রাজধানীর মোহাম্মদপুরের নুরজাহান রোডে দেড় কাঠা জমিতে নির্মাণ করা হচ্ছে চার তলা ভবন। এই ভবনটির কোনো অনুমোদন রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) থেকে নেওয়া হয়নি। নির্মাণ সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, রাজউকের মৌখিক সম্মতিতে ভবন নির্মাণ করছেন মালিক। এক্ষেত্রে রাজউকের জোনাল অফিসকে দিতে হয়েছে ঘুষ।

মোহাম্মদপুরের আর/২৫/এ, নূরজাহান রোডের ব্লক ডি’র প্লটটির মালিক কথিত মুক্তিযোদ্ধা রফিক উদ্দিন পাটোয়ারী। তিনি বেশ কয়েকবছর আগে মারা গেলেও নির্মাণাধীন বাড়ির সামনে ঝুলছে তার নামফলক।

মুক্তিযোদ্ধার মৃত্যুর পর অবৈধ এই বাড়ি নির্মাণের কাজ দেখাশোনা করছেন তার মেয়ে ফাতেমা ইসলাম ও জামাতা কামরুল ইসলাম।

অনুমোদনহীন আবাসিক ভবন নির্মাণের পাশাপাশি গ্যারেজের জায়গায় কমার্শিয়াল স্পেস হিসেবে তিনটি দোকানও নির্মাণ করা হয়েছে।

নুরজাহান রোডের বাসিন্দা বখতিয়ার ইসলাম বলেন, কামরুল ইসলাম স্থানীয় হিসেবে প্রভাব খাটাচ্ছেন। তিনি মুক্তিযোদ্ধা ও আওয়ামী লীগের নাম ভাঙিয়ে আইনের তোয়াক্কা না করে ভবন নির্মাণ করেছেন।

স্থানীয় এক দোকানদার নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, অনুমতি ছাড়া ঝুঁকিপূর্ণভাবে ভবন নির্মাণ হচ্ছে। এটি দেখার যেন কেউ নেই।

ভবন নির্মাণের বিষয়ে এই প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা হয় কামরুল ইসলামের সঙ্গে। ভবন নির্মাণের অনুমোদন বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কাগজপত্র আছে। আইন মেনেই ভবন নির্মাণ করছি।

ভবন নির্মাণের অনুমোদনপত্র দেখানো যাবে কি না, জানতে চাইলে অসহযোগিতা করেন কামরুল ইসলাম। তিনি বলেন, আমার কাগজপত্র আপনাকে কেন দেখাব?

ভবনটির বিষয়ে কথা হয় ভবনের উত্তরাধিকার ফাতেমা ইসলামের সঙ্গে, যিনি কথিত মুক্তিযোদ্ধা রফিক উদ্দিন পাটোয়ারীর একমাত্র মেয়ে। তিনি বলেন, রাজউকের কাগজপত্র কোথায় আছে খুঁজে দেখতে হবে।

আবাসিক ভবনে কমার্শিয়াল স্পেস নির্মাণের বিষয়ে তিনি বলেন, জমির পরিমাণ কম। সবাই যেভাবে বাড়ি বানায় আমরাও সেভাবে বানাচ্ছি। আমাদের দোকানের কোনো অনুমোদন নেই। দোকান ভাড়া দিলে কিছু টাকা-পয়সা আসবে তাই বানাচ্ছি।

ইমারত বিধিমালা না মেনে ভবন নির্মাণ প্রসঙ্গে ফাতেমা ইসলাম বলেন, আমরা রাজউককে ম্যানেজ করেছি। এখন তো অসুবিধা হওয়ার কথা না।

জানতে চাইলে সংশ্লিষ্ট জোনের অথোরাইজড অফিসার আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ইমারত বিধিমালা অনুযায়ী অনুমোদনহীন ভবন বা কমার্শিয়াল স্পেস করার সুযোগ নেই। কেউ আইনের ব্যত্যয় ঘটালে রাজউক বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে। 

নির্মাণাধীন ভবনটির বিষয়ে খোঁজ-খবর নেওয়া হবে বলেও জানান অথরাইজড অফিসার।