অপরাধী পুলিশ সদস্যদের শাস্তি চায় ৭১.৫ শতাংশ মানুষ

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৫:৪১

বাংলাদেশ পুলিশের লোগো। ফাইল ছবি
বিরোধী মত দমনে মাত্রাতিরিক্ত বল প্রয়োগ করে মানবাধিকার লঙ্ঘন ফৌজদারি অপরাধ বিবেচনায় সংশ্লিষ্ট পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে ৭১.৫ শতাংশ মানুষ শাস্তি চেয়েছে।
আজ মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ বিভাগ সূত্রে ‘কেমন পুলিশ চাই’ শীর্ষক জরিপের ফলাফল বিশ্লেষণে এমন চিত্র উঠে এসেছে।
জরিপের ফলাফল বিশ্লেষণে দেখা গেছে, বিক্ষোভ মিছিল মোকাবিলা ও বিরোধী দলমত দমনে মাত্রাতিরিক্ত বল প্রয়োগ করে মানবাধিকার লঙ্ঘন ফৌজদারি অপরাধ বিবেচনায় সংশ্লিষ্ট পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে ৭১.৫ শতাংশ উত্তরদাতা শাস্তি চায়। অন্যদিকে ৬৮.৮ শতাংশ উত্তরদাতা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার নির্দেশনা অন্তর্ভুক্ত করে প্রতিস্থাপিত প্রমিত পদ্ধতি অনুসরণকে প্রবিধানভূক্ত করার পক্ষে মত দিয়েছেন। তাছাড়া মানবাধিকারের প্রতি শ্রদ্ধাশীল ও অনুগত পুলিশ সদস্যকে উৎসাহিত করতে বার্ষিক কর্ম-মূল্যায়নে পুরষ্কার ও তিরস্কারের ব্যবস্থা রাখার পক্ষে ৬৮.২৭ শতাংশ সমর্থন করেছেন।
ফলাফল বিশ্লেষণে দেখা গেছে, সভা-সমাবেশ আয়োজনে মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনের পূর্বানুমতি গ্রহণকে মৌলিক অধিকার পরিপন্থী মনে করেন ৫১.৮ শতাংশ উত্তরদাতা। অন্যদিকে প্রত্যয়টির সাথে সম্পূর্ণ একমত নন ৩৭.৪ শতাংশ। ১০.৮ শতাংশ উত্তরদাতা এ বিষয়ে অনিশ্চিত বা দ্বিধান্বিত। একটি বিষয় স্পষ্ট যে সংবিধানের ৩৭নং অনুচ্ছেদে সভা-সমাবেশ আয়োজন মতপ্রকাশের মৌলিক অধিকার স্বীকৃত হয়েছে। তবে ঢাকা মেট্রোপলিটন আইন ১৯৭৬ এর ২৯ নং ধারা অনুযায়ী পুলিশ কমিশনারকে অনুরুপ সমাবেশ জনস্বার্থে সর্ব্বোচ্চ ৩০ দিন স্থগিত করার ক্ষমতা দেয়া হয়েছে। কিন্তু আয়োজনে পূর্বানুমতি গ্রহণের বিষয়টি সেখানে উল্লেখ নেই। দেশে গণতান্ত্রিক পরিবেশ বিকাশে ৭১.২ ভাগ উত্তরদাতা বিধানটির পরিবর্তন চান।
জরিপে আরও দেখা গেছে, উত্তরদাতাদের শতকরা ৮২.৫ শতাংশ ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৪ ধারা বিধানকে সহজে অপব্যবহারযোগ্য আইনের বিধান মনে করেন। উত্তরদাতাদের ৪৬.২ শতাংশ ধারাটি যুগোপযোগী সংস্কার চান। ঔপনিবেশিক আমলে প্রণীত ৫৪ ধারায় বিধান যুগোপযোগী করার অর্থ গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ সমুন্নত রেখে বিজ্ঞানসম্মত জীবনযাত্রার সুফলযুক্ত ব্যবস্থা। এক্ষেত্রে ৩৯.৭ শতাংশ উচ্চ আদালতের সুপারিশমতে ৫৪ ধারায় বিধান সংশোধনের পক্ষে মত দিয়েছেন।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এই জরিপে অংশ নিয়েছেন ২৪ হাজার ৪৪২ জন৷ এদের মধ্যে ১৮ থেকে ৪৪ বছরের ব্যক্তিদের অংশগ্রহণের হার ৮৬.৬ শতাংশ। উত্তরদাতাদের মধ্যে চাকরিজীবী ৩৬.৪ শতাংশ, ছাত্র ২৭.২ শতাংশ, ব্যবসায়ী ৭.৬ শতাংশ। এসব উত্তরদাতাদের সর্বাধিক ঢাকা জেলা এবং পরবর্তী অবস্থানে রয়েছে চট্টগ্রাম ও কুমিল্লা।