ইউনূসের সফরের লক্ষ্য চীনা কারখানা বাংলাদেশে নিয়ে আসা: প্রেস সচিব

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৬ মার্চ ২০২৫, ১৯:০৩
-67d6cc3ab2caf.jpg)
প্রেস সচিব শফিকুল আলম। ছবি- সংগৃহীত
প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের আসন্ন চীন সফরে দেশটির কারখানা বাংলাদেশে স্থানান্তর গুরুত্ব পাবে বলে জানিয়েছেন সরকার প্রধানের প্রেস সচিব শফিকুল আলম। এই সফরে দুই দেশের সম্পর্ক ‘নতুন উচ্চতায়’ পৌঁছবে বলেও আশা করছেন তিনি।
রবিবার ঢাকার বেইলি রোডে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন শফিকুল।
প্রেস সচিব বলেন, “অন্তর্বর্তী সরকারের ফোকাস থাকবে চীনের কোম্পানিগুলো যেন তাদের কারখানা বাংলাদেশে রিলোকেট করে। প্রধান উপদেষ্টা আগেও চীনের সোলার কোম্পানিগুলোকে বাংলাদেশে স্থানান্তরের প্রস্তাব দিয়েছিলেন। কারণ, বৈশ্বিকভাবে চীন অনেক ট্রেড বেরিয়ারের মধ্যে পড়ে গেছে।”
বাংলাদেশে থেকে উৎপাদন করে রপ্তানি করলে কোম্পানিগুলো কোনো বাধার মুখে পড়বে না মত দিয়ে ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, দুটি কোম্পানি বাংলাদেশে অফিস স্থাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
একটি কোম্পানির নাম ‘লংগি’। এটা বিশ্বের সর্ববৃহৎ সোলার প্যানেল কোম্পানি। বিশ্বের ৭০ ভাগ সোলার তারা তৈরি করে।
“বাংলাদেশে তারা আসা মানে এ খাতে প্রচুর জব তৈরি হবে এবং এক্সপোর্ট করা যাবে”, বলেন শফিকুল।
প্রেস সচিব জানান, চার দিনের সফরে আগামী ২৬ মার্চ চীন সফরে যাচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা। দুদিন পর দেশটির প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠক রয়েছে তার।
গত ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব নেওয়ার পর এটিই হতে যাচ্ছে ইউনূসের প্রথম দ্বিপাক্ষিক সফর।
সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবসে ঢাকায় চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক করেন।
বৈঠকে রাষ্ট্রদূত কী বলেছেন?- এই প্রশ্নে প্রেসসচিব বলেন,“চীনের রাষ্ট্রদূত বলেছেন, এটা হবে খুবই গুরুত্বপূর্ণ সফর। দুই দেশ কূটনীতিক সম্পর্কের ৫০ বছর উদ্যাপন করছে।”
বৈঠকে সফরসূচি নিয়ে আলোচনা হয়েছে জানিয়ে শফিকুল বলেন, “২৭ মার্চ প্রধান উপদেষ্টা বোয়াও ফোরাম ফর এশিয়া সম্মেলনে বক্তব্য রাখবেন। এশিয়ার শীর্ষনেতাদের পাশাপাশি বড় বড় কোম্পানির সিইওরা সেখানে থাকেন।
“সাইডলাইনে চীনের বড় কয়েকটি কোম্পানির সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার মিটিং হতে পারে। এসব মিটিংয়ের উদ্দেশ্য হচ্ছে বাংলাদেশে চীনের কারখানাগুলো ‘রিলোকেট’ করা।”
সংবাদ সম্মেলনে জানান হয়, চীনে পিকিং ইউনিভার্সিটিতে বক্তব্য রাখবেন প্রধান উপদেষ্টা। বিশ্ববিদ্যালয়টি তাকে সম্মানসূচক ডিগ্রি দেবে।
চীনের হাইটেক পার্কেও যাবেন ইউনূস। সেখানে ইলেক্ট্রিক ভেহিকল, সোলার প্লান্ট ও চিপস কারখানা পরিদর্শন করবেন।
শফিকুল বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার উৎপাদন শিল্পে বড় ধরনের বিপ্লব ঘটাতে চায়। চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা কতটা বাড়ানো যায়, সেদিকেও সরকার গুরুত্ব দিচ্ছে।
চীনের রাষ্ট্রদূতের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, “৫ অগাস্টের পর চীনের কোম্পানিগুলো গত সাত মাসে বাংলাদেশে বড় ধরনের বিনিয়োগ করেছে। এই সফরের পর প্রচুর বিনিয়োগ আসবে।”
“চীনের যে হাসপাতাল সেবা আছে এর সঙ্গে যত ধরনের আন্তঃসংযোগ করা যায়। চীনের হাসপাতাল চেইনগুলো যেন বাংলাদেশে এসে হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করে, প্রধান উপদেষ্টা সেটাও চাচ্ছেন।”
ব্রিফিংয়ে উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার, সিনিয়র সহকারী প্রেস সচিব ফয়েজ আহম্মদ উপস্থিত ছিলেন।