Logo
×

Follow Us

বাংলাদেশ

বনানীতে রিকশাচালকদের ‘তাণ্ডব’, আন্দোলনের ছবি তুললেই পিটুনি

Icon

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২১ এপ্রিল ২০২৫, ২০:৪৫

বনানীতে রিকশাচালকদের ‘তাণ্ডব’, আন্দোলনের ছবি তুললেই পিটুনি

বনানীতে এক বিদেশি ও এক সংবাদকর্মীকে ঘিরে রিকশা চালকদের মারমুখো অবস্থান দেখা গেছে ফেসবুকে ছড়ানো ভিডিওতে।

রাজধানীর বনানী এলাকায় ব্যাটারিচালিত রিকশা চালকদের আন্দোলন চলাকানে লাঠি দিয়ে বেশ কয়েকজনকে সাধারণ মানুষ ও সাংবাদিককে মারধর করেছেন রিকশা চালকরা।

সোমবার দুপুরে বনানী ১১ নম্বর রোডের মাথায় ব্রিজের ওপরে আন্দোলন চলাকালে ঘণ্টা পাঁচেক সময়ে এ ঘটনা ঘটে।

গুলশান সোসাইটিতে রিকশা ঢুকতে না দেওয়ার সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে এই ঘটনায় ব্যাটারিচালিত ও প্যাডালচালিত রিকশা চালকদের মধ্যে সংঘাতও হয়।

সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত গুলশান লেকে প্যাডেলচালিত দুটি রিকশা ফেলে দেন আন্দোলনকারীরা। একটি রিকশা ফেলে দেওয়া হয় বনানী ১১ নম্বর ব্রিজ থেকে। আরেকটি ফেলা হয় ব্রিজের পাশ থেকে।

বিক্ষোভকারীরা বলছিলেন, তারা ব্যাটারিচালিত রিকশা চালাতে না পারলে অন্যরাও (প্যাডেলচালিত রিকশা) চালাতে পারবেন না। তাই তারা প্যাডেলচালিত দুটি রিকশা গুলশান লেকে ফেলে দেন।

পুলিশ জানায়, কয়েকদিন আগে গুলশান সোসাইটি তাদের এলাকায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চলাচল করতে পারবে না বলে ঘোষণা দেয়। এই ঘোষণার পর গত কয়েকদিন ধরে গুলশানের বিভিন্ন এলাকায় রিকশা চালানোর দাবিতে আন্দোলন করে আসছেন।

সোমবার বনানী ১১ নম্বর এলাকার ব্রিজের ওপরে গুলশানগামী ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা আটক করা হলে চালকরা ক্ষুব্ধ হয়ে আন্দোলন শুরু করে। এ সময় যারা আন্দোলনের ছবি ও ভিডিও তুলতে আসেন তাদের লাঠিপেটা করেন তারা।

সাধারণ মোটরসাইকেল চালকদেরও পিটুনি দিতে দেখা যায়। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যদের মোতায়েন করা হয়।

পথচারীদের পেটানোর বেশ কয়েকটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়েছে।

একটি ভিডিওতে দেখা যায়, আন্দোলন চলাকালে রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় এক মোটরসাইকেল চালক ও তার পেছনের সিটে বসে থাকা এক ব্যক্তি দুইজকেই এলোপাতাড়ি মারতে থাকে আন্দোলনকারী রিকশা চালকরা।

মোটরসাইকেলের পেছনে বসে থাকা ব্যক্তি মোটরসাইকেল থেকে নেমে যান। নামার পরেও তাকে মারতে থাকে। এ সময় মোটরসাইকেল চালক পিটুনি খেতে খেতে কোনমতে দ্রুত বাইক চাইলে চলে যান।

সংবাদ সংগ্রহ করতে যাওয়া সাংবাদিক ও পথচারী ছবি তুলতে গেলে অনেকেই পিটুনির শিকার হন। পরে ঘটনাস্থলে পুলিশের পাশাপাশি সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থল নিয়ন্ত্রণে আনে।

আরেকটি ভিডিওতে দেখা গেছে, ১১ নম্বর ব্রিজের ট্রাফিক পুলিশ বক্সে লাঠিপেটা করা হচ্ছে। পুলিশের ব্যারিকেড টেনে সরিয়ে ফেলতে দেখা গেছে আরেকটি ভিডিওতে। এ সময় প্যাডেলচালিত রিকশা ও ব্যাটারিচালিত রিকশাও ভাঙচুর করে দুই পক্ষ।

আরেকটি ভিডিওতে রিকশা করে চলাচল করতে থাকার সময় এক বিদেশির ওপর চড়াও হতে দেখা যায়। এক সংবাদকর্মীরে ঘিরে তার ওপর আক্রমণের ঘটনাও দেখা যায় সেই ভিডিওতে।

ঢাকা মহানগর পুলিশের ট্রাফিক গুলশান জোনের সহকারী কমিশনার আবু সায়েম নয়ন বলেন, “শুনেছি যারা ছবি তুলতে কিংবা ভিডিও করতে চেষ্টা করেছে এমন কেউ নজরে আসলেই মারধর করেছে।”

বনানী থানার পরিদর্শক (অপারেশন) এ কে এম মইনুদ্দিন বলেন, “গুলশান সোসাইটির লোকজন তাদের নিবন্ধিত ছাড়া বাইরের রিকশা বন্ধ ঘোষণা করে। এরপরে সোসাইটির বাইরের রিকশা চালকেরা বনানী ১১ নম্বর রোডের মাথায় ব্রিজের ওখানে সকাল থেকে অবস্থান করে।”

ঘটনার কারণ জানতে চাইলে ট্রাফিক গুলশান বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার মো. জিয়াউর রহমান বলেন, “গুলশান সোসাইটি এলাকায় ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচল বন্ধে সোসাইটি কর্তৃপক্ষ, সিটি করপোরেশন ও পুলিশ মিলে যৌথভাবে চেষ্টা চালাচ্ছে। সেখানকার নির্ধারিত নিবন্ধিত কিছু প্যাডেলচালিত রিকশা আগে থেকেই চলাচল করে।

“বাইরের রিকশা প্রবেশ ঠেকাতে ১১ নম্বর ব্রিজে পুলিশের ক্রাইম বিভাগের একটি চেকপোস্ট ছিল। সেখানে ব্যাটারিচালিত রিকশা আটকানো থেকেই ঘটনার সূত্রপাত।”

এরপর ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকরা জমায়েত হলে এবং সোসাইটির প্যাডেলচালিত রিকশা চলাকরাও জড়ো হলে দুই পক্ষ মুখোমুখি অবস্থান নেয়। একপর্যায়ে তাদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। পরে পুলিশ ও সেনাবাহিনী যৌথভাবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে, বলেন এই পুলিশ কর্মকর্তা।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫