
সংবাদ সম্মেলন করছে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা। ছবি: সংগৃহীত
গত ১৭ বছর ধরে ‘অন্যায়ভাবে’ জেলে আটক থাকা বিডিআর সদস্যদের মুক্তি, বিডিআর হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্তসহ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে ৬ দফা দাবি জানিয়েছে জাস্টিস ফর বিডিআর নামের একটি প্লাটফর্ম।
আজ রবিবার (১৯ জানুয়ারি) রাত পৌনে ৮টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনের সামনে এক সংবাদ সম্মেলনে এমন দাবি জানান বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক মাহিন সরকার।
মাহিন সরকার বলেন, গত ১৭ বছর ধরে বিডিআর জওয়ানদের ন্যায়বিচার পেতে দেওয়া হয়নি। আমরা চাই, এই নতুন বাংলাদেশ বিচার ব্যবস্থাকে স্বাধীন রাখবে।
তিনি আরও বলেন, আমি সরকারের কাছে প্রশ্ন রাখতে চাই, ৫ আগস্টের পরপরই কি তাদের মুক্তি দেওয়া সম্ভব ছিল না? আজকে আমরা তাদের মুক্তিসহ ৬ দফা দাবি সরকারের কাছে রেখে যাচ্ছি। দাবিগুলো আগামী ৩০ জানুয়ারির মধ্যে মেনে না নেওয়া হলে রাজপথে এর সমাধান করা হবে।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক মাহমুদা হৃদি বলেন, আজকে ২৫৬ জনকে মুক্ত করা হয়েছে। বিডিআর বিদ্রোহ নিয়ে আমাদের তৎপরতা চালিয়ে যাব। যতদিন পর্যন্ত এর সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার সম্পন্ন না হয় ততদিন আমরা থামব না।
বিডিআর বিদ্রোহ নিয়ে কাজ করে যাওয়া ব্যারিস্টার পারভেজ হোসেন বলেন, আজকে অনেক ভালো লাগছে। দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ থাকা দরজা এখন উন্মুক্ত হয়েছে। এই হত্যাকাণ্ডে কী পরিমাণ ষড়যন্ত্র ছিল তা বলার বাইরে। সেদিন দরবার হলে এত বড় ঘটনা ঘটল যা গোয়েন্দা সংস্থা জানতই না। মূলত এই হত্যাকাণ্ড হয়েছিল সরকারি নির্দেশনাতেই। ফলে সঠিকভাবে তদন্ত হয়নি এবং মূল পরিকল্পনাকারীরা ধরাছোঁয়ার বাইরে ছিল।
তাদের দাবিসমূহ-
১. খুনি হাসিনার ষড়যন্ত্রমূলক মামলার রায় বাতিল করে আগামী ৩০ জানুয়ারির কর্ম দিবসের মধ্যে ঢালাওভাবে আটককৃত বিডিআর সদস্যদের সিআরপিসি ৪০১ ধারায় মুক্তি দিতে হবে। সেক্ষেত্রে প্রয়োজনে সংবিধানের ৪৯ অনুচ্ছেদ প্রয়োগ হতে পারে। নিরপেক্ষ ও স্বাধীন তদন্ত শেষে যারা অপরাধী চিহ্নিত হবে তাদের পুনর্বিচার করতে হবে।
২. গঠিত কমিশন স্বাধীন ও নিরপেক্ষভাবে কাজ করার জন্য প্রজ্ঞাপনে উল্লিখিত ব্যতীত শব্দ এবং কার্যপরিধি ২ এর (ঙ) নং ধারা বাদ দিতে হবে। ঘটনাস্থলে উপস্থিত এবং ষড়যন্ত্রের শিকার (জেলবন্দি কিন্তু বাইরে আছেন) দেশপ্রেমিক বিডিআর সদস্যদের কমিশনে যুক্ত করতে হবে।
৩. পিলখানার ভেতরে এবং বাইরে শহীদ হওয়া ৭৪ জনের হত্যাকারীর বিচার নিশ্চিত করতে হবে। জেলের ভেতর মারা যাওয়া প্রত্যেক বিডিআর সদস্যের মৃত্যুর সঠিক কারণ উন্মোচন করতে হবে। অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়ে থাকলে দায়ী সবাইকে বিচারের আওতায় আনতে হবে।
৪. স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্ত সাপেক্ষে নির্দোষ প্রমাণিত সব বিডিআর সদস্যকে চাকরিতে পুনর্বহাল করতে হবে এবং ক্ষতিপূরণ ও রাষ্ট্রীয় সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে।
৫. বিজিবি আইন ২০১০ বাতিল করে পূর্বের বিডিআর আইন পুনর্বহাল করতে হবে। ২৪-এর গণঅভ্যুত্থানে নেতিবাচক ভূমিকা পালন করা বিজিবির নামকে পরিবর্তন করে বিডিআর নাম ফিরিয়ে আনতে হবে।
৬. পিলখানার ভেতরে এবং বাইরে সব শহীদের স্মরণে জাতীয় দিবস চালু করতে হবে।