জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) প্রাক্তন শিক্ষার্থী রাহিব রেজার মৃত্যুর জন্য ডা. মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীলকে দায়ী করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তদন্ত প্রতিবেদনে জানা যায়, পরীক্ষা নিরীক্ষা ছাড়াই রাহিবের এন্ডোসকপি করা হয়। চেতনানাশক প্রয়োগের পর পর্যবেক্ষণ ও তদারকির জন্য কেউ ছিল না তাঁর পাশে। এমনকি ওই দিন একজন চিকিৎসকের অধীনে ৬৭টি এন্ডোসকপি করা হয়। 

তদন্ত প্রতিবেদনে রাহিবের চিকিৎসায় এ রকম ছোট-বড় ১৩ ত্রুটি উঠে এসেছে বলে জানিয়েছেন রাহিবের পরিবারের আইনজীবী। 

তদন্ত কর্মকর্তারা অভিযুক্ত চিকিৎসকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল (বিএমডিসি) ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) কর্তৃপক্ষকে অভিযুক্ত চিকিৎসকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে চিঠি দেয়।

তবে এখনও কোনো ধরনের ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি। ডা. স্বপ্নীল বিএসএমএমইউর ইন্টারভেনশনাল হেপাটোলজি বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান।  

উল্লেখ্য, গত ফেব্রুয়ারিতে রাজধানীর ধানমন্ডির ল্যাবএইড হাসপাতালে এন্ডোসকপি করাতে গিয়ে রাহিবের মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় ডা. স্বপ্নীলের নিবন্ধন বাতিল ও ল্যাবএইডের কাছে ক্ষতিপূরণ চেয়ে ভুক্তভোগীর পরিবার মামলা করে।

১৫ ফেব্রুয়ারি পেটে গ্যাসজনিত সমস্যা নিয়ে ডা. স্বপ্নীলের কাছে গেলে তিনি রেজাকে এন্ডোস্কপি করার পরামর্শ দেন। পরে ল্যাবএইড হাসপাতালের বহির্বিভাগে গেলে কয়েক ঘণ্টা অপেক্ষার পর তাঁর পরীক্ষা শুরু হয়। প্রায় দেড় ঘণ্টা পর রোগীকে মুমূর্ষু অবস্থায় দেখতে পান পরিবারের সদস্যরা। এ সময় শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে ল্যাবএইডের আইসিইউতে নেওয়া হয়। তিন দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা।

এ ঘটনায় রাহিবের পরিবার আদালতের শরণাপন্ন হলে গত ১১ মার্চ আদালত রুল জারি করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও মন্ত্রণালয়কে তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশ দেন।

অবশেষে ছয় মাস সময় পর গত ১৯ সেপ্টেম্বর আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করে কমিটি। এতে চিকিৎসায় গুরুতর অবহেলার প্রমাণ পাওয়ার কথা জানিয়েছে কমিটি।