কক্সবাজারে স্থানীয়দের সঙ্গে বিমান বাহিনীর সদস্যদের সংঘর্ষের ঘটনায় ব্যাখ্যা দিয়েছে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)। যে যুবক নিহত হয়েছেন, তাকে বিমান বাহিনীর সদস্যরা গুলি করেননি বলে এতে উল্লেখ করা হয়েছে।

সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে আইএসপিআর থেকে সংবাদ মাধ্যমের কাছে বিজ্ঞপ্তিটি পাঠানো হয়।

এতে লেখা হয়, রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা রক্ষায় বিমান বাহিনীর সদস্যরা বাহিনীর বিধি অনুযায়ী ফাঁকা গুলি ছোড়ে।

“তবে স্থানীয় জনসাধারণের ওপর কোনো প্রকার তাজা গুলি ছোড়া হয়নি।”

শিহাব কবির নাহিদ নামে ৩০ বছর বয়সী যুবকের মৃত্যুর বিষয়ে আইএসপিআর লিখেছে, “একটি ‘কুচক্রীমহল’ বিমান বাহিনীর ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতে সামাজিক মাধ্যমে বিমান বাহিনীর গুলিতে উক্ত যুবক নিহত হয়েছে বলে বিভিন্ন অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে, যা সত্যি নয়।

“এক্ষেত্রে প্রচারিত গুলির খোসার ছবিটি পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যায় যে, উক্ত খোসাটি ফাঁকা গুলির যা প্রাণঘাতি নয় এবং শুধু শব্দ তৈরি করে।”

শিহাব কবিরের মৃত্যুর ঘটনায় ‘বিমান বাহিনী গভীর শোক ও পরিবারের প্রতি সহমর্মিতা প্রকাশ করছে’ বলেও লেখা হয় বিজ্ঞপ্তিতে।

সংঘাতের বিষয়ে আইএসপিআর লিখেছে, “কতিপয় কুচক্রী মহলের ইন্ধনে ‘দুর্বৃত্তরা’ বাহিনীর সদস্যদের ওপর ইট-পাটকেল ছোড়ে।”

“দুর্বৃত্তদের ছোড়া ইটপাটকেলের আঘাতে কয়েকজন আহত হন যার মধ্যে বিমান বাহিনীর ৪ জন সদস্য (১ জন অফিসার ও ৩ জন বিমানসেনা) আঘাতপ্রাপ্ত হন এবং শিহাব কবির নাহিদ নামের এক যুবককে গুরুতর আহত অবস্থায় বিমান বাহিনীর গাড়িতে করে স্থানীয় হাসপাতালে নেয়ার পর মৃত্যুবরণ করেন।”

আইএসপিআরের ভাষ্য, কক্সবাজার সংলগ্ন সমিতি পাড়ার কিছু স্থানীয় ‘দুর্বৃত্ত’ বিমান বাহিনী ঘাঁটি কক্সবাজারের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। স্থানীয় লোকের মোটরসাইকেলের কাগজপত্র না থাকায় তাকে বিয়াম স্কুলের পাশে তল্লাশি চৌকি থেকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ঘাঁটির ভেতরে নিয়ে যাওয়া হয়।

এ সময় সমিতি পাড়ার দুই শতাধিকেরও বেশি স্থানীয় লোকজন ঘাঁটির দিকে অগ্রসর হলে বিমান বাহিনীর সদস্যরা তাদের বাধা দেয়।

স্থানীয়দের সংখ্যা বাড়তে থাকলে বিমান বাহিনীর সদস্য ও সমিতি পাড়ার ‘কতিপয় দুষ্কৃতকারী’র মধ্যে সংঘর্ষ হয়।

বিমান বাহিনীর আহত সদস্যরা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন জানিয়ে আইএসপিআরের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “স্থানীয় জনগণের ইটপাটকেলের আঘাতে বিমানবাহিনীর গাড়ির কাচ ভেঙে যায়। এছাড়াও স্থানীয় জনগণ ঝোপঝাড়ে আগুন দেওয়ার চেষ্টা করেছিল যা পরবর্তীতে বেশি সম্প্রসারিত হয়নি।”

সংবাদ মাধ্যম ও সামাজিক মাধ্যমের ভুল তথ্য ছড়ানো হচ্ছে উল্লেখ করে আইএসপিআর বলেছে, কিছু অনলাইন নিউজ পোর্টাল ও সামাজিক মাধ্যমে ঘাঁটির নাম ‘শেখ হাসিনা’ হিসেবে উল্লেখ করা হলেও তা সত্য নয়। ২০২১ সালের ২ ডিসেম্বর সরকারি প্রজ্ঞাপনে এর নাম বিমান বাহিনী ঘাঁটি কক্সবাজার রাখা হয়, যা বর্তমানেও বহাল রয়েছে।

বাংলাদেশ বিমান বাহিনী দেশের আকাশসীমা রক্ষার পাশাপাশি দেশের সার্বিক পরিস্থিতি মোকাবিলায় দেশের আপামর জনসাধারণের সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে এবং ভবিষ্যতেও বিমান বাহিনী দেশের মানুষের কল্যাণে সর্বদা সচেষ্ট থাকবে বলেও উল্লেখ করা হয় বিজ্ঞপ্তিতে।

এতে লেখা হয়, “দেশের জনগণের জানমাল ও নিরাপত্তা রক্ষার্থে বাংলাদেশ বিমান বাহিনী সর্বদা অঙ্গীকারাবদ্ধ।”