ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদে বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রার জন্য নির্মিত ‘ফ্যাসিবাদের মুখাবয়ব’ এবং ‘শান্তির পায়রা’ আগুনে পুড়ে যায়। ঘটনার জন্য সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দোসররা সরাসরি জড়িত বলে দাবি করেছেন সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা ও চলচ্চিত্র নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। তবে, এই ঘটনার জন্য কারা দায়ী, সে বিষয়ে এখনো নিশ্চিত হতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল টিম।

শনিবার এক ফেসবুক পোস্টে মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বলেন, “হাসিনার দোসররা গতকাল ভোররাতে চারুকলায় ফ্যাসিবাদের মুখাবয়ব পুড়িয়ে দিয়েছে। যারা এই দুঃসাহস দেখিয়েছে—সফট আওয়ামী লীগ হোক বা আওয়ামী বি-টিম—তাদের প্রত্যেককে আইনের আওতায় আনতে হবে, দ্রুত।”

তিনি বলেন, “এবারের শোভাযাত্রা যেন আরও তাৎপর্যপূর্ণ হয়, তা নিশ্চিত করতেই হবে। উৎসব ঠেকাতে যারা কাজ করছে, তাদের রুখতে হবে।”

ফারুকী বলেন, “শোভাযাত্রা যেন অন্তর্ভুক্তিমূলক হয়, তা নিয়ে আমরা আলোচনা করছিলাম। কিন্তু কালকের ঘটনার পর ‘ফ্যাসিবাদের মুখাবয়ব’ এখন আরও বেশি আবশ্যিক হয়ে উঠেছে।”

ঘটনার জন্য কারা দায়ী, সে বিষয়ে এখনো কোনো চূড়ান্ত মত দেয়নি ঢাবি প্রশাসন। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক সাইফুদ্দিন আহমেদ বলেন, “আমরা ধারণা করছি, ভোর ৪টা থেকে ৫টার মধ্যে আগুন লেগেছে। তখন দায়িত্বরত দুইজন প্রক্টরিয়াল সদস্য নামাজে ছিলেন, আর দারোয়ান ঘুমিয়ে ছিলেন। ফলে আগুন কীভাবে লাগলো তা জানা যায়নি।”

তিনি আরও বলেন, “ঘটনাটি পরিকল্পিতও হতে পারে, আবার দুর্ঘটনাও। সিসিটিভি ফুটেজ রয়েছে, তবে পাসওয়ার্ড ভুলে যাওয়ায় তাৎক্ষণিকভাবে দেখা সম্ভব হয়নি। বিকল্পভাবে ফুটেজ বিশ্লেষণ চলছে।”

গোয়েন্দা সূত্র জানিয়েছে, আয়োজকদের পূর্বেই সতর্ক করা হয়েছিল যে শোভাযাত্রা ঘিরে ফ্যাসিস্ট সহানুভূতিশীলরা অনাকাঙ্ক্ষিত কিছু ঘটাতে পারে। কিন্তু তা সত্ত্বেও পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়নি।

ঘটনার তদন্ত এখনও চলমান। আগুনে ফ্যাসিবাদের মুখাবয়ব পুরোপুরি পুড়ে গেছে এবং শান্তির পায়রার অর্ধেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা নিয়ে প্রশাসনের দায় এবং রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের দোষারোপ—দুই দিক থেকেই প্রশ্ন উঠছে।