
মেট্রোরেল কর্মীদের কর্মবিরতির সময় যাত্রীরা বিনা টিকিটে আধুনিক এই গণপরিবহনে চড়ার সুযোগ পান
মেট্রোরেল পুলিশের সঙ্গে বিবাদের জেরে মেট্রোরেলের কর্মীদের কর্মবিরতিতে প্রায় তিনঘণ্টা বন্ধ ছিল মেট্রোরেলের টিকেটিং ও পাঞ্চিং সিস্টেম। এর ফলে অনেকেই বিনা টিকিটে ভ্রমণ করতে পেরেছেন।
সোমবার সকাল ৭টা ১০ মিনিট থেকে মেট্রোরেল চলাচল শুরু করে। কিন্তু স্টেশনে এসে উপস্থিত হলেও কাজ করছিলেন না মেট্রোরেলের কর্মীরা। কাউন্টারে বসলেও কেউ টিকিট বিক্রি করেননি। এতে যাত্রীদের টিকিট পাঞ্চ না করেই অর্থাৎ বিনা টিকিটেই প্ল্যাটফর্মে যাওয়ার সুযোগ তৈরি হয়। বাধা দেয়নি কেউ।
পরে সকাল পৌনে ৯টায় ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফারুক আহমেদ মিরপুর-১০ মেট্রোরেল স্টেশনে এসে কর্মীদের সঙ্গে কথা বলেন এবং তাদের দাবি পূরণের আশ্বাস দেন। এরপর কাজে ফেরেন তারা।
তবে অন্যান্য স্টেশনে কাজ শুরু হতে আরও দেরি হয়। কারওয়ান বাজারসহ একাধিক স্টেশনে কার্যক্রম শুরু হতে দশটা বেজে যায়। এই কর্মবিরতির সময় যাত্রীরা বিনা টিকিটে আধুনিক এই গণপরিবহনে চড়ার সুযোগ পান।
শফিকুল ইসলাম নামে এক যাত্রী বলেন, “যাত্রীরা তো জানত না যে, টিকিট ছাড়াই ভ্রমণ করা যাবে। কিন্তু এসে দেখলাম সকালে টিকিট মেশিন বন্ধ ছিল, গেট খোলা ছিল। ফলে পাঞ্চ বা টিকিট ছাড়াই আমাদের প্ল্যাটফর্মে যেতে বলা হয়। আমরা সরাসরি প্ল্যাটফর্মে গিয়ে ট্রেনে চড়ি।”
সরকার অনেক টাকা রাজস্বও হারিয়েছে উল্লেখ করে সজিব হোসেন নামে আরেক যাত্রী বলেন, “এভাবে কী একটি পেশাদার প্রতিষ্ঠান চলতে পারে?”
কারওয়ান বাজার স্টেশনের নিরাপত্তারক্ষী মোহাম্মাদ কাশেম দেশকাল নিউজ ডটকমকে বলেন, “সকাল দশটার দিকে মেট্রোরেলের কর্মীরা কাজে ফিরে আসার পরে পাঞ্চিং সিস্টেম পুনরায় চালু হয়।”
এদিকে, এন্ট্রি গেটে যেসব যাত্রী কার্ড পাঞ্চ করেছেন কিন্তু এক্সিট গেটে মেশিন বন্ধ থাকায় সরাসরি বেরিয়ে গিয়েছিলেন তাদের জরিমানা এড়াতে কাউন্টারে এসে কার্ড আপডেট করে নিতে অনুরোধ জানিয়েছে ডিএমটিসিএল।
গত ১৬ মার্চ বিকালে সচিবালয় মেট্রোরেল স্টেশনে সাদা পোশাকের দুই নারী পুলিশ বিনা টিকিটে মেট্রোরেলে ভ্রমণ করেন সুইং গেট দিয়ে পেইড জোন থেকে বের হতে চান। কর্তব্যরত কাস্টমার রিলেশন এজেন্ট (সিআরএ) কারণ জানতে চাইলে সংশ্লিষ্ট পুলিশ সদস্যরা তর্কে জড়ান এবং পরে কন্ট্রোল রুমে চলে যান।
এরপর দুই এপিবিএন সদস্য একইভাবে সুইং গেট ব্যবহার করলে সিআরএ তাদের কাছেও কারণ জানতে চান। এ সময় তারা আগের ঘটনার জের ধরে তর্কে জড়ান। কিছুক্ষণ পর পুলিশের আরও কয়েকজন সদস্য এসে মেট্রোরেল কর্মীদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন। এক পর্যায়ে এক পুলিশ সদস্য রাইফেল দিয়ে এক কর্মীর কাঁধে আঘাত করেন এবং অপর এক কর্মীকে টেনে নিয়ে মারধর ও বন্দুক তাক করে গুলি করার হুমকি দেন।
ডিএমটিসিএল এর জেনারেল ম্যানেজার ইফতেখার হোসেন দেশকাল নিউজ ডটকমকে বলেন, “মেট্রোরেলের কর্মীরা কর্মবিরতি প্রত্যাহার করে কাজে যোগ দিয়েছেন। মেট্রোরেলের অপারেশন পুরোদমে চলছে। সকালে কিছু সময় কর্মবিরতির জন্যে টিকেটিং সিস্টেম চালু ছিল না।”