Logo
×

Follow Us

বাংলাদেশ

নির্বিঘ্নে শেষ ছায়ানটের পহেলা বৈশাখ আয়োজন

Icon

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৪ এপ্রিল ২০২৫, ১২:৫২

নির্বিঘ্নে শেষ ছায়ানটের পহেলা বৈশাখ আয়োজন

ছবি- সংগৃহীত

বর্ষবরণের মূল সুর যেন ছুঁয়ে গেল আলো আর ভালোবাসায়—“আমার মুক্তি আলোয় আলোয়” বার্তায় ভর করে রমনার বটমূলে ছায়ানটের আয়োজন শেষ হয়েছে নির্বিঘ্নে।

সোমবার ভোরে রমনার ঐতিহ্যবাহী অশ্বত্থ গাছের নিচে সূর্যোদয়ের সঙ্গে শুরু হয় বাংলা নববর্ষ ১৪৩২-এর সাংস্কৃতিক আয়োজন। প্রতি বছরের মতো এবারও গান, কবিতা ও কথনের মাধ্যমে নতুন বছরকে বরণ করে নেয় ছায়ানট।

তবে সাম্প্রতিক রাজনৈতিক অস্থিরতা, নিরাপত্তা ঝুঁকি ও সামাজিক মাধ্যমে ছড়ানো বিভ্রান্তির প্রভাবে এবার দর্শকসংখ্যা ছিল কিছুটা কম—এমনটাই জানালেন আয়োজনে অংশ নেওয়া অনেকেই।

বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আনিসুর রহমান বলেন, “বটমূলে আসাটা একটা অভ্যাসে পরিণত হয়েছে আমাদের।

“তবে এবার কিছুটা ভীতি কাজ করেছে। চট্টগ্রামে ডিসি হিলের মঞ্চ ভাঙচুরের ঘটনার প্রভাব পড়েছে মানুষের মনে। তবুও সবচেয়ে ভালো খবর—সব কিছু নির্বিঘ্নে শেষ হয়েছে।”

ভোরের আলো ফোটার সাথে সাথে ছায়ানটের শিল্পীরা পরিবেশন করে রবীন্দ্রসংগীত, নজরুলগীতি, লোকগান ও দেশাত্মবোধক সুর। কবিতা পাঠের মধ্য দিয়েই শুরু হয় মূল আয়োজন। সারওয়ার আলী নববর্ষের কথন পাঠ করেন, আর শেষ হয় জাতীয় সংগীত দিয়ে।

তরুণ সাংবাদিক মানিক আহমেদ বললেন, “রমনার সকাল মানেই ছায়ানটের গান আর কবিতা। তবে আজ সানজিদা খাতুনকে খুব মনে পড়ছে। তার মতো করে রবীন্দ্রসংগীত কেউ গাইতে পারে না। ছায়ানট যেন আজ সত্যিই তাকে মিস করেছে।”

এবারের আয়োজন ছিল ৭২ ফুট দৈর্ঘ্য ও ৩০ ফুট প্রস্থের অর্ধবৃত্তাকার মঞ্চে। ছায়ানট জানিয়েছে, মোট ২৪টি পরিবেশনা হয়েছে—এর মধ্যে ৯টি সম্মেলক গান, ১২টি একক পরিবেশনা এবং ৩টি পাঠ।

শিল্পীদের পোশাকে এবার ছিল মেরুন ও সাদা রঙের সমন্বয়—পুরুষদের পরনে মেরুন পাঞ্জাবি ও সাদা পায়জামা, নারীদের মেরুন পাড়ের অফ হোয়াইট শাড়ি। মঞ্চেও ছিল সেই রঙের ছোঁয়া।

১৯৬৭ সাল থেকে রমনার বটমূলে বর্ষবরণের আয়োজন করে আসছে ছায়ানট। যদিও শুরুটা আরও আগে—১৯৬৩ সালে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রিপারেটরি স্কুলে প্রথম আয়োজনে।

ছায়ানটের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ও বাংলা সাংস্কৃতিক আন্দোলনের অগ্রপথিক সানজিদা খাতুনকে এবারই প্রথম বর্ষবরণ ছায়ানটের। গত ২৫ মার্চ স্কয়ার হাসপাতালে মারা যান তিনি।

ছায়ানট বলেছে, “সানজিদা খাতুনের চিন্তা-চেতনা যেন আমরা সবার মাঝে ছড়িয়ে দিতে পারি, সেটাই হবে তার প্রতি প্রকৃত শ্রদ্ধা।”

বটমূলে বর্ষবরণের যে বীজ সেদিন রোপণ করেছিলেন তিনি, সেটি আজও জাতীয় উৎসব হয়ে ফুটে আছে বাংলা বছরের প্রথম সকালে।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫