স্বাধীনতা দিবস: প্রস্তুত স্মৃতিসৌধ, নিরাপত্তা জোরদার

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৫ মার্চ ২০২৫, ২২:২২

জাতীয় স্মৃতিসৌধ। ছবি- সংগৃহীত
৫৫ তম মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস বরণে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে সব প্রস্তুতি চূড়ান্ত হয়েছে। রাষ্ট্রীয় আনুষ্ঠানিকতা ঘিরে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা জোরদার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
প্রায় এক মাস ধরে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতাসহ সব ধরনের কাজ শেষ করেছে সাভার গণপূর্ত বিভাগ।
১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণার দিনটিতে বুধবার প্রথম প্রহরে মহামান্য রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টাসহ ভিভিআইপিদের শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন। এরপর পর সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে সৌধ প্রাঙ্গণ। লাখো মানুষের কোলাহলে দিনভর মুখর থাকবে এলাকাটি।
গত বছরের ৫ আগস্ট প্রবল গণআন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর এবার ভিন্ন এক বাস্তবতায় দিবসটি উদযাপিত হতে যাচ্ছে।
পুরো সৌধ এলাকায় পায়ে হাঁটার লাল ইটের পথগুলোকে ধুয়েমুছে পরিপাটি করে তোলা হয়েছে। চকচকে লাল ইটকে সাদ রঙের আঁচরে শুভ্র করে তুলছেন আরেকদল চিত্রকর্মী।
সৌধের মূল ফট থেকে বেদি পর্যন্ত বিভিন্ন স্থানে ঠাঁই পেয়েছে বাহারি ফুলের টব। লাল, নীল, হলুদসহ নানা রঙের ফুল গাছের সহস্রাধিক চারা লাগিয়ে দৃষ্টিনন্দন করে তোলা হয়েছে পুরো চত্বরকে।
পরিচ্ছন্নকর্মী মো. নয়ন বলেন, “সকাল থেকে রাত পর্যন্ত আমরা বিভিন্ন কাজ করি। পুরো সৌধ এলাকাকে প্রতিদিন ঝাড়ু দিয়ে পরিষ্কার করছে একদল। আবার বাগানে চারা লাগানোসহ গাছপালা ছেঁটে পরিষ্কারের কাজ করছেন মালিরা।”
রাতের বেলা স্মৃতিসৌধ যাতে আরও বেশি সুন্দর ও আলোকিত থাকে সেজন্য লাল-নীল আলোকবাতি সজ্জিতের কাজ করছে ইলেকট্রিশিয়ানরা।
হালিমা বেগম নামে এক শ্রমিক বলেন, “আমরা প্রতি বছর ১৬ ডিসেম্বর ও ২৬ মার্চ স্মৃতিসৌধে পরিচ্ছন্নতার কাজ করি। আমরা গর্বিত যে, আমাদের হাত দিয়ে পরিচ্ছন্ন ও সুন্দর স্মৃতিসৌধে গণ্যমান্যরা এসে শহীদের শ্রদ্ধা জানায়।”
সাভার গণপূর্ত বিভাগের অধীন জাতীয় স্মৃতিসৌধের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান বলেন, নিরাপত্তার এবং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার জন্য গত ১৬ মার্চ থেকে স্মৃতিসৌধে সর্বসাধারণের প্রবেশাধিকার সংরক্ষিত করা হয়েছে।
“ইতোমধ্যেই সিসিটিভি স্থাপনসহ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও আলোকসজ্জার কাজ শেষ করা হয়েছে। নিরাপত্তা নিশ্চিতে ঢাকা জেলা পুলিশের পক্ষ থেকেও কার্যক্রম চলছে বলে জেনেছি।”
মঙ্গলবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনীর সদস্যরা নিয়মিত তাদের কুচকাওয়াজ অনুশীলন চালিয়ে যাচ্ছেন।
পুলিশের ঢাকা রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি (অপারেশনস) সিদ্দিকুর রহমান বলেন, “স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের আনুষ্ঠানিকতা ঘিরে পুলিশের পক্ষ থেকে চার স্তরের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। ইতোমধ্যে টাঙ্গাইল, ফরিদপুর, গাজীপুরসহ আশপাশের ১৮ জেলায় কয়েক হাজার পুলিশ স্মৃতিসৌধ এলাকায় পৌঁছেছেন।
“সাদা পোশাকেও পুলিশের বিভিন্ন গোয়েন্দা ইউনিটের নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।”
এবার ১২টি ভাগে পুলিশ সদস্যরা তাদের নিরাপত্তার কাজ করবেন জানিয়ে তিনি বলেন, “সৌধ এলাকায় চলাচল নির্বিঘ্ন করতে বিভিন্ন ট্রাফিক নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।”
নিরাপত্তার বিষয়ে আপাতত কোন হুমকি না থাকলেও সম্ভাব্য বিশৃঙ্খলা কিংবা অরাজকতা রোধে পুলিশ সদস্যরা সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় থাকবে বলেও জানান তিনি।