
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় আমফান আঘাত হানতে শুরু করেছে বরিশালের উপকূলীয় অঞ্চলগুলোতে। বরিশালের পার্শ্ববর্তী জেলা বরগুনার বিভিন্ন নদ নদীর পানি স্বাভাবিকের চেয়ে ৭ ফুট উচ্চতায় বইতে শুরু করেছে।
সেই সাথে কীর্তনখোলা, আড়িয়াল খাঁ, সন্ধ্যা, মেঘনা, কালাবদ, সুগন্ধাসহ অন্যান্য নদীর পানি বিপদ সীমার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। অনেক এলাকায় নদীর পানি স্থলভাগে উঠে এসেছে। মঙ্গলবার রাত থেকে দমকা হাওয়া ও গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি বিরাজ করছে জেলার সর্বত্র।
বুধবার (২০ মে) সকাল থেকে বরিশালের পায়রা সমুদ্র বন্দর ও পার্শ্ববর্তী এলাকাগুলোতে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত জারি করা হয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে।
যে কারণে বরিশাল জেলার বিভিন্ন এলাকার নদী তীরবর্তী মানুষদের মাঝে শুরু হয়েছে আতংক। ঘূর্ণিঝড়ে সর্বস্ব হারিয়ে নিঃস্ব হওয়ার আশংকা করছেন তারা। ফলে ঝড়ের মধ্যে বাড়ি ছেড়ে আশ্রয় কেন্দ্রে যেতে চাচ্ছে না মানুষ।
তবে বরিশাল জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আতঙ্কিত না হয়ে সবাইকে কাছাকাছি আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে যেতে বলা হচ্ছে। আশ্রয়কেন্দ্রের মানুষদের নিরাপদ রাখতে সকল ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে বরিশাল জেলা প্রশাসক এসএম অজিয়র রহমান।
বরিশাল আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার রাত থেকেই দমকা হাওয়ার সাথে মৃদু বৃষ্টি শুরু হয় বরিশাল জেলা জুড়ে। জেলার সবকটি সাইক্লোন শেল্টার শুরু থেকেই প্রস্তুত রাখে জেলা প্রশাসন। মঙ্গলবার রাতে বিভিন্ন উপজেলার স্থানীয় লোকজন সাইক্লোন শেল্টার গুলোতে আশ্রয় নিতে শুরু করলে প্রশাসনের পক্ষ থেকেও তদারকি শুরু হয়।
বুধবার সকাল থেকে ঝড়ের প্রকোপ বৃদ্ধি পেলে জেলার মেহেন্দীগঞ্জ, মুলাদী ও বাকেরগঞ্জ উপজেলার আশ্রয়কেন্দ্র গুলোতে ভীত মানুষের ঢল নেমে আসে। আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে ধারণা করা হচ্ছে বুধবার সন্ধ্যা নাগাদ ঝড়টি শক্তি ক্ষয় করে বরিশাল জেলার ওপর মূল আঘাত হানবে। তখন ঝড়টির গতিবেগ হতে পারে ঘণ্টায় ১৬০-১৮০ কিলোমিটার।
এদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ডের পানি বিজ্ঞান বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মাছুম জানান, সকাল ৯টার দিকে পাথরঘাটা অঞ্চলে নদীর পানি বিপদ সীমার উপরে চলে যায়।
এরপর দুপুর ৩টার পর পরই বরিশাল জেলার নদ-নদীর পানি বিপদ সীমার দিকে এগুতে থাকে। ৪-৫ টার মধ্যে জেলার সকল নদীর পানি বিপদ সীমার উপর চলে যাবে বলে ধারনা করেন তিনি।