Logo
×

Follow Us

বাংলাদেশ

বহুল আলোচিত বিনিয়োগ সম্মেলন থেকে কী পেল বাংলাদেশ?

Icon

আল আমিন

প্রকাশ: ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ১১:২৭

বহুল আলোচিত বিনিয়োগ সম্মেলন থেকে কী পেল বাংলাদেশ?

বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন।

‘বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট সামিট’ থেকে আসলে প্রাপ্তি কী?- এই প্রশ্নে সম্মেলনের আগে এবং চার দিনের আয়োজনের সময় প্রশংসায় ভাসা বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন বলেছেন, ‘সময়ই বলে দেবে।’

গত ৭ থেকে ১০ এপ্রিল ঢাকায় এই আয়োজনকে ঘিরে বিডা চেয়ারম্যানের দুটি সংবাদ সম্মেলন গুরুত্বপূর্ণ। ২৩ মার্চের সংবাদ সম্মেলনে আশিক চৌধুরী বলেন, ‘বাংলাদেশ বড় আকারে বিনিয়োগের জন্য প্রস্তুত।’

এই আয়োজন নিয়ে সরকারের তরফে বেশ উচ্ছ্বাস ছিল। বলা হচ্ছিল, এই সম্মেলনে দেশ-বিদেশের শীর্ষস্থানীয় বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশে আসবেন; এই কারণে দেশে চাকরির বন্যা বয়ে যাবে বলে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছিলেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। তবে সম্মেলনে সুনির্দিষ্ট বড় কোনো ঘোষণা পাওয়া যায়নি। সম্মেলন থেকে প্রাপ্তির বিষয়ে জানাতে সম্মেলন শেষে ফের সংবাদ সম্মেলনে আসেন আশিক চৌধুরী ১৩ এপ্রিল। সেদিন beta.deshkalnews.com-এর শিরোনাম ছিল, ‘বিনিয়োগ সম্মেলন দশে ১০ পাওয়ার মতো হয়নি : আশিক চৌধুরী।’

বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান সেদিন বলেন, ‘প্রথমবারের মতো গ্লোবাল স্ট্যান্ডার্ডের সামিট করার চেষ্টা করেছি। সামিট সফল হয়েছে কি না সেটা সময় বলে দেবে।’ এই সম্মেলন থেকে খুব বড় ঘোষণা এসেছে তা নয়, চীনা প্রতিষ্ঠান হান্ডা ও দেশি কোম্পানি শপআপ তিন হাজার ১০০ কোটি টাকার বিনিয়োগ ঘোষণা করেছে। এর বাইরে সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই হয়েছে ছয়টি। তবে বিডার পাশাপাশি এই বিনিয়োগ সম্মেলনের আয়োজক বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ-বেজা খুব একটা নাখোশ তা নয়।

আশিক চৌধুরী বলেন, ‘আমি চিন্তিত নই সামিটে কত বড় বিনিয়োগ প্রস্তাব এলো। আমি গুরুত্ব দিয়েছি বাংলাদেশ সম্পর্কে বিনিয়োগকারীদের সঠিক ধারণা দিতে। তারা বিনিয়োগ করুক বা না করুক, বাংলাদেশ নিয়ে ভালো কথা বলুক, খারাপ কথা না বলুক। আমরা বাংলাদেশ সম্পর্কে একটি পজিটিভ ন্যারেটিভ তৈরি করার চেষ্টা করেছি, একটি বিনিয়োগের পাইপলাইন তৈরি হয়েছে। তাদের সঙ্গে ধারাবাহিক যোগাযোগ করব।’

চার দিনব্যাপী এই আয়োজনে সাড়ে তিন হাজারের বেশি অংশগ্রহণকারী সক্রিয়ভাবে যুক্ত ছিলেন। সামিটে ব্রেকআউট সেশন, উচ্চপর্যায়ের গোলটেবিল বৈঠক এবং খাতভিত্তিক নেটওয়ার্কিংয়ের সুযোগ ছিল। সম্মেলনের প্রথম দুই দিন ঢাকা ও চট্টগ্রামে রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল ও অর্থনৈতিক অঞ্চল ঘুরে দেখেন প্রায় ৭০ জন বিনিয়োগকারী। ঢাকায় স্টার্টআপদের জন্যও বিশেষ সেশন আয়োজন করা হয়।

৯ এপ্রিল সামিটের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে দেশি-বিদেশি মিলিয়ে ৭১০ জন অতিথি উপস্থিত ছিলেন। আলোচনায় উঠে আসে বাংলাদেশের বিনিয়োগ পরিকল্পনা থেকে শুরু করে ব্যাবসায়িক পরিবেশ সহজ করতে বিভিন্ন নীতিগত সংস্কারের বিষয়।

বাংলাদেশ নিয়ে দীর্ঘদিনের কিছু ভুল ধারণা ভাঙতেই এই আয়োজন মন্তব্য করে চৌধুরী আশিক বলেন, ‘অনেক অতিথিই আমাদের সামিটের সংগঠিত রূপ দেখে বিস্মিত হয়েছেন এবং পরেরবার তাদের অংশীদার ও সহকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে আসার আগ্রহ দেখিয়েছেন।’ বাংলাদেশ কোন ধরনের বিনিয়োগ প্রত্যাশা করছে এবং সে জন্য কী পদক্ষেপ নিচ্ছে, সেগুলোও বিনিয়োগকারীদের কাছে তুলে ধরা হয়েছে।

কারা এসেছিলেন

১১ এপ্রিল দৈনিক সমকাল এক প্রতিবেদনে লেখে, ‘অংশগ্রহণকারীদের অর্ধেকই ৩ দেশের, ২৫ ভাগ প্রবাসী’ বিনিয়োগ সম্মেলনে অংশগ্রহণকারীদের বিষয়ে সেদিন বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে লেখা হয়, সম্মেলনে ৪২ দেশ থেকে চার শতাধিক অংশগ্রহণকারী সরাসরি অংশ নিয়েছেন। এর মধ্যে তিন শতাধিক ছিলেন বিদেশি। অবশ্য তালিকায় থাকা ১৫টির বেশি নাম একাধিকবার ব্যবহার করা হয়েছে। আবার যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশের অনেক প্রবাসীও এ বিনিয়োগ সম্মেলনে যোগ দিয়েছেন।

অংশগ্রহণকারীর তালিকা পর্যালোচনায় দেখা গেছে, বাংলাদেশে বিনিয়োগে আগ্রহী বা বর্তমানে বিনিয়োগ রয়েছে, এমন কোম্পানিগুলোর চেয়ারম্যান বা প্রতিষ্ঠাতা বা সহপ্রতিষ্ঠাতা অথবা শীর্ষ নির্বাহী পদমর্যাদার ১৬০ জন সম্মেলনে অংশ নিয়েছেন। কোম্পানির পরিচালক বা শীর্ষ কর্মকর্তা ছিলেন শতাধিক।

এর বাইরে বিভিন্ন দেশের দূতাবাস থেকেও প্রতিনিধিরা বিনিয়োগ সম্মেলন পর্যবেক্ষণে আসেন। কয়েকটি দেশের ব্যবসা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে আটজন এ সম্মেলনে যোগ দেন। এর বাইরে কয়েকটি দেশের ব্যাবসায়িক সংগঠনের প্রতিনিধিরাও অংশ নেন।

চীনের সর্বাধিক ১৪৭ জন এ সম্মেলনে যোগ দিয়েছেন বলে তথ্য মিলেছে। বাংলাদেশে বিনিয়োগ রয়েছে, এমন কোম্পানির পাশাপাশি নতুন বিনিয়োগ সম্ভাবনা খুঁজতেও কিছু কোম্পানির উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি এ সম্মেলনে এসেছেন। দেশভিত্তিক অংশগ্রহণকারী বিবেচনায় এর পরের অবস্থানে ছিল যুক্তরাষ্ট্র (৪৪ জন), যুক্তরাজ্য (২৯ জন), ভারত (২৩ জন) ও জাপান (২০ জন)। প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, চীন, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য থেকে আসা অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা ছিল মোটের অর্ধেক।

সমঝোতা স্মারক ও বৈশ্বিক সহযোগিতা

বিনিয়োগ সম্মেলনে যে ছয়টি সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে, তার মধ্যে বাংলাদেশ ‘নাসা আর্টেমিস অ্যাকর্ড’-এ যোগ দিয়েছে। 

পিআরএন ও এইচঅ্যান্ডএম গ্রুপের মধ্যে একটি বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি হয়েছে, যার অর্থায়নে সহায়তা দেবে ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স করপোরেশন (আইএফসি)।

দায়িত্বশীল বিনিয়োগ ও শ্রম মানোন্নয়নের লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও), জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি) ও বিডার মধ্যে একটি ত্রিপক্ষীয় চুক্তি হয়েছে। 

নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে সহযোগিতার জন্য সোলার পাওয়ার ইউরোপ ও বাংলাদেশ সোলার অ্যান্ড রিনিউএবল এনার্জি অ্যাসোসিয়েশনের মধ্যে একটি চুক্তি হয়েছে, যা দেশের পরিচ্ছন্ন জ্বালানি উদ্যোগকে আরো বেগবান করবে।

কৃষি ও খাদ্য নিরাপত্তা খাতে সহায়তার অংশ হিসেবে ‘বাংলাদেশ-নেদারল্যান্ডস সিড পার্টনারশিপ’ সমঝোতা সই সিড নেদারল্যান্ডস ও বাংলাদেশ সিড অ্যাসোসিয়েশন, যা উদ্ভাবনী বীজ প্রযুক্তি ও উৎপাদনশীলতা বাড়াতে সহায়তা করবে। 

কৃষি প্রযুক্তি ও খাদ্য উৎপাদনে উদ্ভাবন ও টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যে ডাচ গ্রিনহাউস ডেল্টা ও এসিআইর মধ্যে ‘গ্রিনহাউস ইমপ্যাক্ট ক্লাস্টার’ চুক্তি হয়েছে।

বিনিয়োগে যেসব চ্যালেঞ্জ

বিনিয়োগ সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী বিনিয়োগকারীরা কিছু চ্যালেঞ্জের কথা তুলে ধরেছেন, বিশেষ করে কারখানার লাইসেন্স, গ্যাস ও বিদ্যুৎ সংযোগ পেতে দুই বছর পর্যন্ত বিলম্ব নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন তারা।

বিনিয়োগকারীদের বেশির ভাগ প্রশ্নই ছিল ব্যবসা ও বিনিয়োগ পরিবেশ নিয়ে। তারা জানান, এ দেশে বিনিয়োগের বড় বাধা নীতি ধারাবাহিকতার অভাব। এ ছাড়া রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা, সমন্বয়হীনতা, দুর্নীতি, আমলাতান্ত্রিক জটিলতা, শুল্ক-কর, গ্যাস ও বিদ্যুতের সমস্যাও বিনিয়োগকে বাধাগ্রস্ত করে।

বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, ‘এসব বাধা ব্যবসার গতি ধরে রাখা কঠিন করে তোলে। তবে বাংলাদেশে ব্যবসা শুরু করার প্রক্রিয়া সহজ করতে আমরা সক্রিয়ভাবে কাজ করছি।’

যে বিষয়ে আগ্রহ

বাংলাদেশে বিনিয়োগে বিদেশিরা আগ্রহ দেখাচ্ছে ফার্মাসিউটিক্যাল, লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং ও তথ্য-প্রযুক্তিতে।

মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দরের কাছে একটি মুক্ত বাণিজ্য অঞ্চল স্থাপনের আগ্রহ দেখিয়েছে বৈশ্বিক বন্দর পরিচালনাকারী সংস্থা ডিপি ওয়ার্ল্ড। সংস্থাটিকে সার্বিক সহযোগিতা করবে বাংলাদেশ।

সম্মেলনে অংশ নিতে যারা ঢাকায় আসেন তাদের মধ্যে ছিল জার্মান এশিয়া প্যাসিফিক বিজনেস অ্যাসোসিয়েশনের (ওএভি) একটি প্রতিনিধিদল। তারা ঢাকা ও চট্টগ্রামে বিভিন্ন বাণিজ্য এলাকা পরিদর্শন এবং সম্মেলনে অংশ নেন। 

তাদের মধ্যে অস্পিগ জিএমবিএইচের সিইও থমাস ক্যোনিং সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ‘বাংলাদেশে কর্মক্ষম মানুষের সংখ্যা ১১৪ মিলিয়ন, আর এখানে ৩৪ মিলিয়ন মানুষ মধ্যম আয়ের। এখানে যে কর্মী আছে তা মালয়েশিয়ার মোট জনসংখ্যার সমান। তাই বাংলাদেশের মতো একটি গতিশীল ও ক্রমবর্ধমান বাজারে স্পষ্টতই প্রচুর ব্যাবসায়িক সুযোগ আছে।’

ক্যোনিং মনে করেন, এখন যে শুল্ক অস্থিরতা শুরু হয়েছে সেই প্রেক্ষাপটে ভোগ্যপণ্য, গৃহস্থালি যন্ত্রপাতি, ইলেকট্রনিকস এবং শিল্প উপাদানের জন্য চীনের বিকল্প উৎপাদন স্থান হিসেবে বাংলাদেশের সম্ভাবনা আছে। চিকিৎসা সরঞ্জাম বা বিলাসবহুল পণ্যের মতো বিশেষায়িত ক্ষেত্রে বাংলাদেশে ‘মেড ইন জার্মানি’র উচ্চ আবেদন আছে।

থমাস ক্যোনিংয়ের মতে, আমলাতান্ত্রিক পদ্ধতি, অবকাঠামো সমস্যা এবং বিদ্যুৎ ও জ্বালানির মতো কিছু বিষয় বাংলাদেশকে আরো উন্নত করতে হবে। তার পরও বাংলাদেশে প্রতিযোগিতামূলক পরিবেশ এবং জার্মান বিনিয়োগকারীদের আকর্ষণ বাড়ছে।

বহুজাতিক কোম্পানিতে হামলা নিয়ে উদ্বেগ

বাংলাদেশের শিল্প ও বাণিজ্য প্রতিষ্ঠানগুলোর জাতীয় সংগঠন এফবিসিআইয়ের সাবেক পরিচালক আবুল কাশেম খান সাম্প্রতিক দেশকালকে বলেন, ‘সম্মেলনটি বাংলাদেশের ব্র্যান্ডিংয়ের জন্য খুবই ভালো হয়েছে। এখন প্রয়োজন সম্ভাবনাগুলো কাজে লাগানো। বিনিয়োগকারীরা আসলেন, দেখলেন, জানলেন। একই সঙ্গে তারা যেসব চ্যালেঞ্জের কথা বলেছেন সেগুলো আমাদের দেখতে হবে।’

বাংলাদেশে ট্রেড লাইসেন্স, সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের অনুমতির জন্য সময় ক্ষেপণসহ আরো সমস্যা আছে বলে মত দিয়ে তিনি বলেন, ‘বিদ্যুৎ ও গ্যাসের সমস্যা আছে। আছে যোগাযোগের সমস্যা। এগুলো আমাদের কাটিয়ে উঠতে হবে।’

বিনিয়োগ সম্মেলন চলাকালে গাজায় ইসরায়েলি হামলার প্রতিবাদে বাংলাদেশে বহুজাতিক বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর, লুটপাট ও হামলার ঘটনা বিনিয়োগকারীদের নেতিবাচক বার্তা দিয়েছে বলেও মত দেন তিনি। এ ধরনের ঘটনা কঠোর হাতে দমন করার কথাও বলেছেন তিনি। 

বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আইনুল ইসলামও বহুজাতিক কোম্পানিতে হামলা নিয়ে উদ্বিগ্ন। তিনি বলেন, ‘আমাদের জিডিপির মাত্র শূন্য দশমিক চার শতাংশ বিদেশি বিনিয়োগ। সেই অবস্থায় বিনিয়োগ সম্মেলন চলাকালে গাজায় গণহত্যার প্রতিবাদের নামে যে তা-ব এখানে হলো তাতে বিভিন্ন দেশের বিনিয়োগকারীরা কী মেসেজ পেলেন?’

নিরাপত্তা ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বিনিয়োগের ‘পূর্বশর্ত’ বলে মন্তব্য করে এই অর্থনীতিবিদ আরো বলেন, ‘আমরা একটা কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। ৫ আগস্টের পর অনেক শিল্প-কারখানায় হামলা হয়েছে। বন্ধ হয়ে গেছে। সরকারের উচিত সেগুলো  চালু করতে সহায়তা করা। আর নতুন করে যাতে হামলা না হয় সে ব্যাপারে সতর্ক থেকে ব্যবস্থা নেওয়া।’

বিজিএমইএর সাবেক পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল বলেন, ‘আমাদের এখানে শুধু বিদেশি কেন অভ্যন্তরীণ বিনিয়োগেরও ব্যাপক সম্ভাবনা আছে। দেশি বিনিয়োগকারীদের যে সমস্যা সেটা বিদেশি বিনিয়োগকারীদেরও সমস্যা। বিনিয়োগকারী বিনিয়োগের নিরাপত্তা চায়। সেটা নিশ্চিত করতে হবে।’

বিনিয়োগ পরিবেশ, সুযোগ-সুবিধা এবং নিরাপত্তা নিশ্চিতের প্রতিশ্রুতি পূরণ হলে দেশি-বিদেশি উভয় বিনিয়োগই বাড়বে, বলেন তিনি। বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের (বিস) গবেষণা পরিচালক ও অর্থনীতিবিদ মাহফুজ কবির এই বিনিয়োগ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন। তিনি বলেন, ‘এখানে কোরিয়া ও চীনসহ ইউরোপ আমেরিকার বিনিয়োগকারীরা এসেছেন, বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। আমরা যদি পরিবেশ দিতে পারি তাহলে বিনিয়োগকারীরা আসবেন। আর যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চীনের যে বাণিজ্যযুদ্ধ শুরু হয়েছে তাতে আমি মনে করি ১০০ কেন এক হাজার চীনা কোম্পানি এখানে আসবে।’

সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিংয়ের (সানেম) নির্বাহী পরিচালক অর্থনীতিবিদ সেলিম রায়হান বলেন, ‘আসলে বিনিয়োগ প্রতিশ্রুতি আর গ্রাউন্ড রিয়েলিটি আলাদা কথা। আমরা অতীতেও দেখেছি এই ধরনের সম্মেলনে অনেক প্রতিশ্রুতি আসে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বাস্তব বিনিয়োগ আসে না। কারণ এখানে বিনিয়োগকারীদের তিক্ত অভিজ্ঞতা আছে।’

এখানে বিনিয়োগে বাধা কোথায়, সেটা নিয়ে অনেক গবেষণাও হয়েছে। এবারের সম্মেলনেও তা নিয়ে কথা হয়েছে। সরকার বাধা দূর করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। যদি বাধা দূর হয় তাহলে তো বিদেশি বিনিয়োগ আসবে।’

লেখক : সিনিয়র রিপোর্টার, দেশকাল নিউজ

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫