বিশ্ববিদ্যালয়ে খুন: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুই নেতার গ্রেপ্তার চায় ছাত্রদল

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২০ এপ্রিল ২০২৫, ১৬:০৩

প্রাইম এশিয়া ইউনিভার্সিটিতে সংগঠনের কর্মী জাহিদুল ইসলাম পারভেজ হত্যার প্রতিবাদে রাজধানীতে ছাত্রদলের বিক্ষোভ
ঢাকার বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় প্রাইম এশিয়ার শিক্ষার্থী ও সংগঠনের কর্মী জাহিদুল ইসলাম পারভেজকে হত্যার ঘটনায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বনানী থানার দুই নেতাকে দুষছে ছাত্রদল।
বিএনপি সমর্থক ছাত্র সংগঠনটির অভিযোগ, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বনানী থানা কমিটির যুগ্ম-আহ্বায়ক শোভহান নিয়াজ তুষার ও যুগ্ম-সদস্য সচিব হৃদয় মিয়াজীর নেতৃত্বে এই খুন হয়েছে। তাদেরকে অবিলম্বে গ্রেপ্তারের দাবিও জানানো হয়েছে।
আওয়ামী লীগ সরকার পতন আন্দোলনের ডাক দেওয়া সংগঠনটির বিরুদ্ধে ‘ছাত্রলীগ স্টাইলে সন্ত্রাসের’ অভিযোগও আনা হয়েছে ছাত্রদলের তরফে।
রবিবার সংবাদমাধ্যমে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে এ অভিযোগ করেছে বিএনপি সমর্থক ছাত্র সংগঠনটি।
শনিবার বিকাল চারটার দিকে বনানীর ক্যাম্পাসের সামনে ছুরিকাঘাতে জাহিদুল নিহত হন। তিনি প্রাইম এশিয়া ইউনিভার্সিটির টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ষষ্ঠ সেমিস্টারের ছাত্র ছিলেন।
তার বন্ধু মাজহারুল ইসলাম জানান, জাহিদুল ক্যাম্পাসের সামনে তার দুই বন্ধুকে নিয়ে সিঙ্গারা খাচ্ছিলেন। সে সময় ইউনিভার্সিটি অব স্কলার্স-এর দুই ছাত্রী এসে তাদেরকে নিয়ে হাসাহাসি করার অভিযোগ করেন।
মাজহারুল ও জাহিদুল অস্বীকার করলে সেই দুই ছাত্রী চলে যান। কিন্তু কিছুক্ষণ পর তারা তিনজন বহিরাগতকে নিয়ে আসেন।
কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন মীমাংসা করে দেয়। তবে সেই ছাত্রীর সঙ্গে আসা লোকজন নিয়ে ক্যাম্পাসের বাইরে অবস্থান নেয়। জাহিদুল ফটক পার হয়ে বের হওয়ার সময় তারা হঠাৎ তাকে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়।
জাহিদুলকে সংগঠনের সক্রিয়কর্মী দাবি করে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিবের নেতৃত্বে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভও হয়েছে রবিবার।
সংগঠনের বিজ্ঞপ্তিতে জাহিদুল হত্যার বর্ণনা তার প্রত্যক্ষদর্শী বন্ধুর মতোই। তারা লিখেছে, প্রাইম এশিয়ার ইউনিভার্সিটির প্রক্টর আব্দুস সালাম এক পর্যায়ে হস্তক্ষেপ করে উভয়পক্ষের মধ্যে মীমাংসার করেন।
“তবে এ মীমাংসা মানতে অস্বীকৃতি জানিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বনানী থানা কমিটির যুগ্ম-আহ্বায়ক শোভহান নিয়াজ তুষার ও যুগ্ম-সদস্য সচিব হৃদয় মিয়াজীর নেতৃত্বে পারভেজের বুকের ওপর আঘাত করে হত্যা করা হয়”, বলা হয় ছাত্রদলের বিজ্ঞপ্তিতে।
ঘটনা মীমাংসা হওয়ার পরেও ‘সন্ত্রাসীরা হুমকি-ধামকি’ দেওয়ার সময় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে নিরাপত্তা চেয়েও সহায়তা না পাওয়ার অভিযোগও করেন ছাত্রদল।
অন্তর্বর্তী সরকার ‘সমতা ও ন্যায্যতা’ নিশ্চিত করতে পারছে না বলেও অভিযোগ করেছে ছাত্রদল। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে দফায় দফায় আলোচনা করে ‘বিভিন্ন সরকারি নিয়োগ’ দিলেও ছাত্রদলের সঙ্গে কখনই আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো আলোচনা করেনি সরকার।”
জাহিদুল হত্যার ঘটনায় শনিবার রাতেই তার মামাতো ভাই হুমায়ুন কবির বনানী থানায় মামলা করেছেন যাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থী ও বহিরাগতসহ আটজনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। অজ্ঞাত আরও ২০ থেকে ৩০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
বনানী থানার ওসি মো. রাসেল সরোয়ার বলেন, “ঘটনার তদন্ত চলছে। আমরা সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করেছি। আশা করছি দ্রুতই জড়িতদের গ্রেপ্তার করা সম্ভব হবে।”