নববর্ষের শোভাযাত্রা থেকে শিক্ষার্থীদের বার্তা: ‘বিশেষ ক্ষমতা আইন বাতিল করো’

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৪ এপ্রিল ২০২৫, ১৩:৪৪

কিছু শিক্ষার্থীদের হাতে ছিল রাজনৈতিক ও সামাজিক বার্তাসম্পন্ন প্ল্যাকার্ড
পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে চারুকলা অনুষদ থেকে শুরু হওয়া ‘বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা’য় অংশ নিয়েছে নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ। কিন্তু সেই জমকালো আয়োজনের মাঝেই চোখে পড়েছে নানা স্লোগানসংবলিত প্ল্যাকার্ড।
সোমবার সকাল সোয়া ৯টায় চারুকলার সামনের চত্বর থেকে শুরু হয় শোভাযাত্রা। মূল শোভাযাত্রায় ছিল ঐতিহ্যবাহী মুখোশ, বাঘ, পাখি, পালকি ও নানা রঙের লোকজ মোটিফ। সেই ভিড়েই কিছু শিক্ষার্থীদের হাতে ছিল রাজনৈতিক ও সামাজিক বার্তাসম্পন্ন প্ল্যাকার্ড—‘বিশেষ ক্ষমতা আইন বাতিল করো’, ‘শ্রমিকের ন্যায্য পাওনা বুঝিয়ে দাও’, ‘সিএসএ বাতিল করো’, ‘পাহাড়ে সেনা শাসন বন্ধ করো’, ‘ইলিশের দাম কমাও’, এবং আন্তর্জাতিক বার্তা—‘ফ্রী প্যালেস্টাইন’।
চারুকলা শোভাযাত্রায় অংশ নেওয়া জাবির আহমেদ নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, “ফ্যাসিস্ট আমলে কালো আইন রাষ্ট্রকে অন্ধকারে ডুবিয়েছে। এখনো অনেক আইন আছে যেগুলো মানুষকে দমন করতে ব্যবহৃত হয়। আমরা চাই, এগুলো বাতিল হোক।”
তিনি বলেন, “সম্প্রতি মডেল মেঘলাকে যেভাবে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, সেটা গণতান্ত্রিক সমাজে অগ্রহণযোগ্য। আমাদের প্ল্যাকার্ড সেই বার্তাই বহন করছে।”
শোভাযাত্রায় অংশ নেয় আদিবাসী সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিরাও—ম্রো, চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা, রাখাইন, মনিপুরী, সাঁওতাল, মুণ্ডা, মালো, গারো, মাহাতো, রাজবংশীসহ বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠী নিজ নিজ ঐতিহ্যবাহী পোশাক ও বাদ্যযন্ত্র নিয়ে এই উৎসবকে আরও বৈচিত্র্যময় করে তোলে।
বৈচিত্র্যময় মোটিফ, প্রতীকি বার্তা
এবারের শোভাযাত্রায় ছিল সাতটি বড়, সাতটি মাঝারি এবং সাতটি ছোট মোটিফ। বড় মোটিফের মধ্যে বিশেষ দৃষ্টি কেড়েছে—কাঠের বাঘ, টাইপোগ্রাফিতে লেখা “৩৬ জুলাই”, শান্তির প্রতীক ‘সাদা পায়রা’, ঐতিহ্যবাহী পালকি, জুলাই আন্দোলনে নিহত মুগ্ধের স্মরণে ‘পানির বোতল’, ফিলিস্তিনের প্রতি প্রতীকী সংহতি তরমুজ
মোটিফগুলো ছাড়াও শোভাযাত্রায় ছিল—৮০টি ফ্যাসিবাদের মুখাবয়ব, ১০টি সুলতানি ও মুঘল আমলের মুখোশ,
২০টি রঙিন চরকি, ২০০টি বাঘের মুখ, তালপাতার তৈরি ৮টি সেপাই, ১০টি পলো, ৫টি তুহিন পাখি, ৬টি মাছ ধরার চাই, ৪টি পাখা, ২০টি মাথাল, ২০টি ঘোড়া, ৫টি লাঙল ও মাছের ডোলা, ১০০ ফুট দৈর্ঘ্যের লোকজ চিত্রাবলীর ক্যানভাস—সব মিলিয়ে এই শোভাযাত্রাকে এক নতুন মাত্রা দিয়েছে।