
ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলের হামলার প্রতিবাদে বাংলাদেশে বিক্ষোভে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে হামলা লুটপাট এবং ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস ঘেরাওয়ের হুমকির মধ্যে কূটনীতিকপাড়ায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসসহ অন্যান্য দূতাবাসের নিরাপত্তার জন্য পুলিশের পাশাপাশি সেনাবাহিনী, বিজিবি, আর্মড পুলিশ ব্যাটলিয়ন- এপিবিএন, এসবি, সিআইডি ও গোয়েন্দা বাহিনীর সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস যে এলাকায় অবস্থিত সেই নতুন বাজার থেকে গুলশান-২ এর দিকে দিকে এক পাশের সড়ক বন্ধ করে দিয়েছে পুলিশ।
নতুন বাজার থেকে গুলশানগামী রাস্তাসহ বিভিন্ন রাস্তায় জনসাধারণের চলাচলেও কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। সন্দেহ হলেই করা হচ্ছে তল্লাশি।

বিভিন্ন দূতাবাস ও কূটনৈতিক পাড়ায় পুলিশ ও বিশেষায়িত বাহিনীর পাশাপাশি মোতায়েন আছে সেনা সদস্যরাও।
সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত বিক্ষোভ ঘিরে কূটনৈতিক এলাকায় নিরাপত্তা জোরদারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পুলিশের গুলশান জোনের সহকারী কমিশনার (এসি) আলী আহমেদ মাসুদ।
সাম্প্রতিক দেশকালকে তিনি বলেন, “সকাল থেকে বিক্ষোভ করেছেন জনগণ। সেজন্য দূতাবাসগুলোর নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। এখানে পুলিশের পাশাপাশি সেনাবাহিনী, বিজিবি, সিআইডি, এসবি, গোয়েন্দা সংস্থা এবং ডিপ্লোমেটিক জোনের নিরাপত্তাকর্মীরা কাজ করছে। পরবর্তী নির্দেশ না আসা পর্যন্ত নিরাপত্তা জোরদারই থাকবে।”
গাজায় হামলার প্রতিবাদে সোমবার দিনভর ঢাকা ছিল বিক্ষোভে উত্তাল। শহরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো ছিল বন্ধ। বিক্ষোভ হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের সামনের সড়কেও।
মাহমুদুল হাসান গুনবী নামে এক ধর্মীয় বক্তার ফেসবুক পেজ থেকে যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস ঘেরাওয়ের ডাক দেওয়া হয়। এরপর কওমি মাদ্রাসা পড়ুয়া একদল মানুষ সেখানে যায়। তবে তাদেরকে আটকে দেয় পুলিশ।
-67f3f1eb2cefe.jpg)
মধ্য বাড্ডায় আটকে দেওয়ার পর মাহমুদুল হাসান গুনবী ও রফিকুল ইসলাম মাদানি স্মারকলিপি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসে যান।
সোমবার ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের সামনেও বিক্ষোভ হয়। ইসলামপন্থিদের একটি দল দূতাবাস ঘেরাও করতে গেলে পুলিশের বাধার মুখেও পড়ে।
বেলা ১১টার দিকে দূতাবাসের বিপরীতে নতুন বাজার এলাকায় বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করে। এ সময় তারা ‘ইসরায়েলের দালালেরা হুঁশিয়ার সাবধান’, ‘নারায়ে তাকবির আল্লাহু আকবার’, ‘ইসরায়েলের ঠিকানা এই দুনিয়ায় হবে না’সহ বিভিন্ন স্লোগান দেয়।
যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের পক্ষ থেকে এক বার্তায় ঢাকায় দেশটির নাগরিকদেরকে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে। সহিংসতা হতে পারে এমন আশঙ্কায় জনসমাগম এড়িয়ে চলার পরামর্শও দেওয়া হয়েছে।
ঢাকার বাইরে সিলেটে কেএফসি, পিৎজা হাট, ইউনিমার্ট আর বাটার শো রুম ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়েছে তৌহিদী জনতার আক্রমণের পর। একই ঘটনা ঘটেছে পর্যটন এলাকা কক্সবাজারেও।
কুমিল্লায় কোকোকোলার কারখানার নিরাপত্তায় ব্যবস্থা নিয়েছে সেনাবাহিনী।

ঢাকায় তেমন কোনো সহিংসতা না হলেও ইসলামী আন্দোলনের নেতাকর্মীরা মিরপুর-১০ নম্বর গোল চত্বরে অবস্থান নিয়ে আধা ঘণ্টার মতো যান চলাচল আটকে দেয়।
বায়তুল মোকাররম এলাকায় ধর্মভিত্তিক বেশ কিছু দল ও সংগঠনের সমাবেশ থেকে ইসরায়েলি পণ্য বর্জনের ডাক দেওয়া হয়, পাশাপাশি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান মুহাম্মদ ইউনূসকে ফিলিস্তিনে শান্তি প্রতিষ্ঠায় উদ্যোগী হওয়ার আহ্বান জানানো হয়।