আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের পরিকল্পনা নেই সরকারের: ইউনূস

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২১ মার্চ ২০২৫, ১০:৪৮

ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের (আইসিজি) প্রেসিডেন্ট ও সিইও কমফোর্ট ইরোর নেতৃত্বে আসা একটি প্রতিনিধিদল বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। ছবি পিআইডি
সরকার
পতন আন্দোলনে অংশ নেওয়া বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের দাবি থাকলেও ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী
লীগকে নিষিদ্ধ করতে সরকারের কোনো পরিকল্পনা নেই বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের
প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস।
তবে দলটির যেসব নেতার বিরুদ্ধে অপরাধ, খুন, মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগ আছে তাদেরকে দেশের আদালতে বিচারের মুখোমুখি করার কথাও বলেছেন সরকার প্রধান।
বৃহস্পতিবার
রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের (আইসিজি) প্রেসিডেন্ট
ও সিইও কমফোর্ট ইরোর নেতৃত্বে আসা একটি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে আলোচনায় তিনি এ কথা
বলেন।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস অফিসের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা বলা হয়েছে।
জাতিসংঘের ফ্যাক্টফাইন্ডিং মিশনের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধ হয়ে থাকলে, আওয়ামী লীগের নেতাদের হেগের আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে (আইসিসি) বিচারের মুখোমুখি করার বিষয়টি সরকার বিবেচনা করছে বলেও আইসিজির প্রতিনিধি দলকে বলেন ইউনূস।
"এটি এখনো আলোচনার টেবিলে রয়েছে," বলা হয় বিবৃতিতে।
আগামী
জাতীয় নির্বাচন নিয়েও কথা হয় দুই পক্ষে। ইউনূস বলেন, সরকারের দুটি সম্ভাব্য সময়
রয়েছে। তিনি ক্রাইসিস গ্রুপকে নিশ্চয়তা দেন যে, নির্বাচনের সময়সীমা এই দুটি
সময়ক্রম অতিক্রম করবে না।
চলমান
সংস্কার প্রশ্নে তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো যদি সীমিত আকারে সংস্কার চায়, তাহলে
নির্বাচন হবে আগামী ডিসেম্বরে। আর যদি বড় ধরনের সংস্কার চায় দলগুলো, তবে নির্বাচন
হবে আগামী বছরের জুনে।
আগামী
জাতীয় নির্বাচন অবাধ ও নিরপেক্ষ হবে নিশ্চয়তা দিয়ে তিনি বলেন, “নির্বাচনের তারিখ
পরিবর্তনে আমরা কোনো কারণ দেখছি না।”
সংস্কার
বিষয়ে রাজনৈতি দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের আলোচনার বিষয়টিও তুলে ধরেন
প্রধান উপদেষ্টা। জানান, জুলাই সনদ চূড়ান্ত করার পরিকল্পনা আছে, যেটি সরকারের
সামনে একটি নির্দেশিকা হিসেবে কাজ করবে।
ইন্টারন্যাশনাল
ক্রাইসিস গ্রুপ রোহিঙ্গা সশস্ত্র গোষ্ঠীর নেতা আতাউল্লাহকে গ্রেপ্তারের প্রশংসা
করেছে জানিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এটি রোহিঙ্গা শিবিরে শান্তি ও স্থিতিশীলতা
রক্ষায় সরকারের অঙ্গীকারেরই বহিঃপ্রকাশ।
তারা
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের অধিকাংশ অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণকারী আরাকান আর্মির সঙ্গে
বাংলাদেশের আরও সক্রিয় যোগাযোগের ওপর জোর দেন।
প্রধান
উপদেষ্টা জবাবে বলেন, বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের জন্য সহযোগিতা বাড়াতে
সরকারের চেষ্টা চলছে এবং তিনি আশা করেন জাতিসংঘের বিশেষ অধিবেশনে রোহিঙ্গা সংকটের
বিষয়টি বিশেষ মনযোগ কাড়বে এবং এটি বৈশ্বিক দৃষ্টি আকর্ষণ করবে।
ড,
কমফোর্ট ইরো এবং তার গ্রুপ বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অপতথ্য প্রচারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে
সমর্থন জানান বলেও বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে।
অধ্যাপক ইউনূস ভারতের সঙ্গে শক্তিশালী ও সুসম্পর্ক বজায় রাখার ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন বলেও এতে উল্লেখ করা হয়, যদিও তিনি ভারতীয় সংবাদ মাধ্যমের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ধারাবাহিক অপপ্রচারের অভিযোগ এনেছেন।