বাংলাদেশে গণতন্ত্রে শান্তিপূর্ণ উত্তরণের জন্য জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব বান কি-মুনের সহায়তা ও পরামর্শ চেয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।

“আমরা নতুনভাবে শুরু করতে চাই, আপনার সহায়তা ও পরামর্শ দরকার। আমাদের জন্য এটি একটি দারুণ সুযোগ,” বৃহস্পতিবার চীনের হাইনান প্রদেশে বোআও ফোরাম ফর এশিয়ার বার্ষিক সম্মেলনের ফাঁকে বান কি-মুনের সঙ্গে বৈঠকে এসব কথা বলেন অধ্যাপক ইউনূস।

প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বের প্রশংসা করে বান কি-মুন বলেন, অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বে বাংলাদেশ আরও ভালো করবে। “বাংলাদেশ এখন এমন একজন নেতাকে পেয়েছে, যিনি বিশ্বব্যাপী সম্মানিত,” বলেন জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব।

বাংলাদেশ ও দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনে নিজের ভূমিকার কথা স্মরণ করেন বান কি-মুন। তিনি বলেন, “আমি যখন নয়াদিল্লিতে কূটনীতিক হিসেবে কর্মরত ছিলাম, তখন আমার কলম দিয়েই বাংলাদেশ-কোরিয়া কূটনৈতিক সম্পর্কের আনুষ্ঠানিক চুক্তিতে স্বাক্ষর করা হয়েছিল।”

তিনি বলেন, বাংলাদেশ অনেক এগিয়েছে, তবে রাজনৈতিক ও গণতান্ত্রিক দিক থেকে আরও ভালো করতে পারত।

এ সময় অধ্যাপক ইউনূস বলেন, “এক সময় কোরিয়া ও বাংলাদেশ একই অবস্থানে ছিল, কিন্তু এখন কোরিয়া অনেক এগিয়ে গেছে। বাংলাদেশের মানুষ অসাধারণ, কিন্তু আমাদের রাজনৈতিক নেতৃত্ব আমাদের ধ্বংস করেছে।”

বান কি-মুন জানান, তিনি দক্ষিণ কোরিয়ার অন্যতম শীর্ষ ব্যবসায়ী ইয়াংওয়ান করপোরেশনের চেয়ারম্যান কিহাক সুংকে বাংলাদেশে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন, যিনি পরবর্তীতে চট্টগ্রামের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে ব্যবসা সম্প্রসারিত করেন।

প্রধান উপদেষ্টা জানান, বাংলাদেশ সম্প্রতি কোরিয়ান ইপিজেডের (KEPZ) জমি সংক্রান্ত দীর্ঘদিনের সমস্যা সমাধান করেছে, যা আরও বেশি কোরিয়ান বিনিয়োগ আকর্ষণে সহায়ক হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

বৈঠকে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) চেয়ারম্যান আশিক মাহমুদ জানান, কিহাক সুংয়ের নেতৃত্বে ২৬ সদস্যের কোরিয়ান ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদল আসন্ন বিজনেস সামিটে অংশ নিতে ঢাকায় আসছেন।

এছাড়া, রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে বান কি-মুনের সহায়তা চেয়ে তাকে সুবিধাজনক সময়ে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান অধ্যাপক ইউনূস।