সেনানিবাসে বৈঠক এবং ‘পরিশুদ্ধ’ আওয়ামী লীগের ফেরার বিষয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপির দুই শীর্ষ নেতা হাসনাত আব্দুল্লাহ এবং সারজিস আলমের যে কোনো একজন ‘মিথ্যা’ বলেছেন বলে মন্তব্য করেছেন নবগঠিত দলটির আরেক কেন্দ্রীয় নেতা আবদুল হান্নান মাসুদ।

হাসনাতের আলোড়ন তোলা ফেসবুক পোস্টের পর ‘সংশোধনী দিয়ে’ সারজিসের পাল্টা ফেসবুক পোস্টে মাসুদের এই মন্তব্যও নতুন আলোচনা তৈরি করেছে।

মাসুদ সেখানে ‘গোপন’ বিষয় সামনে আনার সমালোচনা করছেন, এসব পোস্ট এনসিপিকে ‘বিতর্কিত করছে’ বলে মন্তব্য করেছেন, বিতর্কিত করা কাদের লক্ষ্য, সেই প্রশ্ন রেখেছেন; পরিশেষে বলেছেন, সব কিছু দেখে তিনি চুপ থাকতে পারেননি।

এনসিপির তিন নেতার এই তিন ধরনের বক্তব্যের বিষয়ে তাদের কারও মন্তব্য জানতে পারেনি সাম্প্রতিক দেশকাল

হান্নান মাসুদকে কল করলে তিনি বলেন, “আপনাকে একটু পরে ফোন দিচ্ছি।”

হাসনাত ও সারজিসকে কল করা হলেও তারা ফোন ধরেননি।

গত শুক্রবার মধ্য রাতে হাসনাত ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে বলেন, গত ১১ মার্চ সেনা সদরে একটি বৈঠকে তাদেরকে আওয়ামী লীগের ‘পরিশুদ্ধ’ হয়ে ফেরার বিষয়ে চাপ দেওয়া হয়েছে।

এনসিপির মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) লিখেন, তাৎক্ষণিক তারা এর প্রবল বিরোধিতা করলে ‘ইউ ম্যান নো নাথিং’ এবং ‘আওয়ামী লীগ ফিরবেই’ বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করা হয়েছে।

কে এই প্রস্তাব দিয়েছিলেন, সে বিষয়ে হাসনাত কিছু বলেননি। তবে সেই ‘পরিশুদ্ধ’ আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে দলটির নেতা সাবের হোসেন চৌধুরী, ভেঙে দেওয়া সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী ও ভেঙে দেওয়া ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপসের বিষয়ে কথা হয় বলে এনসিপি নেতা দাবি করেন।

তার এই বক্তব্যের পরদিন ঢাকায় বিভিন্ন মোড়ে সেনা সদস্যদের সতর্ক পাহারা দেখা গেছে। ঢাকার উত্তরায় সেনা সদস্যদেরকে ঘিরে কিছু তরুণের ‘হাসনাত না ওয়াকার, হাসনাত, হাসনাত’ বলে স্লোগান দেখা গেছে।

হাসনাতের ভাষ্য সেদিন তার সঙ্গে ছিলেন আরও একজন। রোববার ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে এনসিপির উত্তরাঞ্চলীয় মুখ্য সংগঠক সারজিস প্রকাশ করেন যে, সেই একজন হলেন তিনি।

সেনাপ্রধান সেদিন ‘পরিশুদ্ধ’ আওয়ামী লীগের প্রশ্নে চাপ দিয়েছেন- এমন মনে হয়নি সারজিসের কাছে।

তিনি লিখেন, “হাসনাত সেদিন তার জায়গা থেকে যেভাবে সেনাপ্রধানের বক্তব্যকে অবজার্ভ ও রিসিভ করেছে এবং ফেসবুকে লিখেছে আমার সেক্ষেত্রে কিছুটা দ্বিমত আছে।

“আমার জায়গা থেকে আমি সেদিনের বক্তব্যকে সরাসরি ‘প্রস্তাব’ দেয়ার আঙ্গিকে দেখিনা বরং ‘সরাসরি অভিমত প্রকাশের’ মতো করে দেখি। ‘অভিমত প্রকাশ’ এবং ‘প্রস্তাব দেওয়া’ দুটি বিষয়ের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে।”

সারজিসের এই ফেসবুক পোস্টে এনসিপির সিনিয়র যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আবদুল হান্নান মাসুদ লিখেন, “এসব কী ভাই!! পাবলিকলিই বলছি- দুইজনের একজন মিথ্যে বলছেন।”

‘এটা চলতে পারে না’ বলে মন্তব্য করে আওয়ামী লীগ সরকার পতন আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এই কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক আরও লিখেন, “আর দলের গুরুত্বপূর্ণ পোস্ট হোল্ড করেও আপনারা যেভাবে ব্যক্তিগতভাবে বিচরণ করছেন, এবং তা পাবলিক করে এনসিপিকেই বিতর্কিত করছেন।”

মানুষ এনসিপিকে নিয়ে ‘স্বপ্ন বুনছে’ বলে দাবি করে মাসুদ লিখেন, “এভাবে এনসিপিকে বিতর্কিত করার কাদের এজেন্ডা!!! সরি, আর চুপ থাকতে পারলাম না।”