অন্যান্য গণতান্ত্রিক শক্তির সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে আগামী সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস অভিমুখে মিছিল করবে বলে এই কমিটি জানায়
গাজায় হামলা: ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস অভিমুখে মিছিল-বিক্ষোভের ডাক

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২০ মার্চ ২০২৫, ২১:৪৮

যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস।
ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি হামলায় চার শতাধিক মানুষ হত্যার প্রতিবাদে আগামী সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস অভিমুখে মিছিল-বিক্ষোভের ডাক দিয়েছে ফিলিস্তিন সংহতি কমিটি।
একইসঙ্গে রবিবার সারাদেশে প্রতিবাদ কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছে বাম রাজনৈতিক দলগুলোর
সম্মিলিতি এই প্ল্যাটফর্ম।
যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে গাজায় ইসরায়েলি গণহত্যার
প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার রাজধানীর পল্টনে বিক্ষোভ-মিছিলে এসব কর্মসূচির কথা জানায় ফিলিস্তিন
সংহতি কমিটি। দুই মাসের যুদ্ধবিরতি শেষে মঙ্গলবার ভোরে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী গাজাজুড়ে
বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তুতে হামলা করে। এতে চার শতাধিক মানুষ নিহত হয়েছেন বলে
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে খবর এসেছে।
ফিলিস্তিনের ওপর ইসরায়েলের হামলা সাম্রাজ্যবাদ ও পুঁজিবাদের আগ্রাসন। এর প্রতিবাদে
রবিবার সারাদেশে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করবে ফিলিস্তিন সংহতি কমিটি।
অন্যান্য গণতান্ত্রিক শক্তির সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে আগামী সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস
অভিমুখে মিছিল করবে বলে এই কমিটি জানায়।
বিক্ষোভ-সমাবেশে অর্থনীতিবিদ আনু মুহাম্মদ বলেন, “গাজায় কয়েকদিন আগে একটা
যুদ্ধবিরতির নাটক হয়েছিল। অনেকেই বলছিলেন, ‘বাইডেন এই যুদ্ধে ইসরাইলকে সমর্থন
করেছেন ট্রাম্প এসে অবসান ঘটাবেন।’ কাগজে-কলমে যুদ্ধ বিরতি আছে। কিন্তু ইজরায়েল
আবার হামলা শুরু করেছে।”
ট্রাম্প মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের সর্বশেষ
আত্মস্বীকৃত দুর্বৃত্ত হিসেবে ভূমিকা পালন করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “ইসরায়েলের
ক্ষমতা ছিল না একের পর এক এমন বর্বরতা চালানো। তার পক্ষে সম্ভব হয়েছে মার্কিন
সাম্রাজ্যবাদের প্রত্যক্ষ সমর্থনের কারণে।”
আরব বিশ্বের সমালোচনা করে জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক এই শিক্ষক বলেন,
“ধর্মীয়ভাবে যদি আগ্রাসন মোকাবেলা করা সম্ভব হতো তাহলে সৌদি আরবসহ আরব দেশগুলো নিষ্ক্রিয়
থাকতো না। মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের একহাত যদি হয় ইসরাইল, আরেক হাত সৌদি আরব।”
ফিলিস্তিন সংহতি কমিটি বাংলাদেশের আহ্বায়ক সিরাজুল
ইসলাম চৌধুরী বলেন, “ডোনাল্ড ট্রাম্পের কারণে এই নৃশংসতার ঘটনা ঘটছে। এই গণহত্যা
হচ্ছে সাম্রাজ্যবাদী ও পুঁজিবাদী গণহত্যা। আমাদের দেশে যেভাবে শিশু হত্যা দেখি,
শিশু ধর্ষণ দেখি, ধর্ষণের পর শিশুকে হত্যা করতে দেখি সেই একই কাণ্ড দেখছি ইসরায়েলিরা
করছে ফিলিস্তিনে।”
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সভাপতি
মোহাম্মদ শাহ আলম বলেন, “আজকে বাংলাদেশে পুঁজিবাদ, সাম্রাজ্যবাদ, জায়নবাদের
বিরুদ্ধে আমাদের এই লড়াই তীব্র ও শক্তিশালী করতে হবে। তাই ফিলিস্তিন সংহতি কমিটি
বাংলাদেশের ব্যানারে কালকে হোক বা পরশু হোক গোটা দেশে যেন প্রতিবাদ সভা-মিছিল
ঘোষণা করা হয়।”
তিনি প্রশ্ন রাখেন, “আগের সরকার গাজায় যে
হত্যাকাণ্ড চলছিল তার তীব্র প্রতিবাদ করে নাই। বর্তমান সরকারও গণতন্ত্রের ও
সংস্কারের ছবক শোনাচ্ছে। তাদের ভূমিকা কী?”
সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট
পার্টির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, প্রেসিডিয়াম সদস্য আব্দুল্লাহ আল
কাফি রতন, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সভাপতি মোশরেফা মিশু, বাসদ (মার্ক্সবাদী)
আহ্বায়ক মাসুদ রানা।
সমাবেশ শেষে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে থেকে একটি
মিছিল বের হয়।