Logo
×

Follow Us

বাংলাদেশ

দ্রুত নির্বাচন আয়োজন সরকারের প্রধান লক্ষ্য: ইউনূস

Icon

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৪ এপ্রিল ২০২৫, ১১:০৯

দ্রুত নির্বাচন আয়োজন সরকারের প্রধান লক্ষ্য: ইউনূস

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি: সংগৃহীত

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, বাংলাদেশে যত দ্রুত সম্ভব জাতীয় নির্বাচন আয়োজন করা তার সরকারের প্রধান লক্ষ্য। তিনি জানান, সরকার তার ম্যান্ডেট পূরণের জন্য নির্বাচন ও প্রয়োজনীয় সংস্কার কার্যক্রম সম্পন্ন করলেই অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

শুক্রবার থাইল্যান্ডের ব্যাংককে অনুষ্ঠিত ষষ্ঠ বিমসটেক (বঙ্গোপসাগরীয় দেশগুলোর আঞ্চলিক সহযোগিতা জোট) সম্মেলনে ভাষণ প্রদানকালে তিনি এ কথা বলেন।

প্রধান উপদেষ্টা তার বক্তব্যে বলেন, “১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের জন্য লাখো সাধারণ নারী-পুরুষ, শিশু ও তরুণ-তরুণী তাদের প্রাণ উৎসর্গ করেছে। তারা দীর্ঘ নয় মাসের গণহত্যার শিকার হয়েছেন এবং এক নিষ্ঠুর সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই করেছে।”

তিনি বলেন, “আমাদের মানুষ এমন একটি সমাজের স্বপ্ন দেখেছিল, যেখানে সব নাগরিক ন্যায়বিচার, স্বাধীনতা ও অন্তর্ভুক্তিমূলক সুযোগ লাভ করবে।”

কিন্তু গত ১৫ বছরে বাংলাদেশে বিশেষ করে তরুণদের অধিকার ক্রমশ সংকুচিত হয়েছে বলে উল্লেখ করেন অধ্যাপক ইউনূস। তিনি বলেন, “আমাদের তরুণরা দেখেছে, রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর ধ্বংস এবং নাগরিক অধিকারের ওপর চরম হস্তক্ষেপ।”

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “গত বছরের গণজাগরণের মাধ্যমে জনগণ একটি দুঃশাসনের অবসান ঘটিয়েছে। এ আন্দোলনে প্রায় ২,০০০ নিরীহ মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন, যাদের মধ্যে ১১৮ জন শিশু।”

তিনি বলেন, “বাংলাদেশের ইতিহাসে এক নতুন সূর্যোদয় হয়েছে।”

প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, “ছাত্রনেতারা, যারা এই আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন এবং শেখ হাসিনার দুর্নীতিগ্রস্ত ও স্বৈরাচারী সরকারকে অপসারণ করেছিলেন, তার কাছে দেশের নেতৃত্ব গ্রহণের আহ্বান জানান।”

“আমি আমাদের জনগণের স্বার্থে দায়িত্ব গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছি,” বলেন অধ্যাপক ইউনূস।

প্রধান উপদেষ্টা জানান, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ও টেকসই প্রবৃদ্ধি পুনরুদ্ধারে ব্যাপক সংস্কার কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে।

মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, “সুশাসন প্রতিষ্ঠা, দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই এবং অর্থনীতির প্রতিটি ক্ষেত্রে শৃঙ্খলা ফেরানোই আমাদের মূল লক্ষ্য।”

এর অংশ হিসেবে সরকার বিচারব্যবস্থা, নির্বাচন ব্যবস্থা, সরকারি প্রশাসন, পুলিশ, দুর্নীতি দমন কমিশন ও সংবিধান সংস্কারের জন্য ছয়টি কমিশন গঠন করেছে। এসব কমিশন ইতোমধ্যে তাদের সুপারিশ সরকারের কাছে জমা দিয়েছে এবং তা সক্রিয়ভাবে পর্যালোচনা করা হচ্ছে।

“আমরা সাত সদস্যের ‘জাতীয় ঐকমত্য কমিশন’ গঠন করেছি, যার নেতৃত্বে আমি রয়েছি। এতে ছয়টি কমিশনের প্রধানরা অন্তর্ভুক্ত রয়েছেন, যারা পৃথকভাবে কমিশনগুলোর সুপারিশগুলো যাচাই-বাছাই করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন।”

প্রধান উপদেষ্টা জানান, সরকার সম্প্রতি আরও চারটি কমিশন গঠন করেছে, যা গণমাধ্যম, স্বাস্থ্য, শ্রম এবং নারী অধিকার নিয়ে নীতিগত সুপারিশ করবে।

তিনি বলেন, “আমরা বাংলাদেশকে পুনর্গঠনের জন্য প্রতিজ্ঞাবদ্ধ এবং প্রতিটি নাগরিকের সাংবিধানিক অধিকার নিশ্চিত করতে নিরলসভাবে কাজ করে যাব, তা সে নারী হোক বা জাতিগত ও ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সদস্য হোক।”

অনুষ্ঠানে থাই প্রধানমন্ত্রী এবং সম্মেলনের চেয়ারপার্সন পেতংতার্ন শিনাওয়াত্রা, বিমসটেক মহাসচিব রাষ্ট্রদূত ইন্দ্র মনি পান্ডে এবং বিমসটেক সদস্য রাষ্ট্রের প্রতিনিধিদলের প্রধানরা উপস্থিত ছিলেন।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫