দেশব্যাপী হত্যা, ধর্ষণ, নিপীড়নের বিচার এবং স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার অপসারণের দাবিতে বামপন্থী আটটি সংগঠন আজ গণমিছিলের কর্মসূচি ডাকে। সংগঠনগুলো হলো- বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, বাংলাদেশ যুব ইউনিয়ন, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ-বিসিএল, পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ, বাংলাদেশ উদিচী শিল্পীগোষ্ঠী, চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র, কেন্দ্রীয় খেলাঘর আসর, সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরাম, বাংলাদেশ ক্ষেতমজুর সমিতি ও বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র (টিইউসি)।

পাল্টা কর্মসূচি হিসেবে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) কার্যালয়কে ‘ছাত্র-জনতার কার্যালয়’ বানানোর ডাক দেন লেখক ও অনলাইন অ্যাকটিভিস্ট পিনাকী ভট্টাচার্য। গতরাতে নিজের ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে পিনাকী বলেন, শনিবারের এই কর্মসূচিটা সিপিবির এমএম আকাশ-রুহিন হোসেন প্রিন্সদের ফ্রাকশনের সংগঠনগুলো মিলে, সাথে বাসদ (বজলুর রশীদ ফিরোজ) এবং জনসংহতি সমিতিকে (সন্তু লারমা) নিয়ে আয়োজন করেছে। সম্মুখে রাখছে লাকী আক্তারকে। আমরা গণঅভ্যুত্থানের পক্ষের শক্তিগুলো মিলে সকাল সাড়ে ১০টায় পুরানা পল্টনে সিপিবি অফিসের সামনে শান্তিপূর্ণভাবে ঘেরাও করব এবং গত ১৫ বছর হাসিনার দালালীর এবং গণজাগরণ মঞ্চে অংশগ্রহণের জন্য গণজবাবদিহিতা চাইব।

ফেসবুকে পিনাকীর এমন ঘোষণা ঘিরে সকাল থেকে সিপিবি কার্যালয়ের সামনে উত্তেজনা বিরাজ করছে। সকাল সাড়ে ১০টার পর্যন্ত পিনাকীর ডাকে কাউকে আসতে না দেখলেও সেখানে সিপিবি শতাধিক সদস্যকে অবস্থান নিতে দেখা যায়। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দলটির নেতাকর্মীদের সংখ্যাও বাড়ছে। অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে কার্যালয়টির সামনে সতর্ক অবস্থান নিয়েছে পুলিশ।

শনিবার সকালে সিপিবির কেন্দ্রীয় কার্যালয় ‘মুক্তি ভবনের' সামনে গিয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সদস্য দেখা যায়। সকাল ১০টা ১০ মিনিটের দিকে কার্যালয়টির সামনে আসেন পুলিশ সদস্যরা। এ ছাড়া সেনাবাহিনীর কিছু সদস্যও আছেন। কার্যালয়ের সামনের রাস্তায় নেতাকর্মীরা জড়ো হচ্ছেন। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সেখানে দলটির শতাধিক নেতাকর্মীকে দেখা গেছে।

বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সম্পাদক ডা. সাজেদুল হক রুবেল দেশকাল নিউজকে বলেন, “দেশব্যাপী ধর্ষণবিরোধী আন্দোলন চলছে। বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, জেলা, ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় হচ্ছে। আমরা কমিউনিস্ট পার্টি গতকালও ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ কমিটির প্রতিবাদ সমাবেশ করেছি। এর অংশ হিসেবে আজ একই কর্মসূচির ডাক দিয়েছে দেশের ১৫টি বাম ও গণতান্ত্রিক ছাত্র ও যুব সংগঠন। ফ্যাসিস্ট, স্বৈরাতন্ত্রবিরোধী আন্দোলনে কমিউনিস্ট পার্টির নেতাকর্মীরা যেভাবে অংশগ্রহণ করেছিল আজও তারা সেভাবেই অংশগ্রহণ করবে।”

তিনি বলেন, আজকের কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করছে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, বাংলাদেশ যুব ইউনিয়ন, উদীচী শিল্পগোষ্ঠী, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট, জাসদ আম্বিয়া অংশের ছাত্র সংগঠন বিএসএলসহ অন্যান্যরা। এই কর্মসূচিকে ঘিরে নানা রকম প্রশ্ন, শঙ্কা তৈরি হয়েছে। তার মধ্যে আমরা দেখছি দেশের বাইরে থেকে একজন ইউটিউব ইনফ্লুয়েঞ্চার তিনি সিপিবির অফিস দখল ও ভাঙচুর করার ঘোষণা দিয়েছেন। কিন্তু আমার হাসিনার আমলে আগস্ট মাসেও এ ধরনের আক্রমণের শিকার হয়েছি। এছাড়া আরও বহুবার আমরা ও আমাদের অফিস আক্রমণের শিকার হয়েছি। ১৩ সালে হাসিনার আমলে আমাদের পার্টি অফিস পুড়ে ছাই হয়ে গেছিল, তখন আমরা ঘুরে দাঁড়িয়েছি। ছাই থেকে আমরা ফিনিক্স পাখির মতো উঠে দাঁড়িয়েছি। আমরা কমিউনিস্টরা ছিলাম সকলরকম স্বৈরতান্ত্রিকতার বিরুদ্ধে আমরা আছি এবং থাকব।”