মসাৎ করা।

অনুসন্ধানকালে দুদক জানতে পেরেছে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বিদেশে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। তারা বিদেশে পালিয়ে গেলে অনুসন্ধান কার্যক্রম দীর্ঘায়িত বা ব্যাহত হওয়ার সম্ভাবনা থাকায় নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার আবেদন করা হয়।

এদিন সাবেক সংসদ সদস্য ইকবালুর ও তার স্ত্রী নাদিরা সুলতানা মুক্তির দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদন করেন দুদকের সহকারী পরিচালক মো. সহিদুর রহমান।

আবেদনে বলা হয়েছে, ক্ষমতার অপব্যবহার, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে সাবেক এই সংসদ সদস্য সরকারি অর্থ আত্মসাৎ করে নিজ নামে ও পরিবারের সদস্যদের নামে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। অভিযোগগুলোর অনুসন্ধান কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা দেশ ছেড়ে বিদেশে পালিয়ে যাওয়ার তথ্য থাকায় সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে তাদের বিদেশ যাওয়া বন্ধে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া প্রয়োজন। পরে শুনানি শেষে আদালত আদেশ দেন।

বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির সাবেক মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকীর দেশত্যাগেও নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে আদালত।

এদিন দুদকের সহকারী পরিচালক আফনান জান্নাত কেয়া তার দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদনে লাকীর বিরুদ্ধে ঘুষ গ্রহণ, নিয়োগ বাণিজ্য, ক্ষমতার অপব্যবহার, বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতিসহ বিল ভাউয়ারের মাধ্যমে শত কোটি টাকা আত্মাসাতের বিপুল পরিমাণ অর্থ বিদেশে পাচারের অভিযোগ তুলে ধরেন।

এ অভিযোগ তদন্তে চার সদস্যের অনুসন্ধান দলের কার্যক্রম চলমান থাকার কথা তুলে ধরে আবেদনে বলা হয়, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বিদেশে পালিয়ে যেতে পারেন। অভিযোগের সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে তার দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া প্রয়োজন।

এদিন রংধনু গ্রুপের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলামের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে আদালত, যার বিরুদ্ধে ২৭০ কোটি টাকা ঋণ গ্রহণের আত্মসাতের অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক।

দুদকের উপপরিচালক নূর-ই-আলম রংধনু গ্রুপের চেয়ারম্যানের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদন করেন।

এতে বলা হয়, রফিকুল ইসলাম ও অন্যান্যদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক কর্মকর্তাদের যোগসাজশে জাল-জালিয়াতি ও প্রতারণার মাধ্যমে আগে কেনা জমি বন্ধক দিয়ে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড, বসুন্ধরা শাখা থেকে ২৭০ কোটি টাকা ঋণ গ্রহণ করে আত্মসাতের অভিযোগ অনুসন্ধান রয়েছে।

অনুসন্ধানকালে জানা গেছে, রফিকুল ইসলাম যেকোনো সময় দেশ থেকে পালিয়ে বিদেশে চলে যেতে পারেন। অনুসন্ধানকালে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করা না গেলে অভিযোগ প্রমাণ করা কঠিন হবে বলে তার দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা প্রয়োজন।

এদিন নোমান গ্রুপের চেয়ারম্যান নুরুল ইসলামেরও দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার আবেদন করেন দুদকের সহকারী পরিচালক সহিদুর রহমান।

আবেদনে বলা হয়, নুরল ইসলামের বিরুদ্ধে একাধিক ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে জালিয়াতি ও প্রতারণার মাধ্যমে ঋণ নিয়ে সাত হাজার কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধানাধীন রয়েছে। এটি রাষ্ট্রের স্বার্থে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বিদেশে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন বলে অনুসন্ধানকালে জানা গেছে। তিনি বিদেশে পালিয়ে গেলে অনুসন্ধান দীর্ঘায়িত বা ব্যাহত হওয়ার সম্ভাবনা থাকায় নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার আবেদন করা হয়।


Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫