Logo
×

Follow Us

বাংলাদেশ

বাংলাদেশের কোনো নির্দিষ্ট দলকে সমর্থন করে না ভারত: ইউনূসকে মোদী

Icon

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৫ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:৩৩

বাংলাদেশের কোনো নির্দিষ্ট দলকে সমর্থন করে না ভারত: ইউনূসকে মোদী

শুক্রবার ব্যাংককে বিমসটেক সম্মেলনের ফাঁকে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর দ্বিপাক্ষিক বৈঠক। ছবি : প্রধান উপদেষ্টার ফেসবুক

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেছেন, তার দেশ বাংলাদেশের কোনো নির্দিষ্ট দলকে সমর্থন করে না। ভারতের সম্পর্ক বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে।

শুক্রবার ব্যাংককে বিমসটেক সম্মেলনের ফাঁকে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে মোদী এ মন্তব্য করেন বলে বাসসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

নরেন্দ্র মোদী বলেন, “ভারত সর্বদা একটি প্রগতিশীল, গণতান্ত্রিক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক বাংলাদেশের পক্ষে থাকবে।”

বাসস লিখেছে, অধ্যাপক ইউনূসের আন্তর্জাতিক খ্যাতি ও মর্যাদার কথা বৈঠকে বলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী।

বৈঠকে মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, “বাংলাদেশ ভারতের সঙ্গে সম্পর্ককে অত্যন্ত গুরুত্ব দেয়। আমাদের দুটি দেশের বন্ধুত্ব সুদৃঢ় ইতিহাস, ভৌগলিক নৈকট্য এবং সাংস্কৃতিক সাদৃশ্যের ওপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে। ১৯৭১ সালের আমাদের কঠিন সময়ে ভারত সরকার ও জনগণের অকুণ্ঠ সমর্থনের জন্য আমরা চিরকৃতজ্ঞ।”

বাসসের প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রদান উপদেষ্টা ইউনূস শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণের বিষয়ে ভারতের অবস্থান জানতে চান। তিনি বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী মিডিয়ার মাধ্যমে উসকানিমূলক বক্তব্য দিয়ে বাংলাদেশে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির চেষ্টা করছেন, যা ‘ভারতের আতিথেয়তার অপব্যবহার’ বলে মনে হয়।

ইউনূস বলেন, “শেখ হাসিনা অন্তর্বর্তী সরকার সম্পর্কে মিথ্যা ও উসকানিমূলক অভিযোগ করে চলেছেন।”

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “আমরা ভারত সরকারকে অনুরোধ করছি যে, আপনার দেশে অবস্থানকালে তাকে এ ধরনের বক্তব্য থেকে বিরত রাখার জন্য উপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করুন।”

প্রধানমন্ত্রী মোদী শেখ হাসিনার বক্তব্য ঘিরে উত্তেজনার জন্য ‘সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে’ দায়ী করেন বলে বাসস লিখেছে।

ইউনূস এসময় দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক বেশ কিছু চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করছে উল্লেখ করে বলেন, “দুই দেশের জনগণের কল্যাণে সম্পর্ককে সঠিক পথে এগিয়ে নিতে আমরা আপনার সঙ্গে একযোগে কাজ করতে চাই।”

প্রধান উপদেষ্টা ইউনূস গঙ্গা পানিবণ্টন চুক্তি নবায়নের আলোচনা এবং তিস্তা পানিবণ্টন চুক্তি চূড়ান্তকরণের আহ্বান জানান।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বিমসটেকের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করায় অধ্যাপক ইউনূসকে অভিনন্দন জানান এবং ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা জানান।

নরেন্দ্র মোদী বলেন, “ভারত সবসময় বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে থাকে। দুই প্রতিবেশী দেশের ইতিহাস বাংলাদেশ সৃষ্টির সময় থেকেই অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত।”

অধ্যাপক ইউনূস জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশনের অনুসন্ধানমূলক প্রতিবেদনের কথা উল্লেখ করেন, যা ২০২৪ সালের ১৫ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত নিরাপত্তা বাহিনী ও সশস্ত্র আওয়ামী লীগ কর্মীদের দ্বারা মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রমাণ দিয়েছে।

মুহাম্মদ ইউনূস সীমান্তে হত্যার বিষয় উত্থাপন করে বলেন, এ ধরনের মৃত্যু রোধে যৌথভাবে কাজ করলে তা শুধু পরিবারগুলোর বেদনা কমাবে না, বরং দুই দেশের মধ্যে আস্থা ও সম্পর্ক আরও দৃঢ় করবে।

তিনি অনুরোধ জানান, ভারত যেন এ ধরনের ঘটনা প্রতিরোধে উপায় খুঁজে বের করে।

প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেন, “ভারতীয় সীমান্তরক্ষীরা শুধুমাত্র আত্মরক্ষার জন্য গুলি চালায় এবং মৃত্যুর ঘটনাগুলো ভারতের ভেতরেই ঘটে।”

বাংলাদেশে সংখ্যালঘু পরিস্থিতি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদীর উদ্বেগের জবাবে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার যেসব প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে, তা অনেকটাই অতিরঞ্জিত এবং ‘এর বেশিরভাগই ভুয়া খবর’।”

যেসব হামলার অভিযোগ এসেছে, তা স্বচক্ষে যাচাই করার জন্য তিনি ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে সাংবাদিক পাঠানোর অনুরোধ জানান।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, তিনি দেশে ধর্মীয় ও লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতার প্রতিটি ঘটনা নজরদারির আওতায় আনতে একটি কার্যকর ব্যবস্থা প্রচলন করেছেন এবং তাঁর সরকার এমন যেকোনো ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করছে।

বৈঠকে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন, প্রধান উপদেষ্টার হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ ড. খলিলুর রহমান, ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর এবং জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভালসহ জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫